পাড়ার দাদার সঙ্গে সাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে আর ফেরেনি ১০ বছরের ছেলেটি। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার পরে ফোনে মোটা টাকা চেয়ে মুক্তিপণও এসেছিল। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার চার দিনের মধ্যেই পাশের গ্রামের সেচনালায় মিলল সেই বালকেরই মৃতদেহ।
মঙ্গলবার বিকেলে পাত্রসায়রের হবপুকুর গ্রামের ঘটনা। ওই গ্রামের একটি সেচনালায় এ দিন রানা বাগদি (১০) নামে ওই বালকের দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে। গত শনিবার থেকে বাঁকিশোল গ্রামের ওই বালক নিখোঁজ ছিল। রাতে রানার বাবার অভিযোগের ভিতিত্তে পুলিশ বাঁকিশোল গ্রামের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ওই বালককে সম্ভবত শ্বাসরোধ করে কয়েক দিন আগেই খুন করা হয়েছে। তার পরে দেহটি জঙ্গললাগোয়া ওই নালায় ফেলে দেওয়া হয়। মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠাবে।
শনিবার দুপুরে ধৃত তরুণের সাইকেলে চেপে রানা ঘুরতে বেরিয়েছিল। পুলিশের কাছে তেমনটাই দাবি করেছেন রানার বাবা হিরালাল বাগদি। পেশায় কৃষিজীবী হিরালালবাবু রবিবার পুলিশের কাছে রানার নামে একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেছিলেন। তিনি পুলিশকে সে দিন জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে ধৃত তরুণের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে আর ফেরেনি। ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হিরালালবাবুকে জানিয়েছিল, রানাকে সে বাড়ির দরজার সামনে নামিয়ে দিয়েছিল। আর কিছু সে জানে না।
রানার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার নিখোঁজ ডায়েরি করার পরে হিরালালবাবুর কাছে ফোন আসে। রানাকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে ওই ফোনে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয়। সে দিনই স্থানীয় নারাঙ্গি গ্রামের কাছে টাকা ভর্তি ব্যাগ পৌঁছে দিতে বলা হয়। কিন্তু, এত কম সময়ের মধ্যে অত টাকা জোগাড় করতে পারেননি হিরালালবাবু। বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানান। অপরহণকারীদের নাম করে ফোন আসা ওই মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে সন্ধান শুরু করে পুলিশ। যে ছেলেটির সঙ্গে রানা ঘুরতে বেরিয়েছিল, এই ক’দিনে তার আচরণও সন্দেহজনক লেগেছিল রানার বাড়ির লোকেদের কাছে। সে কথাও তাঁরা পুলিশকে জানান।
এ দিন দেহটি উদ্ধার হওয়ার পরে রানার পরিবারে শোক নেমে আসে। পুলিশ এসে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। রাতে পুলিশ দাবি করে, ধৃত ছাত্র তাদের কাছে রানাকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। খুনের কারণ জানতে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন। এ দিন অনেক চেষ্টা করেও ধৃত ছাত্রটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। |