অনুপ্রবেশ চলছেই, কবুল বিদায়ী বিএসএফ কর্তার
বসর গ্রহণের আগের দিন উত্তর-পূর্বাঞ্চল সীমান্তে কাজ করে যাওয়া বিএসএফ কর্তা কবুল করলেন, বরাক উপত্যকা ও মিজোরাম দিয়ে এখনও বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় অনুপ্রবেশের হার কিছুটা কমলেও একা বিএসএফের পক্ষে তা পুরোপুরি আটকানো খুবই কঠিন। এ কাজে স্থানীয় পুলিশ ও বাসিন্দাদেরও সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন বলে অভিমত বিদায়ী এই বিএসএফ আইজি-র।
বিএসএফ-এর কাছাড়-মিজোরাম সীমান্তের ইন্সপেক্টর জেনারেল সঞ্জয় সিংহ আজই চাকরি থেকে অবসর নিলেন। তার আগে গত কাল তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিন ডিআইজি ওয়াজিদ আলি, আর কে থাপা এবং ইউসি হাজরিকা। আইজি সঞ্জয় সিংহ অবসর নেওয়ায় ওই পদের দায়িত্ব অতঃপর পালন করবেন জে সি পাণ্ডে। তিনি মিজোরাম সেক্টরের ডিআইজি থেকে ইন্সপেক্টর জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছেন। পাণ্ডে আগামী ৮ জুন নতুন পদের দায়িত্ব নেবেন।
বিদায়ী বিএসএফ আইজি সঞ্জয় সিংহ।

বিদায়ী আইজি সিংহ কাল খোলাখুলি ভাবেই জানান, গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই অনুপ্রবেশ একটা কঠিন সমস্যা। আর শুধুমাত্র বিএসএফের নজরদারির উপরে ভরসা করে এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, “অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে কৌশল বদলের সময় এসেছে। এখন যা অবস্থা, বিএসএফ-এর চোখকে ফাঁকি দিতে পারলেই আর ভয়ের কিছু নেই। তাই শুধু নিয়মমাফিক বিএসএফের চেকিং নয়, অনুপ্রবেশকারীকে শণাক্ত করতে আরও দুই-তিন দফায় ব্যবস্থা রাখা দরকার।” সিংহের অভিমত, সে দায়িত্ব স্থানীয় পুলিশ পালন করতে পারে। পাশাপাশি, স্থানীয় গ্রামবাসীদেরও সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুপ্রবেশ বন্ধ না হওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশ এবং গ্রামবাসীদেরও পরোক্ষে দায়ী করেন বিদায়ী এই বিএসএফ কর্তা। বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে এনে সিংহ বলেন, “ওই দেশে স্থানীয় বাসিন্দারাই অনুপ্রবেশকারীদের ধরিয়ে দেন। কিন্তু এ দেশে চিত্রটা একেবারেই উল্টো। গ্রামবাসীরাই অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাকারবারে মদত দেন।” সিংহের অভিযোগ, স্থানীয় কিছু লোকের মদতেই সীমাম্ত পেরিয়ে এ দেশে পাচার করা হচ্ছে রাশি রাশি জাল নোট। জাল প্রায় চার লক্ষ টাকার জাল নোট ধরা পড়েছে বলে জানান তিনি।
বিএসএফের বিদায়ী আইজি সঞ্জয় সিংহ আরও জানান, কাঁটাতারের বেড়ার দৌলতে অনুপ্রবেশ কিছুটা রোধ করা গিয়েছে। কিন্তু কাঁটাতারের বেড়া সব জায়গায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ কোথাও ঘন জঙ্গল বা দুর্গম পাহাড়, কোথাও আবার নদী বরাবর সীমান্ত। এ ছাড়া যে সব এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া ও সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে, তা-ও চলছে বড় ঢিমে তালে। নদীর পাড় বাঁধানোর ব্যাপারেও তিনি রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তাঁর অভিমত, নদীর পাড় যত ভাঙবে, সীমান্ত নিয়ে সঙ্কটও তত জটিল হবে।

Previous Story Desh Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.