|
|
|
|
বক্তারের বাড়িতে গণহত্যা হয়েছিল, কবুল অভিযুক্তের |
বরুণ দে ² গড়বেতা |
দশ বছর ধরে ‘ফেরার’ অভিযুক্ত দিল মহম্মদকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সিবিআইয়ের জেরার মধ্যেই আর এক চাঞ্চল্যকর মোড় ছোট আঙারিয়া মামলায়। আগে এক দফা খালাস পেয়ে যাওয়া এক ‘অভিযুক্ত’ এ বার জনসমক্ষেই কবুল করলেন, ২০০১-এর ৪ জানুয়ারি বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে ‘গণহত্যা’ হয়েছিল।
ছোট আঙারিয়া লাগোয়া তিলডাঙার বাসিন্দা আসাজুল খান মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসাবে ২০০৫-এ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। চার বছর জেলে ছিলেন। তথ্যপ্রমাণের অভাবে ২০০৯-এ অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গেই খালাস পেয়ে যান। আরও দু’বছর পরে, রাজ্যে পালাবদলের সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে বক্তারের বাড়ির অদূরে গাছতলায় বসে সেই আসাজুলের স্বীকারোক্তি, বক্তারের বাড়িতে কোনও বৈঠক চলছে জেনে সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ, তপন ঘোষ, সুকুর আলিদের নির্দেশে রাতের অন্ধকারে হামলা হয়। কাছেই বাঁশদা থেকে সশস্ত্র লোকজন ছোট আঙারিয়ায় আসে। আসাজুলও ছিলেন। তপন-সুকুররা উপস্থিত হন। বক্তারের বাড়ি ঘিরে শুরু হয় গুলিবর্ষণ। আগুন লাগানো হয়। রাতেই ৫টি দেহ তুলে নিয়ে শীলাবতী নদীর চরে পোঁতা হয়। সপ্তাহ খানেক পরে সিপিএম নেতাদের নির্দেশে ফের দেহ তুলে পোড়ানো হয়। সুযোগ হলে আদালতে দাঁড়িয়ে সব বলবেন বলেও জানিয়েছেন আসাজুল। |
|
গণহত্যার কাহিনি শোনাচ্ছেন আসাজুল খান। |
এত দিন পরে মুখ খোলার পিছনে কি নতুন শাসকদলের হুমকি রয়েছে? আসাজুলের দাবি, “ভয় সিপিএমকেই। আমি কোনও দিন মুখ খুললে খুন করে দেবে বলে ওরাই শাসিয়েছিল।” এই মামলায় আর এক অভিযুক্ত গোলাপ মল্লিক খুন হয়েছিলেন ২০০৪-এর ২৩ এপ্রিল। তপন-সুকুরদের সঙ্গে বিরোধের জেরেই খুন বলে দাবি আসাজুলের। তিনি বলেন, “তপন-সুকুররা আমাকে বলেছিল, জেল থেকে বেরোলে ২৫ হাজার টাকা দেবে। দেয়নি। কেউ এখন দেখার নেই। নেতারা সব পালিয়েছে!” আসাজুলের ‘স্বীকারোক্তি’র সূত্র ধরেই পুলিশের উপস্থিতিতে এ দিন মাজুরিয়ায় শীলাবতীর চরে মাটি খুঁড়ে পোড়া কাঠের বেশ কিছু টুকরো উদ্ধার হয়। অজিত পাত্র নামে স্থানীয় এক সিপিএম কর্মীও ছোট আঙারিয়ার লাশ পোড়ানোর কথা তাঁদের কাছে কবুল করেছেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
গত শনিবার গড়বেতা-৩ ব্লকের উড়াসাই পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের আদিবাড়ির অদূরে দাসেরবাঁধে হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছিল। এর সঙ্গে ৯ বছর আগে কেশপুরের এক ‘গণহত্যা’র অভিযোগ জুড়ে যাওয়ায় তদন্তভার পড়েছে সিআইডি-র হাতে। বৃহস্পতিবার দাসেরবাঁধ ও সংলগ্ন পাটাইশোল আমবাগানে পুলিশের উদ্যোগেই মাটি খুঁড়ে তল্লাশি চলে। বিশেষ কিছু মেলেনি। তবে হাড়গোড় উদ্ধারের পর থেকে স্থানীয় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে তৃণমূলের হুমকি-শাসানি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। |
(তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ চক্রবর্তী, ছবি সৌমেশ্বর মণ্ডল) |
|
|
|
|
|