বর-সহ মৃত ২৮
সেতু ভেঙে বরযাত্রী বোঝাই বাস খালে
কাঠের সেতু ভেঙে বরযাত্রী বোঝাই বাস একটি খালে পড়ে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাত থেকে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে বর-সহ মৃতদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জখম যাত্রীর সংখ্যা ১০। গত কাল রাতে, অসমের কামরূপ জেলার হাজো-নলবাড়ির পথে, চারাবাড়ি এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে খবর দেওয়া হলেও রাতে উদ্ধারকার্য চালানোর মতো সরঞ্জাম না থাকায় তারা আসেনি বলে অভিযোগ। ফলে রাতভর জলের তলায়, বাসের ভিতরে আটকে থেকেই যাত্রীদের মৃত্যু হয়। এই একই সেতু ভেঙে এর আগে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। তবে আজকের ঘটনার পরে, মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ তড়িঘড়ি সেতুটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সরকারের তরফে নিহতদের নিকটাত্মীয়কে ১ লক্ষ টাকা ও জখমদের ৫০ হাজার টাকা সাহায্য দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
বাস দুর্ঘটনায় মৃতদেহের সারি। কামরূপ জেলার চারাবাড়ি এলাকায়। মঙ্গলবার। পিটিআই

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গুয়াহাটির লখরা এলাকা থেকে বর ও বরযাত্রী নিয়ে, পাঠশালায় কনের বাড়ি যাচ্ছিল বাসটি। বেতকুচির বাসিন্দা নবকুমার শর্মার সঙ্গে টিহুর গীতুমণি দেবীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। গুয়াহাটির সেউকুচি থেকে বরযাত্রীদের সঙ্গেই বাসে রওনা হন বর নবকুমার। তাঁর জন্য পৃথক গাড়ির ব্যবস্থা করা হলেও তিনি ঠিক করেন সকলের সঙ্গে বাসেই যাবেন। বাসে মোট ৩৮ জন যাত্রী ছিলেন।
হাজো-নলবাড়ির পথে, চরবাড়ি কালী মন্দিরের কাছে খাল পার হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি খালে পড়ে। তখন রাত প্রায় ১১টা। সেতুর কাঠের রেলিং ভেঙে খালে পড়ে বাসটি পুরোপুরি জলে ডুবে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জলে নেমে ৬ জনকে জীবন্ত উদ্ধার করেন। তাঁদের নলবাড়ি সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়। জীবিত বাসযাত্রীরা জানান, বাসে ৪৩ থেকে ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন। কিন্তু জল গভীর থাকায়, ভিতরে আটকে থাকা আর কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা রাতভর খালের জলে, বাসের ভিতরে আটকে থাকা মৃতদেহগুলি উদ্ধারে হাত লাগান। ১৭টি দেহ তাঁরাই উদ্ধার করেন। সকালে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর নৌকা ও ডুবুরিরা আসে। ক্রেন দিয়ে বাসটি তোলা হয়। আরও ১১টি মৃতদেহ তুলে আনেন ডুবুরিরা। বর নবকুমার শর্মা (৩২) ছাড়াও তাঁর বাবা বীরেন শর্মা, পিসি অনিমা দেবী (৫৫), বোন জুমি দেবী (২৭), ভগ্নীপতি গোপাল শর্মা (৩৬), আত্মীয় গীতাঞ্জলি দেবী ও তাঁর ৪ বছরের সন্তান এবং বাকি বন্ধু ও আত্মীয়দের দেহ গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের পরে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

Previous Story Desh Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.