|
|
|
|
দয়ানিধি মারানকে নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² নয়াদিল্লি |
মন্ত্রিসভার রদবদল আসন্ন। অথচ তার আগেই টেলিকম কেলেঙ্কারির অভিযোগে এখন মন্ত্রিসভা থেকে আরও এক ডিএমকে মন্ত্রীর ইস্তফার মেঘ ঘনাচ্ছে!
এবং তিনি শুধু প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজার
মতো করুণানিধির স্নেহধন্য নন। খোদ কালাইনারের নাতি, দয়ানিধি মারান! সূত্রের খবর, সরকারের অন্দরমহলে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী তথা প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী দয়ানিধি মারানের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট দিলেই তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে হবে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, প্রধানমন্ত্রী আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সব মন্ত্রী এবং তাঁদের স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানদের সম্পত্তির হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, মন্ত্রী বা পরিবারের কোনও সদস্যের ব্যবসা বা ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকলে তা-ও তাঁকে সবিস্তার জানাতে হবে। অনেকের বক্তব্য, এর মাধ্যমে মারানকে বার্তা দিয়েছেন মনমোহন। কারণ, তাঁর ভাই কলানিধি মারান দক্ষিণ ভারতের সান টিভি-র মালিক।
বস্তুত টু-জি স্পেকট্রাম মামলায় দয়ানিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জি শিবশঙ্করণ নামে এক ব্যবসায়ীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে এয়ারসেল সংস্থা থেকে তাঁর বিনিয়োগ প্রত্যাহারে বাধ্য করেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ হল, এয়ারসেল তথা তার প্রমোটার সংস্থা ম্যাক্সিস এর পরেই সান টিভিতে বিনিয়োগ করেছিল। কিছু দিন আগেই জি শিবশঙ্করণের জবানবন্দি নথিভুক্ত করেছে সিবিআই। তার পর থেকেই টু-জি মামলায় দয়ানিধির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে দয়ানিধি আজ বলেছেন, “শিবশঙ্করণ বিপুল অর্থের মালিক। তাঁকে চাপ দিয়ে এয়ারসেল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করানো সম্ভব? আমি কাউকেই আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাপ দিইনি। এ রকম যদি হত, তা হলে তখন তিনি আদালতে যাননি কেন?”
এই পরিস্থিতিতে আজ টু-জি স্পেকট্রাম তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে সিবিআই ডিরেক্টর এ পি সিংহকে ডাকা হয়েছিল। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে গত দশ বছরের টেলিকম-নীতি নিয়ে আলোচনায় তিনি মারানের নামও তোলেন। তখন কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন জেপিসিতে ডিএমকে-র সদস্য সদস্য টি আর বালু। পরে জেপিসি চেয়ারম্যান পি সি চাকো জানান, কমিটি কাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবে, তার তালিকা মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে। ৮৫ জনের ওই তালিকায় প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রীদের নামও রয়েছে। যার অর্থ, তিহার জেল থেকে ডেকে এ রাজার সাক্ষ্যও নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দয়ানিধি মারান, সুষমা স্বরাজ, অরুণ শৌরি-সহ গত দশ বছরে সব টেলিকম মন্ত্রীরই সাক্ষ্য নেবে জেপিসি। স্বাভাবিক ভাবেই মনে করা হচ্ছে, জেপিসিতে বিরোধী দলগুলির সদস্যরা এখন মারানকে চেপে ধরতে পারেন। তবে আপাতত সবটাই সিবিআইয়ের ওপর নির্ভরশীল। সিবিআই যে দয়ানিধিকে চার্জশিট দেবেই, এমন কথা এখনও তারা জানায়নি। বরং বলা হচ্ছে, জি শিবশঙ্করণ মারানের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করেছেন এবং তার সপক্ষে যে সব তথ্য দিয়েছেন, তা বিচার করে দেখতে হবে।
অন্য দিকে কংগ্রেসের একাংশের মতে, এটা ঠিকই যে, ডিএমকে বিধানসভা ভোটে পর্যুদস্ত হওয়ার পর এখন অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে তারা এখনই কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার অবস্থায় নেই। কিন্তু এ রাজার পর এখন দয়ানিধি মারানকেও যদি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে হয়, তা হলে ডিএমকে-কে তাদের পরবর্তী কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে। ইতিমধ্যেই করুণানিধি তাঁর জন্মদিনে জানিয়েছেন, অসৎ সঙ্গে নরকবাস হচ্ছে তাঁদের। বক্তব্য স্পষ্ট করে দু’দিন আগে করুণানিধি এ-ও জানান, কানিমোজি গ্রেফতারের জন্য কেন্দ্রই দায়ী।
এখন দয়ানিধি ইস্তফা দিতে বাধ্য হলে, তার রাজনৈতিক প্রভাব কেন্দ্রে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। |
|
|
 |
|
|