তিন কলেজকে প্রেসিডেন্সি করে তুলতে চায় রাজ্য
প্রেসিডেন্সিকে উৎকর্ষ কেন্দ্র করে তোলার পরিকল্পনা দীর্ঘদিনের। ওই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাওয়ার পরে রাজ্যের কোনও সরকারি কলেজই জাতীয় স্তরের প্রথম ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নেই। তাই উৎকর্ষ বাড়িয়ে রাজ্যের অন্যান্য সরকারি কলেজকে প্রেসিডেন্সির স্তরে টেনে তুলতে চাইছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, পঠনপাঠনের উৎকর্ষের ভিত্তিতে রাজ্যের অন্তত তিনটি সরকারি কলেজকে দেশের প্রথম ১০টি কলেজের তালিকায় তুলে আনা হবে।
প্রেসিডেন্সির ডিরোজিও হলে রবিবার অল বেঙ্গল স্টেট গভর্নমেন্ট কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৩০তম সম্মেলনে ব্রাত্যবাবুর সঙ্গেই ছিলেন অধ্যাপক ও বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সৌগতবাবুই সরকারি কলেজকে জাতীয় স্তরের প্রথম ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, “সরকারি কলেজগুলিকে স্নাতক স্তরের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা যেত। সেই লক্ষ্য থেকে আমরা সরে যাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে ফিরতে হবে। ভারতের প্রথম ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যাতে এ রাজ্যের অন্তত তিনটি সরকারি কলেজ থাকে, তার জন্য ভাবনাচিন্তা এবং চেষ্টা করা উচিত।”
প্রেসিডেন্সিকে বিশ্ববিদ্যালয় করার বিরোধিতা করেছিল সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি। কিন্তু সেটা যখন হয়েই গেল, তখন তারা দাবি তোলে, কলকাতায় আরও একটি সরকারি কলেজ গড়ে তোলা হোক। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হেস্টিংসে মেয়েদের জন্য আরও একটি সরকারি কলেজ হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু দেশের প্রথম ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় বাংলার কোনও সরকারি কলেজ না-থাকায় চিন্তা বেড়েছে।
এই অবস্থায় এ দিন সৌগতবাবুর পরামর্শের প্রসঙ্গ টেনে আনেন ব্রাতবাবু। তিনি বলেন, “কী করে এ রাজ্যের তিনটি সরকারি কলেজকে দেশের প্রথম ১০টি কলেজের মধ্যে তুলে আনা যায়, আমরা নিশ্চয়ই সেটা দেখব।” এই ব্যাপারে সম্মেলনের আয়োজক শিক্ষক সমিতির সদস্যদের সাহায্যও চান শিক্ষামন্ত্রী।
প্রেসিডেন্সিতে দেশ-বিদেশের নামী শিক্ষকদের চেষ্টা চলছে। সৌগতবাবু জানান, এক সময় শুধু স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ বা পিএইচডি ডিগ্রিধারীরাই সরকারি কলেজে শিক্ষক হতে পারতেন। এ ছাড়া যাঁরা বিশেষ কৃতী, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রিধারী, তাঁদের সরাসরি নিয়োগ করা হত সরকারি কলেজে। সেই ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এ দিন ব্রাত্যবাবুকে অনুরোধ করেন তিনি। বাম জমানায় সরকারি কলেজের শিক্ষকদের বদলি শাসক দলের বিশেষ ব্যক্তিদের ইচ্ছাধীন হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ তোলেন সৌগতবাবু। তাঁর বক্তব্য, এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সরকার একটা কড়া বদলি-নীতি তৈরি করলে ভাল হয়। তা হলে বদলির জন্য ধরাধরি আর থাকবে না। বদলি রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হবে না। সরকারি কলেজের শিক্ষকদের প্রতি সৌগতবাবুর অনুরোধ, “নিজেদের স্বার্থে অ্যাসোসিয়েশন করবেন না। কর্তৃপক্ষের অপ্রিয় হতে পড়তে পারেন জেনেও প্রয়োজনে সত্য বলতে পারেন, এমন মানুষ অ্যাসোসিয়েশন করলে ভাল।”
শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিপুল অর্থসঙ্কট সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কল্পনাশক্তি’ এবং ‘চোখ’-এর জোরেই সরকারি কলেজের শিক্ষকদের বকেয়া অর্থ কিছুটা মেটানো হয়েছে। স্বচ্ছ বদলি পদ্ধতিও চালু হয়েছে। এর পরেও যে-সব অসুবিধা রয়েছে, তা যথাসম্ভব দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করছে সরকার। ব্রাত্যবাবুর কথায়, “সরকারি কলেজের শিক্ষকদের ব্যাপারে বেশির ভাগ সিদ্ধান্ত অ্যাসোসিয়েশনের দাবি মেনেই হয়েছে। যা বাকি আছে, শিক্ষকদের যে-অর্থ বকেয়া রয়েছে, তা নিয়ে চলতি বছরের মধ্যে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।”
সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষকদের জন্য নতুন কর্মনীতি তৈরি করা হচ্ছে বলে এ দিন আশ্বাস দেন ব্রাত্যবাবু। একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলির আংশিক সময়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি, বেতন বৃদ্ধি, মেডিক্যাল ইত্যাদি দাবি আছে। সরকার সেই সব দাবি খতিয়ে দেখে নতুন কর্মনীতি তৈরির কথা ভাবছে। ব্রাত্যবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে সরকার কী ভাবছে, তা অভিরূপ সরকার কমিটিকে জানানো হয়েছে। কমিটি শীঘ্রই তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.