সরু ইটের রাস্তায় গাড়ি ঢোকানোটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। টাল সামালাতে না পেরে গাড়ি উল্টে রাস্তার ধারে পুকুরে পড়ে গিয়েই এই দুর্ঘটনা। বিয়ের নিমন্ত্রণ সেরে ফেরার পথে সোমবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের শাহাজাদাপুর গ্রামে পুকুরে গাড়ি উল্টে মহিলা ও শিশু-সহ চারজনের মৃত্যুতে এমনটাই মনে করছেন গ্রামের লোকজন। |
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শাহাজাদাপুর গ্রামের দিলীপ নস্করের ছেলে জগদীশ নস্করের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল পাশের নিমপীঠ গ্রামের বীথি হালদারের সঙ্গে। বরযাত্রীদের জন্য একটি সুমো ভাড়া করেছিলেন দিলীপবাবু। দু’টি বাড়ির মদ্যে দূরত্ব তিন কিলোমিটারের মতো। বিয়ের লগ্ন ছিল রাত দেড়টা নাগাদ। তাই বিয়ের আগেই নিমন্ত্রিতদের খাওয়ানো শুরু হয়ে যায়। রাত পৌনে বারোটা নাগাদ বরযাত্রীরা খাওয়া শেষ করে ওই সুমোয় করে আটজন শাহাজাদাপুর গ্রামে ফিরছিলেন। গ্রামে সরু ইটের রাস্তা। তবু ওই রাস্তাতেই গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন চালক। কিছুদূর গিয়ে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে উল্টে পড়ে। বিকট আওয়াজে চারপাশের লোকজন ছুটে এসে ডুবন্ত গাড়ি থেকে সকলকেই উদ্ধার করলেও চিকিৎসক জানান, ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন সন্ধ্যা মিদ্দে (৩৫), রাধিকা মিদ্দে (১৫), রিনা পাল (৭) ও রতন নস্কর (৮০)। রতনবাবু জগদীশবাবুর ঠাকুরদা। বাকিরা জগদীশবাবু বাঘাযতীনে যে বাড়িতে ভাড়া থাকেন সেই বাড়ির মালিকের আত্মীয়। মঙ্গলবার দিনভর গোটা বাড়িতেই ছিল শোকের ছায়া। দিলীপবাবু বলেন, “যে অবস্থা তাতে ছেলে-বউমাকে বাড়িতে কি করে আনব? তাই ওঁদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। বউভাতের সমস্ত অনুষ্ঠানও বাতিল করেছি।” |
এ দিকে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, প্রায় ২০ বছর আগে ওই রাস্তা তৈরি হয়েছিল। তার পর থেকে আর কোনও সংস্কার হয়নি। ব্লক প্রশাসনকে ওই রাস্তায় কংক্রিটের বা পিচের করে দেওয়ার জন্য বার বার বলা হলেও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। বেহাল রাস্তার প্রসঙ্গে জয়নগর ২-এর বিডিও কমলেশ মণ্ডল বলেন, “রাতেই ওই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। জলের মধ্যে দম আটকেই চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান। তবে ওই রাস্তা সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ গাড়িটি আটক করেছে। চালককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। |