হিডকো
ডিসেম্বর থেকে বরাদ্দ করা জমি বণ্টন স্থগিত

নিউ টাউন-রাজারহাটে গত বছরের শেষ দিক থেকে যত জমি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সব স্থগিত হয়ে গেল। মঙ্গলবার হিডকোর দফতরে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ দিনের বৈঠকে ভাঙড়-রাজারহাট এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ব্রাডা) ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
নিউ টাউনে হিডকোর প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তির নামে গত বছর ১ ডিসেম্বর থেকে যত জমি বরাদ্দ করা হয়েছে, আগামী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত সব বিলি বণ্টন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয় এই বৈঠকে। একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজারহাটের ক্ষেত্রেও। বৈঠকের পর আবাসনমন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায় এ কথা জানিয়ে বলেন, “১ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছর ১ মার্চ বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে পর্যন্ত নিউ টাউনে যত জমি বিলি বণ্টন বা বরাদ্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হিডকো কর্তৃপক্ষ, সব স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।” এই রকম জমি ও প্লটের সংখ্যা প্রায় ৬০০ হবে বলে তিনি জানান।
অর্থাৎ, আবাসন পর্ষদের সঙ্গে যৌথ ও সহায়ক ক্ষেত্রের যে সব আবাসন সংস্থাকে জানুয়ারি ও তার পরে বহু একর জমি বরাদ্দ করা হয়, এ দিনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সেগুলোও অথৈ জলে পড়ল। প্রসঙ্গত, এই সব সংস্থার মধ্যে কয়েকটিকে আবাসন পর্ষদের নিয়ম ভেঙেও জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় হিডকো, এমন অভিযোগ উঠেছিল।
এ দিন সল্টলেকে হিডকোর সদর দফতরে আয়োজিত এই বৈঠকে আবাসনমন্ত্রী শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায় তো ছিলেনই, তার সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবাসনমন্ত্রীর আমন্ত্রণে পার্থবাবু আসেন। পরে শ্যামাপদবাবু জানান, “পার্থদা নিউ টাউন ও রাজারহাটে জমি নিয়ে জুয়াচুরির বিরুদ্ধে দিদির আন্দোলনে প্রথম থেকে ছিলেন। উনি বিষয়টি সম্যক জানেন বলে এই বৈঠকে আমি ওঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।”
নিউ টাউন তো বটেই, ব্রাডা-র এলাকা রাজারহাট নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। পরে আবাসনমন্ত্রী বলেন, “ব্রাডা-র কাজকর্মের রিপোর্ট বৈঠকে নিয়ে আসতে বলেছিলাম। সে সব দেখে ব্রাডা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ ওই সংস্থা কার্যত কোনও কাজই করতে পারেনি। খামোকা তাকে জিইয়ে রেখে লাভ নেই।” এর বদলে এই সংস্থাকে “আবাসন বা নগরোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যায় কি না দেখা হচ্ছে” বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “নিউ টাউন ও রাজারহাটে কোথায় কাকে কোন জমি অ্যালট করা হয়েছে, তার রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। এই রিপোর্ট চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে। তার পর আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রিপোর্ট জমা দেব। তার পর তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই ভাবে কাজ হবে।”
নিউ টাউনে জমি বণ্টন আটকে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে হিডকোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেব কটাক্ষ করে বলেন, “তাও তো ডিসেম্বর থেকে জমি বিলি বন্ধ করেছে। দয়া করেছে। ভাগ্যিস হিডকোর জন্মলগ্ন থেকে করেনি। তা হলে সব জমিই হয়তো চাষিদের ফেরত দেওয়া যেত, ঠিক যেমনটি মমতা চান।”
অন্য দিকে, ব্রাডা ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে তার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সিপিএমের রবীন মণ্ডলকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “হিডকোয় আজ কী সিদ্ধান্ত হয়েছে আমার জানা নেই। তবে ওই ভাবে কোনও কমিটি ভাঙা যায় না।” ব্রাডা এতদিন কোনও কাজ করেনি, এই অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “কাজের ফিরিস্তি যেখানে যখন দেওয়ার প্রয়োজন, সেখানে দেব। এখন দেব না। কিছু বলবও না।”

Previous Story Calcutta Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.