|
|
|
|
হুল-প্রণব কথা |
রামদেব-আতঙ্কে না ভুগে এখন মায়াবতীকেই নিশানা কংগ্রেসের |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² নয়াদিল্লি |
এক বছরও বাকি নেই উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের। তার আগে ‘অপারেশন রামদেব’ কি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কংগ্রেসের সম্ভাবনায়?
তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তিত কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর সেই প্রেক্ষাপটেই গতকাল দুপুরে নয়াদিল্লির তালকাটোরা রোডে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন রাহুল গাঁধী।
সূত্রের খবর, রাহুলকে প্রণববাবু জানান, এই মুহূর্তে হয়তো মনে হচ্ছে রামদেব-পর্ব উত্তরপ্রদেশ ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু ভোট যখন হবে, তখন সেই সময়ের পরিস্থিতি বিচার করেই মানুষ ভোট দেবেন। তার আগে রামদেবের স্বরূপ ফাঁস করতে কংগ্রেস যে প্রচার চালাচ্ছে তা ধারাবাহিক ভাবে চলবে। তবে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস মূল আক্রমণ শাণাবে মায়াবতী সরকারের ‘অপশাসনের’ বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে বিজেপি এবং আরএসএসকেও কাঠগড়ায় তুলবে। উমা ভারতী বিজেপিতে ফেরায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রসঙ্গ তুলে এই প্রচারের সুযোগ বাড়ল বলেও মনে করা হচ্ছে। ওই বৈঠকের পরেই আজ তিন ঘণ্টার জন্য লখনউয়ে যান কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল। দলের সদর দফতরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিক বৈঠক করে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, ২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্যে কংগ্রেসের প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে প্রচার কর্মসূচি সব কিছুর উপরেই নজর রাখবেন রাহুল গাঁধী। তাঁর তত্ত্বাবধানে শীঘ্রই ৪০৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। দিগ্বিজয় জানান, উত্তরপ্রদেশ ভোটে সপা বা বসপা, কারও সঙ্গেই জোট বাঁধবে না কংগ্রেস। তবে ছোট আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গড়ার প্রশ্নে আলোচনা চালাবেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, আরএলডি নেতা অজিত সিংহের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। |
 |
লখনউয়ে রাহুল গাঁধী। পিটিআই |
গত শনিবার মধ্যরাতে রামলীলা ময়দানে পুলিশ দিয়ে রামদেবের অনশন-সত্যাগ্রহ তুলে দেওয়ার পর থেকেই তার রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সাধ্বী ঋ
তাম্ভরা (বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্বহিন্দু পরিষদ নেত্রী) রামদেবের মঞ্চে থাকা সত্ত্বেও মুলায়ম সিংহ যাদব যে ভাবে কংগ্রেসের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন, তা জল্পনা উস্কে দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, রামদেব জাতিতে যাদব বলে মুলায়ম কংগ্রেসের সমালোচনা করছেন।
এ-ও বলা হচ্ছে, এতে হিন্দি বলয়ে ‘উচ্চ বর্ণ’ হিন্দুরা কংগ্রেসের উপর চটে গিয়েছেন। কারণ উত্তরপ্রদেশের ঘরে ঘরে রামদেবের অনুগামী রয়েছেন। সেই কারণেই বিজেপি নেতৃত্ব রামদেবের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, গোটা ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের কংগ্রেসের উপর আস্থা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তা ছাড়া, উত্তরপ্রদেশের ‘উচ্চ বর্ণে’র মানুষ যদি দেখেন, বিজেপি-র জয়ের সম্ভাবনা কম, তা হলে তাঁরা বিজেপি-কে ভোট দিয়ে তা নষ্ট করবেন না বলেই কংগ্রেসের একাংশের ধারণা।
প্রণববাবুদের মতো কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতাদের মতে, উত্তরপ্রদেশে জাতপাতের রাজনীতি রয়েছে ঠিকই। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে বিহার-সহ হিন্দি বলয়ের একাধিক রাজ্যে নির্বাচনের ফলের গতিপ্রকৃতি দেখিয়ে দিচ্ছে উন্নয়ন ও সুশাসনের বিষয়টিই ক্রমশ নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই আগাম সাতপাঁচ হিসেব না কষে এই মুহূর্তে মায়াবতী সরকারের অপশাসন ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সরব হতে হবে কংগ্রেসকে। পাশাপাশি প্রচার চলবে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে। আজ থেকে সেই প্রচার আরও জোরদার ভাবেই শুরু করেছেন দিগ্বিজয়রাও। সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি, মায়া সকলেরই সমালোচনা করলেন। এ-ও জানালেন, রাহুল গাঁধী আবার ভাট্টা পারসল যাবেন। এবং এ মাসের মধ্যেই। |
|
|
 |
|
|