|
|
|
|
ঢাকার সঙ্গে জল-বিবাদ মেটাতে মমতাকেও পাশে চাইছে কেন্দ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²নয়াদিল্লি |
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের জল-বিবাদ মেটাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনায় বসবেন কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তারা। মঙ্গলবার তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে যাচ্ছেন বিদেশসচিব নিরুপমা রাও। তার পরই জুন মাসের শেষে ঢাকা যাবেন বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ। যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমও। দু’দেশের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী স্তরের শীর্ষ বৈঠকের আগে তিস্তা, ইছামতী-সহ বিভিন্ন নদীর জল বণ্টন নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলা বিতর্ক পুরোপুরি মিটিয়ে ফেলতে তাই উদ্যোগী হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়ে তিস্তা সমস্যার সমাধান যে সম্ভব নয়, সে কথা এর আগে একাধিক বার বলেছে নয়াদিল্লি। অপেক্ষা করা হচ্ছিল রাজ্যে নির্বাচন শেষ হওয়ার জন্য। নতুন মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর তাই এ বার পুরোদস্তুর আলোচনা শুরু করতে চায় সাউথ ব্লক। তিস্তা চুক্তি হলে পশ্চিমবঙ্গে তার কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। এর আগে বামফ্রন্ট জমানায় রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে তিস্তা সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিয়ে জানিয়েছিলেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরকার এ নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, মমতা নিজেও চান এই সমস্যার সমাধান হোক। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। গত বছর জানুয়ারি মাসে হাসিনার দিল্লি সফরের সময়ে মমতা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখনই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছিল তাঁদের। মমতা আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে এই বিবাদের সুরাহার জন্য সচেষ্ট হবেন। আবার, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পরেই প্রথমে ফোনে, তার পরে কলকাতার উপদূতাবাসের মাধ্যমে ফুল পাঠিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে অভিনন্দন জানান হাসিনা। বাংলাদেশ সফরের নিমন্ত্রণও হাসিনা করে রেখেছেন মমতাকে। মমতা জানিয়েছেন, সময় পেলেই তিনি ঢাকা যেতে আগ্রহী। কূটনৈতিক মহলের আশা, এই ‘পরিবর্তনের’ ফলে যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও। তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য, জ্যোতি বসু মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় গঙ্গার জল-চুক্তি করেছিলেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতাও তিস্তা চুক্তির মতো ‘ঐতিহাসিক’ কাজটি সম্পন্ন করবেন।
এর আগে দেশের জলসম্পদ ও সেচমন্ত্রী পর্যায়ে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। জল সম্পর্কিত দু’দেশের বিশেষজ্ঞ দলও বেশ কয়েক বার বৈঠকে বসেছে। আগামী সপ্তাহে জলসম্পদ মন্ত্রকের একটি প্রতিনিধি দল দিল্লি আসবেন। সংসদে বর্ষাকালীন অধিবেশনের শেষে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা যাওয়ার কথা। তাঁর সফরে মূলত যে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি নয়াদিল্লি করতে চাইছে, তার একটি ছিটমহল সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং দ্বিতীয়টি জল বণ্টন সংক্রান্ত। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে দু’দেশের নদী কমিশনের বৈঠকও শুরু হয়েছে। তৈরি হয়েছে যৌথ নদী পর্যবেক্ষণ কমিটি। বাংলাদেশের নদীগুলির ড্রেজিংয়ের জন্য ঢাকা যে সাহায্য চেয়েছে, তাতেও পুর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি মেঘনা এবং তিতাসের উপর দু’টি সেতু তৈরির কাজে সম্পূর্ণ অর্থ সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছে মনমোহন সরকার। |
|
|
|
|
|