|
|
|
|
অ্যান্ড দ্য অস্কার গোজ টু... লিওনার্দো |
বিশ্বজোড়া সিনেপ্রেমীদের আশা কি সোমবার পূর্ণ হতে চলেছে? পুরস্কার হাতে না আসার
কষ্ট মিটবে লিওনার্দো-র? অস্কার দৌড়ে আর কারা এগিয়ে? লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত |
লিওনার্দো দি ক্যাপ্রিও নাকি আজকাল ঘনঘন ইলেকট্রনিক সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন!
কারণ?
৩৯ বছরের জীবনে ইতিমধ্যে অভিনেতা হিসেবে তাঁর চার বার অস্কার মনোনয়ন হয়েছে।
নাম, যশ, এমনকী বান্ধবী এ সবে তো লিওনার্দোর প্রতি ভাগ্যদেবতা বেশ প্রসন্ন।
কিন্তু অস্কার?
নাহ্।
গোল্ডেন গ্লোব আছে। কিন্তু অস্কারের ঝুলি শূন্য। |
|
‘উল্ফ অব ওয়াল স্ট্রিট’য়ে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও |
১৯৯৩-য়ে বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাক্টর বিভাগে লিওনার্দো মনোনীত হয়েছিলেন। ‘হোয়াটস ইটিং গিলবার্টস গ্রেপ?’-য়ের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরস্কারটা পেয়েছিলেন টমি লি জোনস্।
তার পর এক এক করে ‘দ্য অ্যাভিয়েটর’ আর ‘ব্লাড ডায়মন্ড’-য়ের জন্য বেস্ট অ্যাক্টর বিভাগে আবারও মনোনয়ন ছিল। কিন্তু দু’বারই হতাশা। এক বার হারলেন জেমি ফক্স-য়ের ‘রে’ ছবিতে অভিনয়ের কাছে। অন্য বার হারলেন ফরেস্ট হুইটেকারের কাছে। ফরেস্টের অস্কার অভিনীত ছবির নাম ছিল ‘দ্য কিং অব স্কটল্যান্ড’।
কিন্তু এ বছরের অস্কার দৌড়ে ‘টাইটানিক’ খ্যাত লিওনার্দোকে নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। গুগলে লিওনার্দো এখন সব থেকে বেশি ‘সার্চড’ অভিনেতা। মার্টিন স্করসেসের ‘দ্য উল্ফ অব ওয়াল স্ট্রিট’-য়ে লিওকে যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনেকেই বলেছেন ‘দিস ইজ ইট’। জর্ডন বেলফোর্ট-য়ের চরিত্রে লিওনার্দো ফুটিয়ে তুলেছেন অদ্ভুত এক বিপরীতধর্মী অনুভূতির মিশেল। এক দিকে গা ঘিনঘিন করা প্রাচুর্যের মালিক সে। অন্য দিকে আবার অত্যন্ত ভঙ্গুর নষ্ট এক চরিত্র। তবু যেন তাকে দেখে কোথাও একটা করুণা লাগা জন্মায়। আর সেখানেই অভিনেতা লিওনার্দোর সার্থকতা। এরোপ্লেন ‘অরজি’ থেকে শুরু করে স্ত্রীকে ঠকিয়ে অন্য এক লাস্যময়ী নারীকে তার শয্যাসঙ্গিনী হিসেবে বেছে নেওয়া এ সবই তাঁকে করতে দেখা যায় ছবিতে। এমনও দৃশ্য আছে যেখানে দেখানো হয় যে সে শীঘ্রপতনের শিকার হওয়ার পরে শয্যাসঙ্গীকে সন্তুষ্ট করার জন্য নিজেই আবার মিলনের প্রচেষ্টা নিচ্ছে! ছবিতে নগ্নতা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু অশ্লীল আবেদন নেই। বরং রয়েছে এক রুঢ় বাস্তবের ছবি। যৌন দৃশ্যে লিওনার্দোর অভিনয় আবার মনে করিয়ে দেয় ‘টাইটানিক’-য়ে তাঁর সহ-অভিনেত্রী কেট উইন্সলেটের কথা। যিনি ঠিক এ রকমই এক চ্যালেঞ্জিং রোল করেছিলেন ‘দ্য রিডার’ ছবিতে। এক টিনএজারের সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়েছিলেন কেট। নগ্নতাই নয় শুধু। অভিনয়ের জোরে জিতেও নিয়েছিলেন তাঁর প্রথম অস্কার।
কেটের ঝুলিতে অস্কার এসেছিল ২০০৮-য়ে। ২০১৪য় দাঁড়িয়ে লিও কি পারবেন তাঁর ১৯৯৭ সালে অভিনীত ‘টাইটানিক’ ছবির সহ-অভিনেত্রীর রেকর্ড ছুঁতে?
এ বছর ভারত থেকে ফরেন ফিল্ম বিভাগে অস্কারে পাঠানো হয়েছিল জ্ঞান কোরিয়ার গুজরাতি ছবি ‘দ্য গুড রোড’কে। সে ছবি পাঠানো নিয়ে জলঘোলাও হয়েছিল। কেন ‘দ্য লাঞ্চবক্স’য়ের বদলে জ্ঞানের ছবিটা গেল, সে নিয়ে তুমুল বিতর্ক। শেষ পর্যন্ত ‘দ্য গুড রোড’ ভারতের অস্কার দৌড়ে সাফল্য আনতে পারেনি। শেষ পাঁচে নমিনেশনও পায়নি সে ছবি।
কাজের ভিড়ে সব ক’টা অস্কার মনোনীত ছবি জ্ঞানের দেখা হয়নি। তবু বাজি রাখতে হলে, জ্ঞানের ভরসা ম্যাথিউ ম্যাক্কনের ওপরেই। যে ম্যাথিউ এক সময় খালি গায়ে রমকম-য়ে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন, তিনি তাঁর প্রথম অস্কার পেয়ে যেতেও পারেন ‘ডালাস বায়ার্স ক্লাব’য়ের জন্য। ম্যাথিউ ৪০ পাউন্ড ওজন কমিয়েছেন এডস ভিকটিম রন উড্রফ চরিত্রে অভিনয় করতে। উপোস করেছিলেন। হাসপাতালের এক দৃশ্যে তো তাঁর ওজন কমে দাঁড়িয়েছিল মাত্র ১৩৫ পাউন্ডে। তবে ওজন কমানোর জন্য তো আর অস্কার দেওয়া হয় না। “‘ডালাস বায়ার্স ক্লাব’য়ের গল্পটাই অসাধারণ! আর তার সঙ্গে ম্যাথিউয়ের অভিনয়। প্রথম দিকে চরিত্রটা অতটা ভাল লাগে না। কিন্তু আস্তে আস্তে ম্যাথিউ এমন অভিনয় করেন যে সবার এই চরিত্রকে ভাল লাগতে শুরু করে। তবে এটাও বলব যে অন্য সব অভিনেতাও বেশ ভাল করেছেন,” বলছেন জ্ঞান। |
|
|
‘অগস্ট: ওসাঞ্জ
কাউন্টি’তে মেরিল স্ট্রিপ |
‘ব্লু জ্যাসমিন’য়ে
কেট ব্লাঞ্চেট |
|
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক শিবাজি চন্দ্রভূষণ-য়ের একটি প্রজেক্ট কান চলচ্চিত্র উৎসবের লাতেলিয়ের বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিল। শিবাজির মতে যদিও লিওনার্দো খুবই ভাল, তবু অস্কার হয়তো পাবেন ম্যাথিউই। “লিওনার্দো অভিনীত সব ক’টা বায়োপিক আমি দেখেছি। ও নিঃসন্দেহে ভাল। ওকে এই ধরনের চরিত্রে আগেও দেখেছি, তাই নতুন কিছু পাইনি। ম্যাথিউ সেখানে একদম আলাদা। প্রতি সপ্তাহে ‘ট্রু ডিটেকটিভ’ সিরিজে ওকে দেখেছি। তাই ওর প্রতি আরও একটু দুর্বলতা জন্মেছে। মনে হয় ভোটারদেরও তাই হতে পারে,” বলছেন শিবাজি।
‘দ্য লাঞ্চবক্স’ ছবির পরিচালক রীতেশ বাত্রার অবশ্য পছন্দ ‘আমেরিকান হাসল্’ ছবির ঠগবাজের ভূমিকায় ক্রিশ্চিয়ান বেল-কে। ছবির প্রথম দৃশ্যে মাথায় আঠা দিয়ে নকল চুল লাগাতে লাগাতে হেঁটে আসা থেকে শুরু করে মোটা ভুঁড়ি বের করে ক্রিশ্চিয়ানের অভিনয় দেখে অনেকেই বেশ আশ্চর্য। “কী দারুণ অভিনয়। যাকে বলে ‘অর্গ্যানিক পারফর্ম্যান্স’। আমার অবশ্য ‘নেব্রাস্কা’-তে ব্রুশ ডার্ন-য়ের অভিনয়ও চমৎকার লেগেছে। বেশ ‘এনডিয়ারিং পারফর্ম্যান্স’,” বলছেন রীতেশ। ৭৭ বছর বয়সে এসে এক খামখেয়ালি মদ্যপ বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেই ব্রুশ বেস্ট অ্যাক্টর অ্যাওয়ার্ডটা পেয়ে গিয়েছেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে। তাই হঠাৎ যদি তাঁর নামটাই ঘোষণা করা হয় শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে তা হলেও খুব আশ্চর্য হওয়ারও কিছু নেই।
তবে লস এঞ্জেলেস থেকে পরিচালক বেদব্রত পাইন এখনও পর্যন্ত ম্যাথু-কেই এগিয়ে রাখছেন। “ও যে রকম চরিত্রে অভিনয় করে এসেছে, তার থেকে এটা একদম আলাদা।
আমি ওর চরিত্রের কষ্টটা বুঝতে পেরেছিলাম। ওর ভালনারেবিলিটি’টাও। ক্রিশ্চিয়ান বেল নিঃসন্দেহে দারুণ অভিনয় করেছে, তবু ম্যাথু-র অভিনয়টা বেশি মর্মস্পর্শী লেগেছে। আমি অবশ্য এখনও লিওনার্দোর সিনেমাটা দেখিনি।”
কিন্তু এঁদের সব্বাইকে হারিয়ে দিতে পারেন ‘টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেভ’য়ের অভিনেতা চিউইটেল ইজিফর। ১৮৪০-এর পটভূমিতে তৈরি এই ছবিতে চিউইটেল রয়েছেন সলোমন নরথর্পের ভূমিকায়। ইতিমধ্যেই একটা ‘বাফটা’ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে গিয়েছেন এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
ম্যাথু, চিউইটেল-এর কাছে যদি লিওনার্দো হেরে যান তবু ভেঙে পড়ার কোনও কারণ নেই। লিও-র মতো অনেক হলিউড তারকা (যাঁরা অভিনেতা হিসেবেও বেশ খ্যাত) আছেন যাঁদের বহু বার অস্কার নমিনেশন থাকা সত্ত্বেও অস্কার ঝুলিটা ফাঁকাই থেকে গিয়েছে। যেমন ব্র্যাড পিট। ‘কিউরিয়াস কেস অব বেঞ্জামিন বাটন’য়ে কী তুখড় অভিনয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু অস্কার মেলেনি। ‘মানিবল’য়ে অভিনয় করেও মনোনয়ন ছিল। এমনকী বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাক্টর হিসেবেও একটা অস্কার পাননি ব্র্যাড। যদিও তাঁর মনোনয়ন ছিল ‘টুয়েলভ মাংকিজ’ ছবির জন্য।
টম ক্রুজ তিন-তিনবার নিরাশ হয়েছেন। ‘বর্ন অন দ্য ফোর্থ অব জুলাই’ আর ‘জেরি ম্যাগুয়ের’য়ে সেরা অভিনেতার খেতাব পাননি তিনি। ‘আলি’ ছবিতে মনোনয়ন থাকলেও ডেনজেল ওয়াশিংটন হারিয়ে দিয়েছিলেন উইল স্মিথ-কে। ‘ইন দ্য পারস্যুট অব হ্যাপিনেস’ করেও অস্কার জেতা হয়নি উইলের। শুধু এঁরাই নন, এমনকী জনি ডেপ তিনবার (‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান: দ্য কার্স অব দ্য ব্ল্যাক পার্ল’, ‘ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড’ আর ‘সোয়েনি টড: দ্য ডিমন বারবার অব ফ্লিট স্ট্রিট’) সোনার স্ট্যাচুটা বাড়ি নিয়ে যেতে পারেননি। শুধু এঁরা নন। আলফ্রেড হিচকক এবং স্ট্যানলি কিউব্রিক-এর মতো কিংবদন্তি পরিচালকেরাও কোনও দিন অস্কার পাননি!
তবে এ বছর আরও অদ্ভুত সমাপতন ঘটেছে। ‘আমেরিকান হাসল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য যে এমি অ্যাডামস মনোনীত হয়েছেন তিনিও ওই না-পাওয়ার বেদনা নিয়েই পাঁচবার ফিরে গিয়েছেন অ্যাকাডেমি অনুষ্ঠান থেকে। ‘জুনবাগ’, ‘ডাউট’, ‘দ্য ফাইটার’, ‘দ্য মাস্টার’ ছবিতে বেস্ট সাপোর্টিং অ্যাকট্র্রেসের মনোনয়ন ছিল এমি-র। তবে ২০১৪-তে তিনি বিগ লিগে। সেরা অভিনেত্রী হওয়ার জন্য লড়ছেন ‘ব্লু জ্যাসমিন’য়ের কেট ব্লাঞ্চেট, ‘গ্রাভিটি’র স্যান্ড্রা বুলক, ‘ফিলোমেনা’র ডেম জুডি ডেঞ্চ, ‘অগস্ট: ওসাঞ্জ কাউন্টি’র মেরিল স্ট্রিপ-এর সঙ্গে। আর এঁরা সবাই কোনও না কোনও বছর অস্কার পেয়েওছেন। |
|
‘আমেরিকান হাসল’য়ে এমি অ্যাডামস |
এমি-র অভিনয় ভাল লেগেছে রীতেশের। “তবে তার সঙ্গে কেট ব্লাঞ্চেট-ও পছন্দের,” বলছেন তিনি। উডি অ্যালেনের যৌন কেলেঙ্কারির বিতর্ক যদি না অস্কার মঞ্চে কোনও আলোড়ন সৃষ্টি করে তাহলে অনেকেই কেট ব্লাঞ্চেটকেই রাখছেন।
“কেটের অভিনয় দারুণ লেগেছে। এ বছর স্যাগ, বাফটা... এমনকী গোল্ডেন গ্লোব-ও পেয়েছেন তিনি,” বলছেন শিবাজি।
তবে আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে এই ছবিটা করার আগে নাকি কেট ভেবেছিলেন অভিনয় জগৎ থেকে চিরবিদায় নেবেন তিনি! “আমার মতে প্রতিযোগিতা হবে কেট আর মেরিল-এর মধ্যে। সান্ড্রাকেও বেশ লেগেছে ‘গ্র্যাভিটি’তে। তবে আমি কেটের উপরে বাজি ধরব,” বলছেন বেদব্রত।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী সোমবার সকালে সব জল্পনার শেষ। কিছু দিন আগে এক অস্কার লাঞ্চে গিয়ে লিওনার্দো নাকি তাঁর অ্যাকাডেমি পুরস্কার না পাওয়া নিয়ে মশকরাও করেছেন। পকেট থেকে একটা সাদা কাগজ বের করে দেখিয়েছেন, ‘ফাইভ নমিনেশনস, জিরো উইনস’।
তবে ইয়ার্কি করলেও হাল ছাড়েননি লিও। তাই প্রত্যেক টেলিভিশন শোয়ে, ছবির প্রত্যেক প্রচার অনুষ্ঠানে তিনি মার্টিন স্করসেসের সঙ্গে সঙ্গে। নাম-যশ ছাড়াও কোথাও কোথাও সমালোচকদের কুর্নিশেরও তো প্রয়োজন থেকেই যায়। লিওনার্দোর সাক্ষাৎকার থেকেও তাই মনে হয়। তাঁর কথার রেশ টেনেই বলতে হয়: “প্রত্যেকেই চায় বন্ধুরা তাকে অ্যাকসেপ্ট করুক। কিন্তু সত্যিটা হল, প্রত্যেক বছরই অন্য রকম। প্রত্যেকে তাকেই ভোট দেবে যাকে তারা উপযুক্ত মনে করে। তুমি শুধু সিনেমা করো, যতটা কঠোর পরিশ্রম করা যায় করো। বাকি জীবনকে স্তব্ধ করে কাজ করো... আর আশা করো সেরাটাই হবে। প্রথম যে দিন সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলাম, সে দিন থেকে আমারও তাই মনে হয়। আমি দরজায় পা দিয়ে ফেলেছি... আর ওটাকে বন্ধ হতে দেব না।”
এ বছর অস্কার পান না পান, কে জানে, এমিও হয়তো একই কথা ভাবেন। |
কে হবেন সেরা পরিচালক |
• মার্টিন স্করসেসে
• ডেভিড ও রাসেল
• অ্যালফান্সো কুয়ারন
• আলেকজান্ডার পেইন
• স্টিভ ম্যাককুইন |
সেরা ছবির মনোনয়ন |
• আমেরিকান হাসেল
• ক্যাপ্টেন ফিলিপ্স
• ডালাস বায়ার্স ক্লাব
• গ্র্যাভিটি
• হার
|
• নেব্রাস্কা
• ফিলোমেনা
• টুয়েল্ভ ইয়ার্স আ স্লেভ
• দ্য উল্ফ অব ওয়াল স্ট্রিট |
|
|
|
|
|
|