নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা রুখতে কড়া আইন আনতে চাইছে রাজ্য। তাতে অভিযুক্তের জেল-জরিমানা দুই-ই হতে পারে।
বুধবার রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নতুন আইন তৈরি করে আইনমন্ত্রীকে দেখিয়ে মার্চ থেকেই তা বলবৎ করার পরিকল্পনা রয়েছে। নচেৎ বেআইনি ভাবে বালি তোলা বন্ধ করা সম্ভব নয়।” রাজ্যের সেচকর্তারা জানান, গত বছর হুগলির চন্দননগরে গিয়ে গঙ্গা থেকে বালি তোলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সেচমন্ত্রী। পরে মুখ্যমন্ত্রীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। বালি তোলার বিষয়টি এত দিন শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের অধীন খনি ও খনিজ বিভাগ দেখত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তা সেচ দফতরের হাতে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সেচমন্ত্রী জানান, বেআইনি বালি খাদানের জন্য রাজ্যের ১১৭টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে বর্ধমান, বীরভূম হাওড়া ও হুগলিতেই বেশি চুরি হচ্ছে। সেচকর্তাদের দাবি, নজরদারি বাড়িয়েও বালি তোলা বন্ধ করা যাচ্ছে না। নতুন আইনে জেল ও জরিমানা চালু হলে তবেই ভয় তৈরি হবে। মন্ত্রী এ দিন বর্ধমানে বলেন, “আইন হলে মনিটারিং কমিটি আরও ভাল কাজ করতে পারবে।”
এ দিন বর্ধমানের সাধনপুরে সেচ দফতরের পশ্চিমাঞ্চলের মুখ্য বাস্তুকারের কার্যালয়ের শিলান্যাস করেন মন্ত্রী। শিলিগুড়ি এবং মালদহেও দু’টি কার্যালয় হয়েছে। হাওড়া-হুগলি মিলিয়ে একটি এবং দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে একটি কার্যালয় তৈরির পরিকল্পনা আছে।
বর্ধমানে ভাগীরথী ভাঙন রোধ প্রকল্পের সূচনা করে সেচমন্ত্রী জানান, ওই জেলার ১০টি ব্লকে সেচখাল সংস্কার ও অন্য কাজের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ১৮টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। সেচখাল সংস্কারের ফলে নতুন করে মোট ২৩ হাজার একর জমি সেচসেবিত হবে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গে এক লক্ষ দশ হাজার এবং জঙ্গলমহলে এক লক্ষ চৌত্রিশ হাজার একর জমি সেচসেবিত করা হয়েছে। বাঁকুড়ায় ১৫ হাজার একর জমি নিয়েও কাজ শুরু হয়েছে।
সেচমন্ত্রী জানান, রাজ্য জুড়ে ৯৫টি সেতু তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এর মধ্যে বর্ধমানের গলসি ও মেমারিতে ডিভিসি-র সেচখালের উপরে ৭টি সেতু তৈরির কথা। অজয় বা দামোদরের মতো নদ সংস্কারের জন্য সমীক্ষা শুরু হয়েছে। ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁকা নদীর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য কেন্দ্রের কাছে ৮০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। সেই কাজ হলে মেমারি ১ ও ২, গলসি ১ ও ২, বর্ধমান ১ ও ২ ব্লকের বেশ কিছু জমি সেচসেবিত হবে। |