|
|
|
|
বিতর্ক ... |
ওসামার মৃত্যু সন্ত্রাসের শক্তি বাড়াবে |
পক্ষে |
এর পর প্রতিহিংসা আরও বাড়বে |
l ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ ক্ষীণবল হয়ে গেল ভাবলে চরম ভুল হবে। বরং সন্ত্রাসবাদীরা আরও তীব্র ভাবে পৃথিবীর নানান দেশে তাদের থাবা বসাবে। প্রাণ যাবে আরও কত নিরীহ মানুষের। এরা রক্তবীজের বংশ।
স্বপনকুমার সরকার। বোলপুর, বীরভূম
l ওসামার পূর্বেও পৃথিবী বহু সন্ত্রাসের সাক্ষী থেকেছে। ওসামা সন্ত্রাসের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দাবিদার মাত্র। এই ওসামার জন্ম দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই, নিজের স্বার্থপূরণে। কিন্তু পরে ওসামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই বিরোধিতা করলে ওসামাকে ধ্বংস করতেও তৎপর হয় সেই দেশই। ওসামা মারা গেলেও তার দলের অস্তিত্ব রয়েছে। তাই এ কথা ভাবার কোনও কারণ নেই যে সন্ত্রাসের শক্তি কমে গেল। ওসামা অত্যন্ত অসুস্থ ছিল এবং হয়তো প্রকৃতির নিয়মেই শীঘ্র তার জীবনাবসান হত। সুতরাং এই ভাবে হত্যা করার জন্য সন্ত্রাস আরও বাড়বে এবং তা হবে প্রতিহিংসামূলক। বিশ্বে শান্তি আনতে হলে তা আনতে হবে শিক্ষা, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, সমবন্টনের মধ্য দিয়ে। ওসামা নামক একটি ব্যক্তির হত্যা বৃহৎ সন্ত্রাসের সূচনা মাত্র বলেই মনে হয়।
কুশল প্রামাণিক। বাগুইহাটি, কলকাতা-৫৯
|
|
l ওসামার মৃত্যুর পর সন্ত্রাসের শক্তি ভিন্নতর রূপে বাড়বে তার কারণ লাদেন নন, কারণ আমেরিকা। ইতিহাস জানে, হিংসা দিয়ে হিংসাকে প্রতিহত করা যায় না, কিন্তু আমেরিকান শাসকদের আকাশচুম্বী ঔদ্ধত্য বার বার সে কাজ করে চলেছে। এই ভাবে চলতে থাকলে এই গ্রহের অস্তিত্বই বিপন্নতার দোরগোড়ায় গিয়ে দাঁড়াবে।
মৌসুমী ভট্টাচার্য। জলপাইগুড়ি
l হিংসাকে প্রতিহিংসা দিয়ে সাময়িক ভাবে দমন করা গেলেও নতুন প্রতিশোধের স্পৃহা বহু কালের জন্য বহু গুণ শক্তি নিয়ে জীবিত থাকে। লাদেনকে মেরে আমেরিকা সন্ত্রাসবাদীদের জেহাদ আরও বাড়িয়ে দিল। ফলে সন্ত্রাসের শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।
প্রীতিময় রায় বর্মন। কোন্নগর, হুগলি
l সন্ত্রাস থেমে থাকেনি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়েছে। কারণ সন্ত্রাস তৈরির উৎসকে কখনওই প্রতিহত করা যায়নি। সন্ত্রাস চরম শিখরে পৌঁছালে তাকে নির্মূল করতে যতখানি নিরীহ রক্ত ঝরে, তার প্রতিশোধ স্পৃহা থেকেই জন্ম নেয় আর একটি সঙ্ঘবদ্ধ বিধ্বংসী সন্ত্রাস। যে ভাবে আফগানিস্থান, ইরাকে রক্ত ঝরল, যে ভাবে ওসামার মৃত্যু ঘটল, তাতে যে আর একটি হিংস্র কট্টরপন্থী বিধ্বংসী লাদেনের জন্ম হবে না, তা কে বলতে পারে? সন্ত্রাস জন্ম নিলে তার আক্রোশ গিয়ে পড়ে রাষ্ট্রের ওপর, রক্ত ঝরে নিরপরাধ আমজনতার। লাদেনের মৃত্যু তাই আরও বেশি সংঘবদ্ধ ও হিংস্র করে তুলবে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে, জন্ম দেবে আর একটি উন্নততর নির্মম ‘আল কায়দা’র।
দেবাশিস রায়। বারাসত, কলকাতা-১২৪ |
|
|
|
বিপক্ষে |
এই শূন্যতা অন্যদের দমিয়ে দেবে |
lওসামা বিন মহম্মদ বিন আওয়াদ বিন লাদেন আমেরিকার অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভাঙতে গিয়ে হাজার হাজার নিরীহ নরনারীর রক্তপায়ী রক্তবীজতুল্য ভয়ঙ্কর দানবে পরিণত হয়েছিলেন। তাঁরই প্রেরণায় মহম্মদ আটার মতো আধুনিক মনস্ক, পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বৈমানিকও ধর্মান্ধতার কানাগলিতে প্রবেশ করেছিলেন। অ্যাবটাবাদ-এর বাড়ি থেকে যত হার্ড ডিস্ক, মেল পাওয়া গেছে, তার থেকে আল-কায়দাকে অবলম্বন করে লস্কর ই-তইবা, জইশ ই-মহম্মদ সহ অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীর অনেক সূত্রই ফাঁস হতে পারে। ২০০৪ সালে তালিবান নেতা নায়িক মহম্মদ ওয়াজির কিংবা ২০০৯ সালে বায়াতুল্লা মাসুদের মৃত্যু যেমন তালিবানদের সাময়িক ভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছিল, ওসামার মৃত্যু তেমনই শুধু আল-কায়দা বা তালিবান নয়, অন্য সন্ত্রাসবাদীদেরও দমিয়ে দিতে বাধ্য করবে। ডা. আয়মান আল জাওয়াহিরির পরিচালনায় চালিত হবে আল কায়দার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা। কিন্তু ওবামা প্রশাসন তাঁকে সুখে রাজত্ব চালাতে দেবে না।
পীযুষ কান্তি সরকার। নরেন্দ্রপুর, কলকাতা-১০৩
l পৃথিবীতে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্ম হয়েছিল আজ থেকে প্রায় দেড়শো বছর আগে ইংল্যান্ডে। এটি তৈরি করেছিল শিল্প-বিপ্লব থেকে সৃষ্ট বৃহৎ শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা। ক্রমে এই ব্যবস্থা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। সুতরাং আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সব সময়েই বৃহৎ শিল্পপতি এবং বৃহৎ ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে এবং নির্দেশিত পথে তাদের স্বার্থ রক্ষার্থেই চালিত হবে। আজকের বিশ্বে শিল্প এবং ব্যবসা বিশ্বায়িত। কোনও শক্তি সেই স্বার্থে আঘাত করার চেষ্টা করলে কোনও রাষ্ট্রব্যবস্থা তাকে সহ্য করবে না। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত নৃশংস ভাবে ওসামাকে হত্যা করেছে। এতে আক্রোশ বাড়লেও সন্ত্রাসবাদীরা অবশ্যই উপলব্ধি করবে যে, সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন ভাবে আঘাত করলেও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করা যাবে না। উল্টে পাল্টা আঘাতে তারা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই আমার মতে, ওসামার মৃত্যু সন্ত্রাসের শক্তি কমাতেই সাহায্য করবে।
পৃথ্বীশকুমার সানা। উষা পার্ক, কলকাতা-৮৪
|
|
l সন্ত্রাসবাদী ওসামা ভয়ঙ্কর, নিষ্ঠুর। কিন্তু মানুষ ওসামা তা নয়। আর পাঁচ জন স্নেহময় পিতার মতো তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর সন্তানরা যেন আল কায়দায় যোগ না দেয়। হয়তো তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সন্ত্রাসের পথ ঠিক নয়। অর্জুনের চক্রব্যূহের মতো এই পথেও এক বার এলে আর বের হওয়া যায় না। ওসামার শোচনীয় পরিণতি দেখে সন্ত্রাসবাদীরা বুঝেছে কোনও জায়গা তাদের পক্ষে নিরাপদ নয়। কারণ, ওসামা আশ্রয় নিয়েছিলেন সন্ত্রাসবাদীদের সবচেয়ে সুরক্ষিত আশ্রয়, পাকিস্তানে। তাই, স্বাভাবিক ভাবেই ওসামার মৃত্যু সন্ত্রাসের শক্তিতে একটা বড় আঘাত।
সাগরিকা দেব ভৌমিক। কলকাতা-৪২
l লাদেনের মৃত্যু ঐতিহাসিক ঘটনা। সন্ত্রাসের মূলকে উৎপাটিত করা গেছে। সন্ত্রাসের মূল পান্ডাকে সরিয়ে দেওয়াতে পৃথিবীতে শান্তি আসবে এটাই আশা করা যায়। আগাছার মতো যারা থাকল, তারা তেমন শক্তি ও সাহস পাবে না। মূল গাছকে কাটলে দেখা যায়, তার গোড়ায় আগাছার মতো সেই গাছেরই চারা জন্মায়। সেগুলো মোটেই শক্তিশালী হয় না।
সুবল মজুমদার। গড়িয়া, কলকাতা-৮৪ |
|
|
|
জুলাই মাসের বিতর্ক |
মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ আরও সংযত হওয়া উচিত |
আপনার চিঠি পক্ষে না বিপক্ষে, তা স্পষ্ট উল্লেখ করুন।
চিঠি পাঠান ২৫ জুনের মধ্যে এই ঠিকানায়
জুলাই মাসের বিতর্ক,
সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|