বনগাঁ হাসপাতালে বিধায়ক, শো-কজ ডাক্তারকে

মুখ্যমন্ত্রীর প্রদর্শিত পথেই আচমকা বনগাঁ হাসপাতালের অবস্থা দেখতে গেলেন তৃণমূলের বিধায়ক ও নেতারা।
গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমনই এক ঝটিকা সফরের সময়ে ‘অশোভন আচরণের’ কারণে বাঙুর হাসপাতালের অধিকর্তাকে সাসপেন্ড করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। আর সময়ে না আসায় মঙ্গলবার শো-কজ করা হল বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসক এবং এক ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানকে।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হঠাৎই উত্তর ২৪ পরগনার ওই হাসপাতালে ঢুকে পড়ে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের গাড়ি। একে একে চলে আসেন বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ, পুরসভার প্রতিনিধি শঙ্কর আঢ্য, বনগাঁ শহর যুব তৃণমূল সভাপতি প্রসেনজিৎ ঘোষ, বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন দত্তেরাও। বহির্বিভাগে গিয়ে তাঁরা দেখেন, রোগীরা ভিড় করে আছেন। সকাল ১০টায় কাজ চালু হওয়ার কথা। অথচ তার চল্লিশ মিনিট পরেও চিকিৎসক অর্ণব ভট্টাচার্য রোগী দেখা শুরু করেননি বলে অভিযোগ। রোগীরা যাতে ঠিক মতো পরিষেবা পান তা দেখার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন বিধায়ক। বহির্বিভাগের আর এক চিকিৎসক অমিত চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনার ক’টায় আসার কথা?” অমিতবাবু বলেন, “১০টায়। তবে আজ একটু দেরি হয়ে গিয়েছে।”

মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল দেখতে আচমকাই বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে
পৌঁছে যান বিধায়ক-সহ তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল।--নিজস্ব চিত্র।

বহির্বিভাগে আসা রোগীরা বিধায়ককে পেয়ে ঝুড়ি-ঝুড়ি সমস্যার কথা বলতে থাকেন। তবে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আপাতত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বহির্বিভাগ থেকে নেতারা যান ওষুধ সরবরাহ করার ঘরে। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস সেখানে চলে এসেছিলেন। ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে তিন জন ফার্মাসিস্ট আছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন ছুটিতে ছিলেন। হাজির ছিলেন বাকি দু’জন। কিন্তু শাসকদলের প্রতিনিধিরা গিয়ে দেখেন, এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ওষুধ দিচ্ছেন। কেন? তড়িঘড়ি ব্যাখ্যা দিতে গিয়েছিলেন এক ফার্মাসিস্ট। কড়া গলায় বিধায়ক বলেন, ‘‘আগে কী হয়েছে, ভুলে যান। এখন থেকে ঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।”
ল্যাবরেটরি ওয়ার্ডে তিন জন টেকনিশিয়ান থাকার কথা। কিন্তু ছিলেন মাত্র দু’জন। চিকিৎসক ছিলেন না। বেলা সাড়ে এগারোটাতেও কেন চিকিৎসক নেই, সুপারের কাছে তা জানতে চান প্রতিনিধিরা। সময়ে না আসার কারণে শেষ পর্যন্ত ওই বিভাগের চিকিৎসক শুদ্ধাংশু বর্মন এবং টেকনিশিয়ান রঞ্জন সেনগুপ্তকে শো-কজ করেন সুপার। পরে বিধায়ক বলেন, “আজ হাসপাতালে গিয়ে দেখে এলাম, স্বাস্থ্য পরিষেবা বেহাল। যেটুকু পরিকাঠামো রয়েছে, তারও সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। শীঘ্রই যাতে এখানকার পরিকাঠামোর উন্নতি করা যায়, সে চেষ্টা করব।”

Previous Story Swasth Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.