ইচ্ছে ছিল কয়েকটি রেশন দোকান পরিদর্শন করবেন। কিন্তু সরু রাস্তায় গাড়ি ঢুকবে না জানিয়ে খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেশন দোকানে না নিয়ে গিয়ে লজে ফিরিয়ে আনা হল। রবিবার বিষ্ণুপুরে এসে এই ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ জ্যোতিপ্রিয়বাবু। প্রকাশ্যেই তিনি বলে ফেললেন, “আমার দফতর পরিষ্কার নয়।”
এ দিন বিষ্ণুপুর মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের নবনির্মিত কার্যালয় ভবন উদ্বোধনে আসেন তিনি। অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে বিষ্ণুপুর ট্যুরিস্ট লজ থেকে শহরের কয়েকটি রেশন দোকান পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন তিনি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুরের কাটানধার এলাকার একটি রেশন দোকানে যাওয়ার উদ্দেশে তিনি রওনা হন। কিন্তু গড়দরজা এলাকার কাছে রাস্তা সরু হওয়ায় কিছুটা এগিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে জেলার আধিকারিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। |
মন্ত্রীকে রেশন দোকানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা নিয়েও জলঘোলা চলছে দফতরে। যদিও দফতরের আধিকারিকরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, “রেশন দোকানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে। অনেক ডিলার রেশন দোকানের বাড়তি মালপত্র বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে খবর এসেছে। আমার ইচ্ছো ছিল কয়েকটি রেশন দোকান ঘুরে দেখার। কিন্তু বিষ্ণুপুর মহকুমার খাদ্য দফতরের একজন ইন্সপেক্টর এমন গলি পথের রাস্তায় নিয়ে গেলেন যে আমার গাড়ি ঢুকতেই পারল না। আমার দফতর পরিষ্কার নয়।”
জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ওই রেশন দোকান পরিদর্শন না হওয়ায় মন্ত্রী রুষ্ট হয়েছেন। কেন এমন হল বিভাগীয় ভাবে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
রাজ্যে জাল রেশনকার্ডের রমরমা যে এখনও বন্ধ করা যায়নি তা মেনে নিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রী। তিনি বলেন, “এখনও রাজ্যে প্রায় ৮০ লক্ষ জাল রেশন কার্ডে মালপত্র নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় ৮০ লক্ষ ৩৮ হাজার জাল রেশন কার্ড ধরেছি। রাজ্য থেকে জাল রেশন কার্ড উৎখাত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।” মন্ত্রী জানান, দ্রুত গোটা রাজ্যে ২৪১ জন রেশন ডিলার নিয়োগ করা হবে আবেদনের ভিত্তিতে। তবে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিকে এ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিষ্ণুপুরের যদুভট্ট মঞ্চে এ দিন ওই অনুষ্ঠান হয়। তিনি দাবি করেন, জঙ্গলমহলে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। রাজ্যে মোট ৩ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ দু’টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন। মন্ত্রী জানান, এই জেলায় বাঁকুড়া ও পাত্রসায়র ব্লকে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চাল রাখার মতো দু’টি গুদাম তৈরি করা হচ্ছে। সেই কাজ প্রায় শেষের মুখে। আরও পাঁচটি নতুন গুদাম জেলায় তৈরি করা হবে। |