|
|
|
|
শিক্ষকদের কর্মবিরতি, পাল্টা ঘেরাও ছাত্রদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
কলেজের শিক্ষককে হেনস্থায় নাম জড়িয়েছিল অশিক্ষক কর্মচারীর। প্রতিবাদে কর্মবিরতিতে বসে পড়ুয়াদের রোষের মুখে পড়লেন একাংশ কলেজ শিক্ষক। শুক্রবার খড়্গপুরের হিজলি কলেজের ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। দিনভর হয়নি ক্লাসও।
বৃহস্পতিবার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের উপস্থিতিতেই সঞ্জীব পাল ও স্বপন রাণা নামে দুই অশিক্ষক কর্মী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক দীপঙ্কর পাড়ুইকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। তার জেরে শিক্ষকদের একাংশ প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেন। ক্লাস না-হওয়ার অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের পাল্টা ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। সূত্রের খবর, সোম ও মঙ্গলবার কলেজে আসেননি ইংরেজি বিভাগের ওই শিক্ষক। অথচ, হাজিরা খাতায় দু’দিন তিনি উপস্থিত রয়েছেন বলে জানাজানি হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিষয়টি জানতে দীপঙ্করবাবুকে ডেকে পাঠান। দীপঙ্করবাবু দাবি করেন, দুর্গাপুরে সাব-রিজিওনাল এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে টেট পরীক্ষার ক্লাস করাতে গিয়েছিলেন। |
|
কর্মবিরতিতে সামিল হিজলি কলেজের শিক্ষকরা। —নিজস্ব চিত্র। |
যা ‘অন ডিউটির’ মধ্যেই পড়ে। তিনি শংসাপত্রও দেখান। কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তখন দীপঙ্করবাবুকে সমর্থন করেন অর্থনীতির শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ মল্লিক। এরপরই বচসায় জড়ান কলেজের অশিক্ষক কর্মী সঞ্জীব পাল ও স্বপন রাণা। দীপঙ্করবাবুর অভিযোগ, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মদতে শিক্ষাকর্মী সঞ্জীব পাল ও স্বপন রাণা চড়াও হয়ে মারধর করে।” গোটা ঘটনা তিনি থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
ওই ঘটনার জেরে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দু’টি ক্লাস বন্ধ করে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেন দীপঙ্করবাবু। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন ৯ জন স্থায়ী ও ২২ জন আংশিক সময়ের শিক্ষক। তাঁদের দাবি, কলেজে ক্রমেই শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সঞ্জীব পালের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না! গণিতের বিভাগীয় প্রধান রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, “শিক্ষকদের সঙ্গে সঞ্জীব পালের আচরণ সংযত নয়।” সঞ্জীববাবু অবশ্য বলেন, “যাবতীয় অভিযোগ অসত্য। আমি বৃহস্পতিবার পড়ুয়াদের ফর্মের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। দীপঙ্করবাবু অধ্যক্ষের ঘরে চেঁচামেচি করছিলেন। আমি প্রতিবাদ করলে উনি কুকথা বলেন।”
এ দিকে শিক্ষকদের কর্মবিরতির পর ক্লাস করতে বেঁকে বসেন পড়ুয়ারা। তাঁরা কলেজের পঠনপাঠনের সামগ্রিক মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখায়। পরে ১৩ জন শিক্ষককে একটি ঘরে আটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয় না। তার মধ্যে শিক্ষকরা নিজেরাই যদি ক্লাসে না নিয়ে বিক্ষোভ দেখান, তা হলে কলেজ পিছিয়ে পড়বে! কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র উমাশঙ্কর রায় বলেন, “কলেজে পঠনপাঠনের মান তলানিতে ঠেকছে। সাধারণ পড়ুয়ারাই তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।” পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভ তোলে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুবিকাশ জানা বলেন, “আমার সামনেই বৃহস্পতিবারের ঘটনা ঘটেছিল। তবে সে ধরনের কোনও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি যা পুলিশ বা সংবাদমাধ্যমের আসার মতো!” তিনি ছুটি থেকে ফিরে পরিচালন সমিতির বৈঠক ডেকে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|