|
|
|
|
হরিশ্চন্দ্রপুরে মহিলা ও বৃদ্ধদের মার পুলিশের |
নিজস্ব সংবাদদাতা ² হরিশ্চন্দ্রপুর |
জমি নিয়ে দুই প্রতিবেশীর বিবাদ থামাতে গিয়ে একপক্ষের মহিলা, বৃদ্ধদের ঘর থেকে টেনে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে টালবাংরুয়া এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। জখমদের মধ্যে ৫ জন মহিলা, এক বৃদ্ধ-সহ ৮ জন হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি। হরিশ্চন্দ্রপুরের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক তজমুল হোসেন অভিযোগ করেন, “পুলিশ একতরফা হামলা চালিয়েছে। জেলা পুলিশ কর্তাদের তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রীকেও সব জানিয়েছি।”
মালদহ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “ঘটনাটি জানার পরেই এসডিপিও-কে এলাকায় গিয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|
|
হাসপাতালে আহতরা। ছবি বাপি মজুমদার। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টালবাংরুয়া গ্রামের নাজির হোসেন প্রতিবেশী শেখ কাইয়ুমকে ১৯ কাঠা ধানের জমি বন্ধক দেন ২ হাজার টাকার বিনিময়ে। ধান বোনার ৯০ দিন বাদে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও কাইয়ুম দেননি বলে অভিযোগ। তাই জমির ধান কাটতে গেলে কাইয়ুম শেখকে নাজির হোসেন বাধা দেন। বুধবার রাতে শেখ কাইয়ুম পুলিশে অভিযোগ করেন, বন্ধকের টাকা দেওয়ার পরেও তাঁকে ধান কাটতে বাধা দেওয়া হচ্ছে ও মারধর করা হয়েছে। অভিযুক্ত নাজিরকে থানায় ডেকে পাঠান সাব-ইন্সপেক্টর নিত্যরঞ্জন ভট্টাচার্য। সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে নিত্যরঞ্জনবাবুর দেখা না-পেয়ে শেখ কাইয়ুমের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন নাজির।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাত ৮টা নাগাদ নিত্যরঞ্জনবাবু গ্রামে পৌঁছন আধা সামরিক বাহিনীর কয়েকজন জওয়ানকে নিয়ে। পুলিশ দেখে ৯০ বছরের বৃদ্ধ আবদুর রশিদ, ছেলে জাকির হোসেন চেয়ার এগিয়ে দেন। তখনই ওই ৩ জনকে ফেলে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। নাজিরের স্ত্রী সেরিনা বিবি, ভাইঝি সারেক্ষা বিবি, আনোয়ারা খাতুন ও ভাগ্নি জামেলা ও শহরবানু বিবিকেও ঘর থেকে টেনে এনে মারা হয় বলে অভিযোগ। ৮ জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। লাঠির আঘাতে সেরেনার হাত ভেঙে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের কয়েকজন বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়েছে।
এলাকার ফব বিধায়ক বলেন, “বড় ঘটনা ঘটলে পুলিশের দেখা মেলে না। গ্রামে এ ধরনের ঘটনা হামেশাই ঘটে। ওখানে কোনও অবরোধ কিংবা আক্রমণ হয়নি। পুলিশ একতরফা ভাবে হামলা করেছে।” স্থানীয় সিপিএম নেতা শেখ খলিল বলেন, “এটা রাজনৈতিক বিষয় নয়। তবে পুলিশ যা করেছে তা মানা যায় না।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলমও ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিলে পুলিশ চড় পর্যন্ত মারে না। ওখানে পুলিশ কেন এত তৎপর হল তা তদন্ত করে দেখতে হবে।” অভিযুক্ত এসআই নিত্যরঞ্জনবাবু বলেন, “একপক্ষের হয়ে কাজ করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। দু’পক্ষের গোলমাল শুনে যাই। ওঁদের মারা হয়নি। নিজেদের মধ্যে মারামারি করে ওঁরা জখম হয়েছেন।” |
|
|
|
|
|