ক্যালেন্ডার বেরোয় বছরের গোড়া দিকে। তার পরে রীতিমতো লিফলেট বিলি করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ধান কিনতে আসরে নামে রাজ্য সরকার। মার্চ মাস চলে এলেও ওই লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছে পৌঁছনো যায়নি। সরকারি সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলায় এখনও পর্যন্ত ধান কেনা হয় ২০ হাজার টন। যার থেকে চাল হয় ১০ হাজার ৪০০ টন। কোচবিহারে ৩৭ হাজার ৫০০ টন ধান কেনার লক্ষ্য মাত্রা রাখা হয়েছিল। তাই লক্ষ্যমাত্রা যে পূরণ হবে না তা বুঝে গিয়েছেন সরকারি অফিসারেরা।
কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার জেলায় তদারকি কমিটি গঠন করা হয়। তার চেয়ারম্যান জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “বাজারে ধানের দাম সরকারের সহায়ক মূল্য থেকে বেশি। স্বাভাবিক কারণে ধান সে ভাবে কেনা যায়নি। তবে কৃষকেরা দাম না পেলে সরকার সে ধান কিনবে।” সরকারি ধান কেনার দায়িত্বে খাদ্য সরবরাহ দফতর। দফতরের জেলা আধিকারিক মানিক সরকার বলেন, “এ বার ধানের দাম না কমায় সে ভাবে আমরা ক্যাম্প করিনি। কয়েক জায়গায় ছোট ছোট ক্যাম্প করা হয়েছে। তা থেকে কিছু ধান কেনা হয়েছে।” কৃষি দফতর সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলায় ২০১২ সালে ২ লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়। ২০১৩ সালে তা ছিল ২ লক্ষ ৯ হাজার টন। এ বারে বৃষ্টি-সহ নানা কারণে ধান উৎপাদন কম হয়েছে। গত বছর ধানের দাম পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন চাষিরা। সেই সময় রাজ্য সরকারের তরফে প্রতিটি বাজার এলাকায় ক্যাম্প করে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হয়। গত বছর প্রায় ৩০ লক্ষ টন ধান সংগ্রহ করে শস্যভাণ্ডার তৈরি করে সরকার।
এ বারে বছরের শুরুতেই খাদ্য সরবরাহ দফতর ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে ধান কিনতে আসরে নামে। মোটা ধানের ক্ষেত্রে সহায়ক মূল্য ধরা হয় প্রতি কুইন্টাল পিছু ১৩১০ টাকা এবং মিহি ধানের ক্ষেত্রে সহায়ক মূল্য ধরা হয় ১৩৪৫ টাকা। বাজারে ধানের দাম প্রতি কুইন্টাল ১৪০০ টাকার উপরে থাকায় কৃষকেরা সরকারের সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রিতে সাড়া দেননি বলে দফতরের আধিকারিকেরা জানান।
পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন কোচবিহারের কদমতলার কৃষক নন্দ বর্মন। তিনি বলেন, “১৪৫০ টাকা দরে কিছুদিন আগে ৩০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করেছি। মহাজনের কাছে এ বারে দাম ভাল থাকায় সরকারের ক্যাম্পে যেতে হয়নি।” খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে খবর, লিফলেট বিলি করে দফতরের তরফে জানানো হয়, বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হবে। খাদ্য দফতরের টোলফ্রি সহ বেনফেড, কনফেড, ইসিএসসি, ন্যাফেড, ন্যাকফ, এনসিসিএফ-এর ফোন নম্বর দেওয়া হয়। বিডিও, ধান ক্রয় কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ধানের দাম চেকে দেওয়া হবে বলে অ্যাকাউন্ট খুলতে বল্য হয়। সহায়কমূল্য বাজারের থেকে কম থাকায় সাড়া মেলেনি। |
