স্কুলের গতানুগতিক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু করে দেওয়া যেতে পারে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাও। তাতে এক দিকে যেমন আলাদা করে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হওয়ার জন্য পড়ুয়াদের অন্য কোনও সংস্থায় ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় না। তেমনই অন্য দিকে, স্থানীয় প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে পড়ুয়ারা কারিগরি খুঁটিনাটিতে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরির আগে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে যোজনা কমিশনের আলোচনাচক্রে ‘নাগরিক সমাজের প্রস্তাব’ সংক্রান্ত কর্মশালায় আজ এমনই মতামত দিলেন পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন-পরিকল্পনা মন্ত্রী মনীশ গুপ্ত। এখানেই শেষ নয়, শিক্ষাক্ষেত্রের পাশাপাশি সরকারের কাজের বিকেন্দ্রীকরণের প্রশ্নেও মনীশবাবুর প্রস্তাব, “পঞ্চায়েত বা পুরসভা স্তরে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় প্রকল্প যেমন চলছে চলুক। তার পাশাপাশি রাজ্য সরকারগুলি এই সংস্থাগুলিকে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করতে পারে। যার মাধ্যমে স্থানীয় পঞ্চায়েত বা পুরসভা একেবারে তাদের নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিতে পারে।”
এ ভাবেই কী তবে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থাকে আরও বিকেন্দ্রীকরণের পথে নিয়ে যেতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার? এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মনীশবাবু এড়িয়ে যান। তাঁর কথায়, “আলোচনাচক্রে আমি আমার মতামত দিয়েছি। তবে আমাদের রাজ্যে সব রকম সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা করছি। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে আমাদের চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরি হয়ে যাবে।” পাশাপাশি, রাজ্যের উন্নয়নের প্রশ্নে নাগরিক সমাজের ভূমিকা যে ক্রমশই বাড়ছে, তা স্বীকার করে নিয়ে মনীশ গুপ্ত বলেন, “বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সাফল্য-বিচার করতে এবং নজরদারি চালাতে জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি সরকার নাগরিক সমাজকেও ব্যবহার করতে পারে।”
নাগরিক সমাজ ছাড়াও আজ পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যের শিল্প এবং বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিল যোজনা কমিশন। যদিও কোনও আলোচনাতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কোনও প্রস্তাব পেশ করা হয়নি।
রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়, “নতুন সরকার সবে ক্ষমতায় এসেছে। তাই আমরা এখন ‘শুনব বেশি বলব কম’ নীতি নিয়ে চলছি। পুরো বিষয়টি আগে আমরা বোঝার চেষ্টা করছি। তার পরে তো চূড়ান্ত প্রস্তাব দেওয়ার প্রশ্ন।”
এ প্রসঙ্গে ওই কর্তার আরও দাবি, “সেই কারণেই ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর প্রতিনিধি-মন্ত্রীরা যখন কালই চলে গিয়েছেন তখন আমাদের মন্ত্রী দু’দিন অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে সব আলোচনায়
অংশ নিচ্ছেন।”
|