দখল ফুটপাথ, চলাই দায় বেনাচিতি বাজারে
হিরে থেকে জিরে, সবই মেলে এখানে।
বেনাচিতি বাজার সম্বন্ধে এমন কথাই বলে থাকেন দুর্গাপুর ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। শহরে ঝাঁ চকচকে কিছু শপিং মল গড়ে উঠলেও বেনাচিতি বাজার এখনও মহকুমার অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজারের আকার বেড়েছে। কিন্তু সেই অনুপাতে চওড়া হয়নি রাস্তা। ফলে যানজট এক নিত্যদিনের সমস্যা এই বাজারে।
প্রায় ষাট বছরের পুরনো এই বাজারে দুর্গাপুর শহর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রাম, এমনকী খনি এলাকার বাসিন্দারাও নিয়মিত কেনাকাচা করতে আসেন। বাজারের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রাস্তার বড় অংশ চলে গিয়েছে হকারদের দখলে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, রাস্তায় ফুটপথ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। ওই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন রুটের বাস চলে। তার সঙ্গে রয়েছে গাড়ি, মোটরবাইক, রিকশার দাপাদাপি। এইটুকু রাস্তা তার উপর দখল করে দোকান তো রয়েছেই, বসে থাকে হকাররাও। সময়ের মারপ্যাচে মিনিবাসের হইহই হুড়োহুড়ি আর যত্রতত্র রিকশাগুলির দাঁড়িয়ে থাকা সাধারন মানুষের আরও বেশি অশ্বস্তির কারন। এই যানজট শুরু হয় এবং প্রবল আকার নেয় ঘোষ মার্কেট এলাকায়। এই জটই বাকি রাস্তার যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রিকশা স্ট্যান্ড থাকলেও তারা অনেক সময়েই গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার একাংশ দখল করে দাঁড়িয়ে পড়ে।
ছবি: বিকাশ মশান।
সাধারণ মানুষের দাবি, বাজারের রাস্তা চওড়া হওয়া দরকার। উৎসবের সময়ে বা বর্ষায় পা ফেলা দায়। বাজারে আসা দম্পতি হৃদয় মণ্ডল ও সুপর্ণা মণ্ডল বলেন, “এখানে ভাল জিনিসপত্র পাওয়া যায়। কিন্তু গাড়ি নিয়ে আসা দায়। মিনিবাসগুলো যে ভাবে যায়, তাতে রাস্তা দিয়ে চলতেই ভয় লাগে। তার উপর বাজারের শৌচালয়ে দুর্গন্ধে টেকা দায়।” পলাশ দে, শঙ্খ নাগ, মিতু সামন্তরা বলেন, “আগে এই বাজারে প্রায়ই আসতাম। এখন এড়িয়ে চলি। যা পরিস্থিতি, কিছু দিন পরে আর চলার রাস্তা থাকবে বলে মনে হয় না।” স্থানীয় বাসিন্দা শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, শিবসাধন মণ্ডলের কথায়, “চলাফেরায় খুব সমস্যা হয়। উপায় নেই থাকতে হবে।” বাসিন্দাদের দাবি, এখানে উড়ালপুল গড়া দরকার। সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে পুরসভা উদাসীন, ক্ষোভ এলাকার মানুষের। দোকানদাররা জানান, পুরসভার গাড়ি সকালে না এসে স্কুলে যাওয়ার সময়ে বা ভিড়ের সময়ে নোংরা তোলে। তার ফলেও যানজট হয়। ফুটপাথ দখল করে থাকা হকারেরা বলেন, “বিকল্প জায়গা নেই। তাই পেটের দায়ে এখানেই ব্যবসা করছি।”
দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি দীনবন্ধু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তাটা চওড়া করা দরকার। আমরা বারবার পুরসভাকে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি। উদ্যোগ হলেও তা কাগজ-কলমেই রয়ে গিয়েছে। বাস্তবায়িত হয়নি বলে দাবি তাঁর।
পুরসভা অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছে। তবে হকার উচ্ছেদ ও সমস্যা সমাধানে তাঁরা যে সফল নন, তা স্বীকার করেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান। তিনি বলেন, রাস্তা চওড়া করায় সমস্যা রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি। মিনিবাসগুলি অন্য রাস্তা দিয়ে চালানোর পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু ওরা কিছু উৎসবে অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করলেও বাকি সময় বাজারের ভিতর দিয়েই চলছে। তাঁর দাবি, অভাব রয়েছে সচেতনতারও। পার্কিংয়ের জায়গা থাকলেও অনেকে রাস্তাতেই গাড়ি রাখেন। সমস্যা সমাধানে পুরসভা উদ্যোগী হচ্ছে বলে জানান তিনি।
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.