অনাহার, অপুষ্টির সঙ্গেই জঙ্গলমহলের মানুষের নিত্যসঙ্গী নানা অসুখ। চিকিৎসা, ওষুধ-পথ্যের চিন্তাও অনেকের কাছে বিলাসিতা। রোগবালাইয়ের মধ্যে অন্যতম ম্যালেরিয়া। গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের সাতমা পঞ্চায়েতের রম্ভা গ্রামে একই পরিবারের ৪ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। হতদরিদ্র পরিবারের অসুস্থরা প্রবল জ্বর নিয়েও বিনা চিকিৎসায় বাড়িতেই ছিলেন। গত সোমবার তাঁদের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, চিকিৎসাধীন বনমালী দেহুরি ও তাঁর স্ত্রী ভুটিদেবী এবং তাঁদের দুই মেয়ে ১২ বছরের মুংলি ও ৬ বছরের সোমবারি প্রত্যেকের রক্তে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম জীবাণুুর সন্ধান মিলেছে।তবে ৪ জনেরই শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। বনমালীবাবু ও ভুটিদেবীর ১০ বছরের ছেলে সুশীলকেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। দিন সাতেক আগে বনমালীবাবুর দাদা উপেন্দ্রনাথ দেহুরি কয়েক দিনের জ্বরে ভুগে মারা যান। তিনিও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে স্থানীয়দের অনুমান। ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি সত্যরঞ্জন বারিক জানান, কয়েক দিন ধরে ওই ৪ জন জ্বরে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসা করাননি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়। সোমবার মেডিক্যাল টিম রম্ভা গ্রামে গিয়ে সপরিবার বনমালীবাবুকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসে। দরিদ্র দেহুরি পরিবারটিকে সরকারি সাহায্য দানের জন্যও বিডিও-র কাছে আবেদন করেছেন সত্যরঞ্জনবাবুরা। বিডিও অমিত শেঠ সোমবার অসুস্থদের দেখতে যান। ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক স্বদেশরঞ্জন প্রামাণিক জানান, সুস্থ হয়ে ফেরার পরে পরিবারটিকে সরকারি ত্রাণ দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদেরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র জানান, অসুস্থদের পরিজন ও পড়শিদেরও রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই এলাকায় মশা-নাশক স্প্রে করার পাশাপাশি মেডিকেটেড মশারি বিলির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। |