ভরদুপুরে সিপিএমের জোনাল কমিটির অফিসে ঢুকে তাণ্ডব চালাল এক দল দুষ্কৃতী। চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর, নথিপত্রে আগুন লাগানোর পরে পুড়িয়ে দেওয়া হল অফিসের সামনে রাখা তিনটি মোটরবাইক। এমনকী, তারা অফিসে রাখা টাকাও লুঠ করে বলে অভিযোগ।
শুক্রবার বর্ধমানের রায়নার এই হামলায় শাসক দল, তৃণমূলের লোকজন জড়িত বলে দাবি করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি উদয় সরকার। সিপিএম নেতাদের দাবি, “তৃণমূলের কাজকর্মে বিরক্ত হয়ে এলাকার মানুষজন আমাদের দিকে ফিরতে শুরু করেছেন। সে রাগেই তৃণমূল এমন হামলা চালিয়েছে।” যদিও তৃণমূলের বর্ধমানের পর্যবেক্ষক অলোক দাসের পাল্টা দাবি, “সিপিএম জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লোকসভা ভোটের আগে মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে নিজেরাই অফিসে ভাঙচুর করে, আগুন লাগিয়েছে।”
এসডিপিও (বর্ধমান) অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “এক দল দুষ্কৃতী সিপিএম অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা কোন দলের কর্মী, তা জানা যায়নি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।” |
রায়নার সগড়াই মোড়ে সিপিএমের রায়না-খণ্ডঘোষ জোনাল অফিসে এ দিন দুপুরে হাজির ছিলেন পাঁচ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, আচমকা জনা পঞ্চাশ লোক নানা অস্ত্র হাতে রে-রে করে ঢুকে পড়ে। হামলাকারীদের ভয়ে সিপিএম কর্মীরা চিলেকোঠায় আশ্রয় নেন। সেই সময়ে অফিসে ঢুকতে গিয়ে হামলাকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে চোট পান দলের খণ্ডঘোষ পশ্চিম লোকাল কমিটির সম্পাদক অর্পণ ঘোষ। হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার।
পৌঁছয় পুলিশও।
ঘটনাস্থলে গিয়ে এ দিন দেখা যায়, অফিসের দু’টি তলার মোট দশটি ঘরে আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়েছে। আলমারি তছনছ। সিপিএমের রায়না জোনাল সম্পাদক মির্জা আখতার আলির অভিযোগ, “আমাদের নানা স্তরের কর্মীরা আয়ের একটা অংশ এই সময়ে ‘লেভি’ দেন দলকে। সেই বাবদ সংগৃহীত প্রায় ৪০ হাজার টাকা আলমারিতে রাখা ছিল। দুষ্কৃতীরা তা নিয়ে গিয়েছে। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি।”
গত বিধানসভা ভোটে বর্ধমান জেলা জুড়ে ভরাডুবির মধ্যেও রায়না ও খণ্ডঘোষ আসন দু’টি ধরে রেখেছিল সিপিএম। কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোটে দুই এলাকার অধিকাংশ পঞ্চায়েতই দখল করে তৃণমূল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় দামোদরের পাড়ে কয়েকটি বালি-খাদান এখনও সিপিএমের দখলে রয়েছে। তা নিয়ে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে ঝামেলাও রয়েছে। এ দিনের হামলার সঙ্গে সেই ঝামেলার সম্পর্কও থাকতে পারে বলে এলাকাবাসীর একাংশের ধারণা। |