দু’টি কুনকি হাতি আসবে বাঁকুড়ায়, জানালেন বনমন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² রাইপুর |
বাঁকুড়ার জঙ্গলে হাতিদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে উত্তরবঙ্গ থেকে দু’টি কুনকি হাতি আনার পরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতর। রাইপুরের গোলর গ্রামে হাতির হানায় মৃত ছবিলাল মল্লিকের পরিবারের হাতে মঙ্গলবার ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দিয়ে এ কথা জানান রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন।
রবিবার রাতে বাড়ির উঠোনে খাটিয়ায় শুয়ে থাকা ছবিলালবাবুকে শুঁড়ে তুলে আছড়ে মেরেছিল একটি দাঁতাল। লালগড়ের জঙ্গলে আস্তানা গেড়ে থাকা একটি ‘রেসিডেন্ট’ দাঁতালই ওই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছিল বন দফতর। এ দিন দুপুরে মৃতের বাড়িতে যান বনমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আবাসন মন্ত্রী তথা বিষ্ণুপুরের বিধায়ক শ্যাম মুখোপাধ্যায়। মৃত ছবিলালবাবুর স্ত্রী গীতারানিদেবীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন বনমন্ত্রী। মৃতের ছেলে অলোক মল্লিককে পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতেও বলেন হিতেনবাবু। |
 |
রাইপুরে বনমন্ত্রী ও আবাসনমন্ত্রী। ছবি: উমাকান্ত ধর। |
‘রেসিডেন্ট’ হাতিদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যতিবস্ত এই জেলার বিশেষ করে বিষ্ণুপুরের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা। হাতি তাড়াতে গিয়ে বারবার নাস্তানুবাদ হতে হয় বন দফতরকেও। পাশাপাশি হাতির হানায় ফি বছর শস্যহানি হওয়ায় ক্ষুব্ধ ওই সব গ্রামের মানুষজন। একাধিকবার বন দফতরের কার্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। ‘রেসিডেন্ট’ হাতির পাশাপাশিই দলমার দাঁতালরাও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি করে জঙ্গলের গ্রামগুলিতে। আপাতত ‘রেসিডেন্ট’ হাতিদের পোষ মানানোর লক্ষ্যে কুনকি হাতিদের এনে বাঁকুড়ায় রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে এ দিন জানান বনমন্ত্রী। জঙ্গলমহলকে সবুজ রাখার জন্য নানা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এ দিকে, এ দিনই বিষ্ণুপুর বন বনবিভাগের বাঁকাদহ রেঞ্জের জঙ্গলে প্রায় এক মাস ধরে থেকে যাওয়া দলমার ১৫টি হাতির দলকে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার জঙ্গলে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন বনকর্মীরা। সোমবার রাতভর চলে এই অভিযান। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা বাঁকাদহের রেঞ্জ অফিসার বলাই ঘোষ বলেন, “একমাস ধরে হাতির দলটি এই অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এই নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা ১৫টি হাতির দলকে একত্রিত করে এ দিন সকালে গড়বেতার দিকে পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।” একই সঙ্গে আশঙ্কার কথাও শুনিয়েছেন বলাইবাবু। বাঁকাদহের কাঁঠালবাগান সমৃদ্ধ গ্রাম কুলুপুকুরে এসে হাজির হয়েছে ৬টি ‘রেসিডেন্ট’ হাতি। সেখানেও হাতিগুলি ক্ষয়ক্ষতি করছে। ওই হাতিদের গতিবিধির দিকেও নজর রেখেছে বন দফতর। দুর্ঘটনা এড়াতে হাতিদের কাছাকাছি না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য ক্ষোভ, হাতিরা ক্ষয়ক্ষতি করলেও বনকর্মীদের দেখা মিলছে না। |
|