শিল্পায়নে অগ্রাধিকারের বার্তা দিতে আগামী ১৭ বা ১৮ জুন কলকাতায় শিল্পপতিদের সম্মেলন করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই সম্মেলনে রতন টাটা ও মমতার মুখোমুখি সাক্ষাৎ হচ্ছে না।
কথা ছিল রাজ্যের উদ্যোগে শিল্পপতি সম্মেলনে টাটা, মুকেশ-অনিল অম্বানীর মতো দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের আমন্ত্রণ করা হবে। সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করেছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এখন সরকারি সূত্রে জানানো হচ্ছে, শুধু এ রাজ্যের শিল্পপতি ও বণিকসভার প্রতিনিধিরাই থাকছেন সম্মেলনে। অন্য রাজ্যের শিল্পপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। মমতার আন্দোলনের জেরে ‘ন্যানো’ প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল টাটা গোষ্ঠী। তার পরে বৃহস্পতিবার সেই প্রকল্পের চুক্তিই খারিজ করল সরকার। শিল্পপতিদের সম্মেলনে টাটা গোষ্ঠীর প্রধান রতন টাটার সঙ্গে মমতার মুখোমুখি কথা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার ভিন্ রাজ্যের শিল্পপতিদের সম্মেলনে না ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তা হল না।
|
‘রাজনৈতিক ক্ষতি’র ভাতা কাদের, যাচাইয়ের নির্দেশ |
রাজ্যের পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার ১৯৭৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ‘রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের’ (অ্যাসিস্ট্যান্স ফর পলিটিক্যাল সাফারার বা এপিএস) ভাতা দিয়েছিল। সেই সাহায্যের ভিত্তি কী ছিল, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ক্ষমতায় আসার পরে ’৭৭-এ ফ্রন্ট সরকার ওই ভাতা দেওয়া শুরু করে। সেই সময় রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাথাপিছু মাসে ৬৫ টাকা সাহায্য দেওয়া হত। ’৭৮ সালে ২৩৭ জনকে সেই টাকা দেওয়া হয়। এতে ওই বছর মোট খরচ হয় এক লক্ষ ৮৪ হাজার ৮৬০ টাকা। ’৮৮-এ ভাতার পরিমাণ বেড়ে হয় মাসে ৩০০ টাকা। এ ভাবে ২০০৯ সালে মাসে ৩,২৫০ টাকা অর্থসাহায্য পেতেন রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্তেরা। এই হিসেবে ২০১০ সালে রাজ্যের খরচ হয় ৪৫ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬০ টাকা। এ ব্যাপারে পূর্ণ তথ্য হাতে পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই ব্যক্তিদের নির্বাচন করার ভিত্তি কী, ‘রাজনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ কারা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অর্থমন্ত্রী এই বিষয়গুলিই খতিয়ে দেখবেন।
|
পরীক্ষা ছাড়া আর ভর্তি হবে না পলিটেকনিকে |
আগামী বছর থেকে শুধু প্রবেশিকা পরীক্ষা (জেক্সপো)-র মাধ্যমেই পলিটেকনিকে ছাত্র ভর্তি হবে। পলিটেকনিকে এত দিন প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ৬০% পড়ুয়াকে ভর্তি করা হত। বাকি ৪০% ভর্তি হত মাধ্যমিকের ফলের ভিত্তিতে। কিন্তু ওই পড়ুয়াদের মান নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ আসায় সকলকেই পরীক্ষার মাধ্যমে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সরাসরি ভর্তি হওয়া ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রীর অধিকাংশেরই মানের ঘাটতি থাকছিল বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাই সকলের জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” তিনি
জানান, পলিটেকনিকে সুযোগ পাওয়া পড়ুয়াদের কাউন্সেলিং এ বছর থেকে আর অনলাইনে হবে না। পলিটেকনিকে সুযোগ পাওয়া সব পড়ুয়াকেই কলকাতায় এসে কাউন্সেলিংয়ে বসতে হবে।
আগামী পাঁচ বছরে ১০০টি সরকারি পলিটেকনিক গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি ৩০০টি আইটিআই করার চেষ্টা হবে বলে জানান কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ওই সব প্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই জেলাশাসকদের জমি দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
|
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাভাবিক’ অবস্থা ফিরিয়ে আনতে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বামফ্রন্ট। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অচলাবস্থা’ চলছে বলে ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পরিবেশ নেই। ছাত্রছাত্রীরা অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ভাবছে।” বিষয়টি নিয়ে এ দিন ফ্রন্টের বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা মেটাতে রাজ্য সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।” আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে ‘মাদ্রাসা’ শব্দটি যুক্ত করা নিয়েই সেখানে যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। ভোটের আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ‘মাদ্রাসা’ শব্দটি যুক্ত করার দাবি তুলেছিল। নতুন সরকার সেই দাবি মেনে নিলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের অপর অংশ তা মানতে নারাজ। ফলে, সমস্যা তৈরি হয়েছে। |