|
|
|
|
অন্ধ্রে ভরসা চিরঞ্জীবী, তেলঙ্গানায় আশা রাও
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
২৬ ফেব্রুয়ারি |
কলভাকুন্তলা চন্দ্রশেখর রাও এখনও ঝেড়ে কাশেননি। কিন্তু সীমান্ধ্রের কংগ্রেস মন্ত্রীদের নিয়ে আজ সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকের পর দিগ্বিজয় সিংহ দাবি করলেন, “তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতিকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন চন্দ্রশেখর। কংগ্রেসের সঙ্গে টিআরএস-কে মিশিয়ে দেওয়ার সমীকরণ নিয়ে এখন উভয় শিবিরে আলোচনা চলছে।”
তেলঙ্গানায় এই রাজনৈতিক সম্ভাবনার পাশাপাশি কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন এ-ও ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে, অন্ধ্রপ্রদেশে এ বার তেলুগু অভিনেতা চিরঞ্জীবীকে মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরে ভোটে যাবেন তাঁরা।
তবে আগে তেলঙ্গানার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে তৎপর কংগ্রেস। সে দিক থেকে দিগ্বিজয়ের দাবি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে তিনি অন্ধ্র ও তেলঙ্গানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। তা ছাড়া চন্দ্রশেখরের সঙ্গে দর কষাকষির প্রক্রিয়ায় তিনিও ভাল মতোই রয়েছেন। যদিও দিগ্বিজয়ের দাবি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, আজ চন্দ্রশেখর-পুত্র কে টি রামচন্দ্র রাও বলেন, “উনি কীসের ভিত্তিতে বলছেন জানি। এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।”
রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতে, এ-ও হতে পারে টিআরএস-কে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য দিগ্বিজয়রা এখন চন্দ্রশেখরের ওপর চাপ তৈরি করছেন। কারণ, অতীতে চন্দ্রশেখর প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন, কংগ্রেস তেলঙ্গানা গঠনে সাহায্য করলে তিনি তাঁর দলকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশিয়ে দেবেন। আজ সেই প্রসঙ্গও তোলেন দিগ্বিজয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আশা করি চন্দ্রশেখর তাঁর কথা রাখবেন। তেলঙ্গানা গঠন হয়ে গিয়েছে। এ বার আর পৃথক দল রাখার অর্থ হয় না।”
কংগ্রেস সূত্র বলছে, বস্তুত গত কয়েক দিন ধরে মিশন-অন্ধ্র শুরু করেছেন সনিয়া গাঁধী। চন্দ্রশেখরের সঙ্গে সমঝোতার পাশাপাশি অন্ধ্রের ক্ষত মেরামতও করতে চাইছেন তিনি। গত দু’টি লোকসভা ভোটে দক্ষিণের এই রাজ্য থেকে কংগ্রেস যথাক্রমে ২৯টি এবং ৩২টি আসন পেয়েছিল। গত ভোটে ১১টি আসন এসেছিল তেলঙ্গানা অঞ্চল থেকে বাকি ২১টি সীমান্ধ্র থেকে। কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, তেলঙ্গানা গঠনের পর চন্দ্রশেখরের সঙ্গে সমঝোতা করে বর্তমান ১১টি আসন তাঁরা ধরে রাখতে পারবেন। আর কংগ্রেসের সঙ্গে টিআরএস মিশে গেলে ১৭টি আসনের মধ্যে ১৫টি পাওয়াও অসম্ভব নয়।
কিন্তু অন্ধ্রপ্রদেশের কী হবে? গত কাল সন্ধেয় অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কেন্দ্রের ৬ জন মন্ত্রীকে নিয়ে বৈঠক করেন দিগ্বিজয়। আজ সকালে তাঁদের নিয়েই তিনি সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে যান। সূত্রের খবর, জনপ্রিয় তেলুগু অভিনেতা চিরঞ্জীবীকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী করে ভোটে যেতে পারে কংগ্রেস। অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা লোকসভার সঙ্গেই। তা না হলে হয়তো বিধানসভা ভোটের আগে এখনই মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়া হতে পারে চিরঞ্জীবীকে।
প্রশ্ন উঠতে পারে হঠাৎ চিরঞ্জীবী কেন? জবাবে দশ জনপথের ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেস নেতা আজ বলেন, “চিরঞ্জীবী যখন তাঁর প্রজারাজ্যম পার্টির বিধায়কদের নিয়ে কংগ্রেসে মিশে গিয়েছিলেন, তখনই এই মর্মে তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।” গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে চিরঞ্জীবীর দল ১৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। তা ছাড়া উপকূল অন্ধ্রপ্রদেশের কাপু সম্প্রদায়ের মধ্যে চিরঞ্জীবীর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ফলে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরলে জগন্মোহন রেড্ডির যাত্রাপথ আর মসৃণ থাকবে না।
রাজ্য ভাগের ফলে নিজেদের নিবার্চনী ভবিষ্যৎ কী হবে এই নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন অন্ধ্র থেকে আসা কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। দলীয় সূত্রের খবর, সনিয়া আজ তাঁদের জানিয়েছেন, তিনি নিজে এবং রাহুল গাঁধী উভয়েই উপকূল অন্ধ্র এবং রায়লসীমা অঞ্চলে প্রচারে যাবেন। অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নের ব্যাপারে আশ্বাস দেবেন তিনি। তা ছাড়া, লোকসভা ভোটের ইস্তাহারেও অন্ধ্রের জন্য বিশেষ ঘোষণা রাখবে দল। |
|
|
|
|
|