‘গণহত্যা’র স্মৃতি উস্কে দিয়ে হাড়গোড়-কাণ্ডে নাম সুশান্তর
সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের আদিবাড়ির গ্রামের কাছে হাড়গোড় উদ্ধারের সঙ্গে জুড়ে গেল ৯ বছর আগে কেশপুরে এক ‘গণহত্যা’র অভিযোগ। নাম জড়াল সুশান্ত ঘোষ, তরুণ রায়, এন্তাজ আলির মতো সিপিএম নেতাদের।
গড়বেতা-৩ ব্লকের উড়াসাই পঞ্চায়েতের বেনাচাপড়ায় আদি বাড়ি সুশান্তবাবুর। তার কিলোমিটার খানেক দূরের মল্লিকডাঙা গ্রামের দাসেরবাঁধে শনিবার উদ্ধার হয় বেশ কিছু হাড়গোড়। সেই হাড়গোড় ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর কেশপুরের পিয়াশালায় সিপিএমের হামলায় ‘নিহত’ ৭ তৃণমূল কর্মীর বলে দাবি উঠেছে। এমনকী সোমবার ৯ বছর আগের ওই ঘটনা নিয়ে কেশপুর থানায় নতুন করে অভিযোগও দায়ের করেছেন পিয়াশালা লাগোয়া খেতুয়া গ্রামের যুবক শ্যামল আচার্য। তাঁর দাবি, দাসেরবাঁধে হাড়গোড়ের সঙ্গেই উদ্ধার হওয়া পোশাকের অংশ

নিখোঁজ অজয় আচার্যের স্ত্রী সবিতা। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
তাঁর বাবা অজয় আচার্যের। ৯ বছর আগে সিপিএমের হামলায় অজয়বাবু-সহ ৭ দলীয় কর্মী-সমর্থক নিহত হয়েছিলেন এবং তাঁদের দেহ কয়েক কিলোমিটার দূরে বেনাচাপড়ার দিকেই গরুর গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতারা। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ, কৃষকসভার রাজ্য সম্পাদক তরুণ রায়, কেশপুর জোনাল কমিটির সদস্য এন্তাজ আলি-সহ কয়েকজন ‘হেভিওয়েট’ সিপিএম নেতার মদতেই ওই ‘গণহত্যা’ ঘটানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে পালাবদলের আগেই নেতাই-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে বেশ কয়েক জন সিপিএম নেতা-কর্মীর। তাঁদের অনেকেই এখনও ‘পলাতক’। কিন্তু ‘গণহত্যা’র মতো ঘটনায় সুশান্ত ঘোষের মাপের সিপিএম নেতার নাম সাম্প্রতিক অতীতে জড়ায়নি। অভিযুক্ত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সিপিএমের কেশপুর জোনাল সম্পাদক আহমেদ আলি বলেন, “একেবারেই মিথ্যে অভিযোগ। ওই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।”
হাড়গোড়-কাণ্ডে ওঠা অভিযোগের সূত্র ধরেই সোমবার সিআইডি অফিসারেরা কেশপুরে এসে ‘গুম’ হওয়া মানুষজনের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। শ্যামলবাবু ছাড়াও সিআইডি অফিসারেরা কথা বলেছেন সে-দিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করা অরূপ ঘোষ এবং রাম সানি নামে দু’জনের সঙ্গেও। ওই দু’জন জানান, তৃণমূল সমর্থক ছিলেন তাঁরা। ২০০১-এর বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই সিপিএমের সন্ত্রাসে ঘরছাড়া হন। ২০০২-এর সেপ্টেম্বরে মেদিনীপুরে সর্বদল বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়ঘরে ফিরলে সমস্যা হবে না। সেই মতোই অরূপরা সব মিলিয়ে ৫২ জন ২২ সেপ্টেম্বর সকালে খেতুয়ায় ফেরেন। প্রথমে তৃণমূল অফিসেই ছিলেন। আচমকাই সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনী অফিস ঘিরে ফেলে বলে অভিযোগ। এর পরের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে এখনও আতঙ্কিত হয়ে পড়া অরূপ ও রাম বলেন, “অফিস ঘেরাও হতেই যে যে-দিকে পারি ছুটতে থাকি। আমরা ৯ জন একসঙ্গে ছিলাম। অজয় আচার্য, স্বপন সিংহ, সুকুর আলি, নবকুমার সিংহ, তাজউদ্দিন, আলাউদ্দিন, দিল মহম্মদএই ৭ জন পিয়াশালার একটি বাড়িতে গা-ঢাকা দেয়। আমরা দু’জন ঝোপের আড়ালে লুকোই। সেখান থেকেই দেখি, ওই বাড়ির ৭ জনকেই ওরা গুলি করে মারে। তার পরে গরুর গাড়িতে চড়িয়ে দেহ নিয়ে বেনাচাপড়ার দিকে চলে যায়।” ধরা পড়ে অরূপ-রামরাও প্রহৃত হন। তাঁরা জ্ঞান হারান। পরে কেশপুর হাসপাতালে তাঁদের জ্ঞান ফেরে বলে জানিয়েছেন অরূপরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সে দিনের ঘটনায় যে ৭ দলীয় কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছেন বলে তৃণমূলের দাবি, তাঁদের মধ্যে শেখ তাজউদ্দিন ও শেখ আলাউদ্দিনের দেহ পরে
উদ্ধার হয়েছিল। তবে বাকি ৫ জনের কোনও খোঁজ মেলেনি।
First Page Medinipur Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.