অস্ত্রোপচারে দেহের বাড়তি মেদ বাদ দেওয়া নয়, পাকস্থলীকেই এমন ভাবে ভাঁজ করে দেওয়া যাতে খিদে কম পায়। খিদে কম পেলে খাবার কম খাওয়া হবে, বাড়তি মেদ থাকবে নিয়ন্ত্রণে। ‘বেরিয়াট্রিক গ্যাসট্রিক প্লাইকেশন’ নামে পাকস্থলী ভাঁজ করার এই নতুন ধরনের অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছে কলকাতাতেও। তবে এর ফলে শরীরে কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া হয় কি না বা শরীরের পক্ষে কতটা নিরাপদ, এখনই স্পষ্ট বলতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। কারণ এ নিয়ে পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। যদিও শহরে ৫০০-র বেশি মানুষ মেদ কমানোর জন্য এই অস্ত্রোপচার করে ফেলেছেন।
‘ন্যাশনাল হেল্থ অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভে ১৯৯৯-২০০০ অনুযায়ী, ভারতে ৬৪ শতাংশ লোকের ওজন বেশি। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের ওজন-বৃদ্ধির পরিমাণ অসুখের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। ৫ শতাংশ মেদবৃদ্ধির কারণে গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন। বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হল মেদবৃদ্ধি (প্রথম কারণ ধূমপান)। চিকিৎসকেরাই জানাচ্ছেন, মেদ বাড়লে ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, স্লিপ অ্যাপনিয়া, হাঁটুর ব্যথা, বন্ধ্যত্ব, হার্নিয়া, অবসাদের মতো বিভিন্ন রোগ হতে পারে। অতিরিক্ত মোটা মানুষের স্বাভাবিক যৌন জীবনযাপন এমনকী হাঁটাচলাতেও সমস্যা হয়।
চিকিৎসক সরফরাজ জে বেগ-এর কথায়, “গ্যাসট্রিক প্লাইকেশন অস্ত্রোপচারে পাকস্থলীর চর্বিকে বাদ দিয়ে এমন ভাবে ভাঁজ করা হয় যে পাকস্থলীর খাবার ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। কম খেলে দেহে মেদও কম জমে। ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে এই অস্ত্রোপচারে খরচ হয় লাখখানেক টাকার মতো। ইচ্ছে করলে আবার পাকস্থলীকে খুলে দেওয়া যায়। কলকাতায় যাঁদের অস্ত্রোপচার হয়েছে, তাঁদের কারও দেহে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখনও দেখা যায়নি।” চিকিৎসক বি রামান্না অবশ্য বলেন, “এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এখনও পুরোপুরি জানি না। পাশাপাশি, অস্ত্রোপচারের সময়ে প্রতি হাজারে ২ জনের মৃত্যুর সম্ভাবনা থেকে যায়। এটা করাতে চাইলে এ সব ঝুঁকির কথা মনে রাখতে হবে।” |