লঞ্চে করে সুন্দরবন বেড়ানোর ফাঁকে জলদস্যুদের কবলে পড়লেন রানাঘাটের এক দল পর্যটক। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে কুলতলিতে মাতলা নদীর ঝড়খালি মোহনার কাছে। পর্যটকদের মারধর করে দুষ্কৃতীরা তাঁদের টাকা, গয়না ও মোবাইল ফোন লুঠ করে
পালায় বলে অভিযোগ। বেড়ানো অসমাপ্ত রেখে শনিবার সকালে দলটি ফিরে যায়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “লুঠপাটের অভিযোগ দায়ের করেছেন পর্যটকেরা। তদন্ত শুরু হয়েছে। দু’-তিন জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ ধরা পড়েনি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে রানাঘাট থেকে ২২ জন মহিলা-সহ ৪০ জন পর্যটকের ওই দলটি ক্যানিংয়ের সোনাখালি ঘাট থেকে ‘শ্রীযমুনা’ নামে একটি লঞ্চ ভাড়া করে সুন্দরবনে বেড়াতে যায়। রাতটা পাখিরালয় দ্বীপের কাছে লঞ্চেই কাটায় তারা। শুক্রবার সকালে সজনেখালি, সুধন্যখালি-সহ কয়েকটি জায়গা ঘুরে সন্ধ্যায় পর্যটকেরা পৌঁছন কুলতলির কৈখালি ঘাটে।
রাতটা ওই ঘাটের কাছেই কাটানোর জন্য লঞ্চ নোঙর করা হয়। রাত পৌনে ২টো নাগাদ ভুটভুটিতে করে এসে জনা আটেক দুষ্কৃতী পর্যটকদের লঞ্চে চড়াও হয়। অভিযোগ, লঞ্চ-চালক শঙ্কর দাস ও কর্মী লালু মণ্ডলকে আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁট দিয়ে মারধর করে মাতলা নদীর মোহনার কাছে লঞ্চটি নিয়ে যেতে বাধ্য করে তারা। সেখানে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় লুঠপাট চালিয়ে ভুটভুটিতে চড়ে তারা পালায়। বাধা দিতে গিয়ে কয়েকজন পর্যটক প্রহৃত হন। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে লঞ্চ ফিরিয়ে আনা হয় কৈখালি ঘাটে।
ওই পর্যটক দলটির নেতৃত্বে থাকা কানাইলাল শিকদার বলেন, “রাতে ভুটভুটির শব্দে ঘুম ভাঙতেই দেখি, লাঠি, রড, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা লঞ্চে উঠে এসেছে। লঞ্চের চালকের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে লঞ্চ ঘোরাতে বলল। উনি বাধা দিতে ওরা মারধর শুরু করে। তারপরে ভয় পেয়ে উনিও লঞ্চ ঘুরিয়ে নেন।”
বছর কয়েক আগে ক্যানিং লঞ্চঘাট এবং গোলাবাড়ি ঘাটের কাছে রাতের অন্ধকারে পর্যটকদের লঞ্চে দুষ্কৃতীরা হানা দিয়েছিল। কিন্তু কৈখালি এলাকায় এমন ঘটনা তাঁরা আগে শোনেননি বলে জানান ক্যানিংয়ের লঞ্চ-মালিকেরা। রানাঘাটের পর্যটকেরা যে লঞ্চটি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন তাঁর মালিক অনিমেষ মণ্ডল বলেন, “কৈখালি নিরাপদ জায়গা বলেই শুনেছি। রাতে নদীতে পুলিশের লঞ্চ টহল দেয়। তার পরেও যে ভাবে জলদস্যুরা হামলা চালাল ভাবতে পারছি না!” |