এত দিন ছিল ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে ট্যাপকল। পানীয় জল নেওয়ার জন্য লাইন পড়ত লম্বা। জল নিয়ে হাতাহাতি, চুলোচুলিও হত মাঝে-মধ্যেই। মুর্শিদাবাদ পুরসভার এই জল-ছবি মিটতে চলেছে অচিরেই। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্পে এলাকার প্রতি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে যাবে দু’বছরের মধ্যে। মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান শম্ভুনাথ ঘোষ বলেন, “সময়সীমা দু’বছর হলেও তার আগেই বাড়িতে পাইপ লাইনের সাহায্যে পানীয় জল পৌঁছে দিতে পারব।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে ট্যাপকলের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করত জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। ১৬টি ওয়ার্ডে সব মিলিয়ে ট্যাপকলের সংখ্যা ছিল ১১০টি। একটি মাত্র জলাধার থাকায় জলের সঙ্কট হত প্রায়শই। লালবাগ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তথা জেলা চেম্বার অফ কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “পানীয় জল সংগ্রহ করতে মোড়ের মাথায় এসে কলের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হত।” লালবাগ এমএমসি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সোমালি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জলপ্রকল্প চালু হলে সব চেয়ে উপকৃত হবে আমার স্কুলের মেয়েরা। পানীয় জল হিসেবে এবং মিড-ডে মিলের রান্নার কাজে টিউবওয়েলের জল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ওই জল আর্সেনিক মুক্ত কিনা সব সময়ে তা জানার সুযোগ লালবাগে নেই। পুরসভা থেকে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা হলে জলবাহিত রোগের আশঙ্কা থাকবে না আর।” ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রকল্প সহায়ক গোলাম মবিন মনে করিয়ে দেন, “বাড়িতে জলের সংযোগ নেওয়ার ব্যাপারে পুরসভার উচিত এখন থেকেই প্রচার শুরু করা।”
কংগ্রেসের কাউন্সিলর বিপ্লব চক্রবর্তী জানান, এই জলপ্রকল্পের জন্য সরকার প্রায় ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। ওই অর্থে তিনটে জলের ট্যাঙ্ক ও একটা মাটির নিচে জলাধার নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে ১৬টি ওয়ার্ডে পাইপ লাইনের কাজ হবে। এর মধ্যে মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
কাল, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ পুরসভা চত্বরে জলপ্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠান হবে। জলপ্রকল্পের পাশাপাশি পৌর-অতিথি আবাসের তিন তলায় নতুন একটি আধুনিক মানের হলঘর নির্মাণের শিলান্যাস হবে কাল। ওই কাজের জন্য রাজ্য সরকার ৩৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। সেই সঙ্গে পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ১০টি হাই-মাস্ট লাইট লাগানো হয়েছে, তারও সূচনা হবে ওই দিন। |
