সহকর্মীদের হয়ে গত কাল ক্ষমা চেয়েছিল ইউক্রেনের বিশেষ পুলিশ বাহিনী বারকুট। তবু শেষ রক্ষা হল না। রাজধানী কিয়েভে গত কয়েক দিন ধরে চলা সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে অতি কঠোর মনোভাব দেখানোর জন্য এ বার সেই পুলিশ বাহিনী ভেঙেই দিল অর্ন্তবর্তী সরকার।
ইউক্রেনের অস্থায়ী অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আরসেন আভাকভ এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন আজ। কালই ফেসকুকে বারকুট ভেঙে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আভাকভ। অবশ্য বারকুট ভাঙা নিয়েও গত দু’দিন ধরে চাপান-উতোর চলেছে। ইউক্রেনের উপদ্বীপ ক্রিমিয়ার সেভাসতোপোল শহরের নতুন মেয়র আলেক্সেজ চালাই আভাকভের ফেসবুক পোস্টটি দেখে একটি মিছিলে বলে বসেন, “আমার শহরে বারকুট ভাঙার প্রশ্ন নেই। উল্টে বারকুট বাহিনীকে মাইনে দেওয়ার জন্য আলাদা তহবিল গড়া হচ্ছে।” আলেক্সেজ এমনিতেই রাশিয়া-পন্থী বলে পরিচিত। তবে আলেক্সেজের এই মন্তব্যের পর তাঁর মেয়র পদটি সম্পূর্ণ অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ দিকে, উপদ্বীপ ক্রিমিয়া এখন দ্বিতীয় ইউক্রেন হওয়ার দিকে এগোচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল। একটি সূত্রের খবর, গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ তাঁর কিছু অনুগামী নিয়ে আপাতত ক্রিমিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। আর আজই সেভাসতোপোল শহরে রুশপন্থীরা বিক্ষোভ দেখান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনে পাল্টা বিক্ষোভে নামে আর এক দলও। আসলে যে পূর্ব-পশ্চিম দ্বন্দ্বের জন্য ইউক্রেন খণ্ডিত হওয়ার আশঙ্কা, সেই দ্বন্দ্ব ক্রিমিয়াতেও প্রকট। আনুগত্যের প্রশ্নে ইউরোপ আর রাশিয়ার মধ্যে স্পষ্ট দু’টো ভাগ রয়েছে সেখানে। আজ সেভাসতোপোল শহরে যে বিক্ষোভ হয়েছে, সেখানে এক দল ইউক্রেনের পতাকা হাতে “ক্রিমিয়া রাশিয়া নয়” বলে চেঁচিয়েছে। অন্য দলটি রাশিয়ার পতাকা নিয়ে বলেছে, “ক্রিমিয়া আসলে রাশিয়াই।” ফলে ক্রিমিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছে। বিক্ষোভ থেমেছে। তবু প্রশ্ন রয়েছে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়েও। আজই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে মধ্য ও পশ্চিম রাশিয়ায় সেনা তৎপরতা দেখা গিয়েছে। ফলে ইউক্রেনে রুশ সেনা অভিযানের আশঙ্কা আপাতত উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। |