|
|
|
|
আয়ের ক্ষেত্র বাড়িয়ে স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়নে জোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এক দিকে নিজস্ব তহবিলের আয় বাড়ানো। অন্য দিকে, স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে বিপুল বরাদ্দ করা। এই দুই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বাজেট পেশ হল। ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরের জন্য সব মিলিয়ে ২৫৭ কোটি ৫৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বাজেট পেশ হয়েছে। যেখানে চলতি আর্থিক বছর অর্থাৎ, ২০১৩-’১৪ সালের জন্য ১৭৪ কোটি ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার বাজেট পেশ হয়েছিল।
এ দিন দুপুরে শহিদ ক্ষুদিরাম পরিকল্পনা ভবনে জেলা পরিষদের সাধারণ সভায় খসড়া বাজেট চূড়ান্ত হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরী, জেলা পরিষদের তৃণমূল পরিষদীয় দলনেতা অজিত মাইতি প্রমুখ। ছিলেন বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরাও। সভা শেষে অজিতবাবু বলেন, “আমরা স্বাস্থ্য-গ্রামোন্নয়নের মতো ক্ষেত্রগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। সীমিত ক্ষমতার মধ্যে দাঁড়িয়ে কী ভাবে কী কী কাজ হবে, বাজেটে তাই বলা হয়েছে। আমরা সিপিএমের মতো অবাস্তব প্রতিশ্রুতি দিইনি।” জবাবে জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেত্রী সিপিএমের রীতারানি জানার কটাক্ষ, “প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তব না অবাস্তব, তা আগামী দিনেই জেলার মানুষ বুঝতে পারবেন!” |
|
ক্ষমতায় এসেই তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ নিজস্ব তহবিলের আয় বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছিল। জেলা পরিষদের তৈরি দোকানঘর, ডরমেটরি, সভাকক্ষের ভাড়া বাড়ানো হয়। টেন্ডার ফর্মের ফি বাড়ে। মেলার লাইসেন্স ফি-ও বাড়ানো হয়েছে। সঙ্গে নতুন আয়ের উৎস খোঁজারও সিদ্ধান্ত হয়। জানা গিয়েছে, ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিলে আয় যেখানে ২ কোটি ২২ লক্ষ ১৬ হাজার ১৩৭ টাকা হয়েছিল, ২০১৪- ’১৫ আর্থিক বছরে তা বাড়িয়ে ৪ কোটি ৬৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। জেলা পরিষদের এক তৃণমূল সদস্য বলেন, “পরিস্থিতি দেখে আমরা ইতিমধ্যে গাড়ির অপব্যবহার বন্ধ, আপ্যায়ন খরচে কাটছাঁট, মনোহারি দ্রব্যের উপর ব্যয় নিয়ন্ত্রণের মতো প্রস্তাব অনুমোদন করেছি।” আগামী আর্থিক বছরে মেলার লাইসেন্স ফি বাবদ ৪ লক্ষ টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘর-দোকানঘর, আবাসনের ভাড়া বাবদ ৬৫ লক্ষ টাকা, টেন্ডার ফর্ম বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা, ভেটিং চার্জ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। জেলা পরিষদে মোট ১০টি স্থায়ী সমিতি রয়েছে। সব থেকে বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে পূর্তে। তারপরই স্বাস্থ্য এবং শিশু ও নারী উন্নয়ন। পিছিয়ে পড়া গ্রামের উন্নয়নেও জোর দিয়েছে জেলা পরিষদ। এ ক্ষেত্রে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগে আলাদা ভাবে পিছিয়ে পড়া গ্রামের উন্নয়নে কোনও বরাদ্দ হত না। সংখ্যালঘু উন্নয়নে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে এই খাতে খরচ হয়েছিল ২ কোটি ৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৩৫৬ টাকা। লোধাদের ঘর তৈরিতে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগে বরাদ্দ টাকা অবশ্য এখনও খরচ হয়নি। সে কথা মেনে তৃণমূল পরিষদীয় দলনেতা অজিতবাবু বলেন, “লোধাদের ঘর তৈরির জন্য বরাদ্দ ৫৫ লক্ষ টাকা এখনও খরচ হয়নি বলেই জেনেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
‘আমার ঠিকানা’ এবং ‘অধিকার’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য যথাক্রমে ১০ কোটি এবং ২০ কোটি টাকা বরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হয়েছে। ইন্দিরা আবাস যোজনার ক্ষেত্রে ১০০ কোটি বরাদ্দ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে এ বার ৪ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, “কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষিত করার দিকটির উপরই আমরা বেশি জোর দিয়েছি। এ বারও বিভিন্ন প্রকল্পে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে।” আরআইডিএফ (১৯) থেকে আগামী আর্থিক বছরে ২৫ কোটি টাকা মিলবে বলেই জেলা পরিষদ সূত্রে খবর। এই পরিমান অর্থে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তৃণমূল পরিষদীয় দলনেতা অজিতবাবুর দাবি, “এই বাজেট একেবারে জনমুখী।” |
|
|
|
|
|