অক্সিজেনের অভাবে সিপিএমের এক প্রাক্তন কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল। সোমবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন বিভাগে। পুলিশ জানায় মৃতের নাম, মণীন্দ্র কুমার সরকার (৭১)। তাঁর বাড়ি রায়গঞ্জের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের শিল্পীনগরে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবে ওই প্রাক্তন কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে হাসপাতাল সুপারকে অভিযোগ জানানো হয়েছে। হাসপালাতের সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। ১৭০টি অক্সিজেন সিলিণ্ডারের মধ্যে সোমবার ১৫টি ভর্তি ছিল। সেগুলি বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের দেওয়া হয়েছিল। অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ায় অন্য ওয়ার্ড থেকে দু’বার মণীন্দ্রবাবুকে অক্সিজেন বদলে দেওয়া হয়। অক্সিজেনের অভাবে তাঁর মৃত্যুর অভিযোগ সঠিক নয়।” হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য পবিত্র চন্দ বলেন, “হাসপাতালের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আগামী ৬ জুন রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের উদ্যোগে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে অক্সিজেন সিলণ্ডার বাড়ানোর দাবি নিয়েও আলোচনা হবে।” পারিবারিক সূত্রের খবর, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর ছিলেন মণীন্দ্র বাবু। তিনি সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, বাস্তুহারা পুনর্বাসন কমিটির সভাপতি পদেও ছিলেন। তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। সোমবার বিকাল ৪টা নাগাদ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি মারা যান। মৃতের ছেলে মধুসূধন বাবু বলেন, “বাবার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। প্রথম বার দেওয়া অক্সিজেনের সিলিন্ডার শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় সিলিন্ডার দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তা শেষ হয়ে যায়। সেই সময় শ্বাসকষ্টে বাবা ছটফট করতে থাকেন। নার্স, সুপারকে অক্সিজেন আনতে বললেও তাঁরা উদ্যোগ নেননি।” সিপিএমের রায়গঞ্জ লোকাল কমিটির সম্পাদক নীলকমল সাহা বলেন, “পরিস্থিতি না বদলালে আন্দোলনে নামব।”
|