|
|
|
|
সংসারে অভাব উপেক্ষা করেই মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ বাপ্পার |
নিজস্ব সংবাদদাতা ²রায়না |
সম্বল শুধু জেদ আর স্বপ্ন। আর তা দিয়েই সংসারের অনটনকে উপেক্ষা করে মাধ্যমিকে সফল রায়নার উচালন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র বাপ্পা দাস। এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে।
বাপ্পার বাবা অসীম দাস সোনার দোকানে কাজ করেন। সেই উপার্জনেই কোনও রকমে সংসার চলে। তা সত্ত্বেও ছেলেমেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে কখনও আপোষ করেননি। বাপ্পার দিদি সুমনাও অভাবের মধ্য দিয়েই সফল ভাবে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে এখন আরামবাগ গার্লস কলেজে বিএ পড়ছেন। এখন অবশ্য নিজের পড়ার খরচ টিউশন পড়িয়েই জোগাড় করেন সুমনা। |
বাপ্পা দাস।
নিজস্ব চিত্র। |
অনটনের জন্য পড়াশোনা আটকে থাকেনি বাপ্পারও। প্রয়োজনীয় সব বইপত্র কেনার সামর্থ্য ছিল না। এ ব্যাপারে পাশে দাঁড়িয়েছে তার স্কুল। উচালন হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক তাপস দাঁ এবং প্রধান শিক্ষক আনার মোল্লা জানান, গরিব পরিবারের কৃতী ছাত্র বাপ্পার পড়াশোনা সংক্রান্ত খরচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষই। তাঁদের কথায়, “ছেলেটি দারুণ প্রতিভাবান। তাই স্কুলের শিক্ষকেরাই ওকে সমস্ত বইপত্র কিনে দেওয়ার ভার নিয়েছিলেন। এছাড়া, আলাদা ভাবে পড়া বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও নিয়েছিলেন তাঁরা।” এ কথা বলার পাশাপাশি তাপসবাবু ও আনার মোল্লা স্বীকার করেন, “তবে আমাদের যত চেষ্টাই থাক না কোন, ওর নিজের চেষ্টা এবং জেদ না থাকলে মাধ্যমিকে এত ভাল ফল করতে পারত না।” |
|
মাধ্যমিকে মোট ৭২৩ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে বাপ্পা। বাংলায় ১৭০, ইংরেজিতে ৯১, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৮, অঙ্কে ৯৫, জীবন বিজ্ঞানে ৯৭, ভুগোলে ৯২ এবং ইতিহাসে ৮০ পেয়েছে সে।
তার এই ভাল ফলের পিছনে স্কুলের শিক্ষকদের যে বড় অবদান রয়েছে, সে কথা স্বীকার করে বাপ্পাও। সে আরও জানায়, তার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ফের নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মাস্টারমশাইরা। সম্প্রতি তাকে নিখরচায় একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিনা মূল্যে তাকে দেওয়া হয়েছে একাদশ শ্রেণির সব পাঠ্যবইও। বাপ্পার বাবা অসীমবাবুর কথায়, “ছেলে-মেয়ে দু’জনেই নিজেদের চেষ্টায় কষ্ট করে এগিয়ে চলেছে। আমরা শুধু চাই, ওরা মানুষের মতো মানুষ হোক। তাহলেই আমরা খুশি। আর কোনও প্রত্যাশা নেই।” |
|
|
|
|
|