জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠালেন আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস। বৃহস্পতিবার আসানসোলের সেনর্যালে মোড়ের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে লরির ধাক্কায় দু’জনের মৃত্যুর পরেই এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ যদিও আগেই জানিয়েছেন, রাস্তা সম্প্রসারণ হবে। তাই এখনই আধুনিক আলোর সিগন্যাল লাগানো যাবে না। তাই পুলিশের তরফেও এখনই কিছু করার নেই বলে কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে। জাতীয় সড়কের এই সব বিপজ্জনক মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণের অন্য উপায় খোঁজা হচ্ছে বলে জানান এডিসিপি (ট্রাফিক, সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার চাডিহা। |
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সড়কে যানবাহন চলাচল বাড়ছে। পণ্যবাহী লরি ও অত্যন্ত যানবাহনও এই সড়ক ধরে যাতায়াত করে দ্রুত গতিতে। সড়কের মোড়গুলিতে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক পুলিশকর্মীদের অনেকের অভিযোগ, যান চালকেরা প্রায়শয়ই পরিবহণ আইন মেনে গাড়ি চালান না। অনেক সময়ে নিষেধ লঙ্ঘন করে দ্রুত গতিতে ছুটে যায় গাড়িগুলি। ফলে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বৃহস্পতিবার সে কারণেই লরির ধাক্কায় দু’জন মারা গিয়েছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর। সেনর্যালে মোড়ের কাছে চৌমাথায় সিগন্যালে দাঁড়িয়েছিলেন দু’টি মোটরবাইকের চার জন আরোহী। সেখানে কর্মরত সিভিক পুলিশেরা যে হাত দেখিয়ে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন, তা খেয়াল করেননি এক পণ্যবাহী লরির চালক। লরিটি সোজা মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই দু’জন মারা যান। শুক্রবার সকালেও সে দিনের ঘটনার আতঙ্ক দেখা গিয়েছে সিভিক পুলিশদের মধ্যে। এ দিন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন সিভিক পুলিশকর্মী বলেন, “রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। দ্রুত গতির গাড়ি যে কোনও সময়ে আমাদেরও ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে পারে। আমাদেরও নিরাপত্তা বলে কিছু নেই।” |
শুধু সেনর্যালে মোড়ের কাছেই নয়, এ রকম আরও কিছু মোড় আছে জাতীয় সড়কে, যেখানে পরিস্থিতি একই। যেমন, রানিগঞ্জের রানিসায়র, জামুড়িয়ার কাছে চাঁদা মোড়, কালিপাহাড়ি, কুলটির চৌরঙ্গি, বরাকরের ডুবুরডিহি এলাকা। এই সব জায়গায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সিভিক পুলিশকর্মীরাই। তাঁরা যে ঝুঁকির সঙ্গে কাজ করেন, সে কথা মেনে নেন প্রশাসনের কর্তারাও। এডিসিপি (ট্রাফিক, সেন্ট্রাল) সুরেশ কুমার চাডিহা বলেন, “ওদের জীবনের ঝুঁকি সব চেযে বেশি। গত বছরে এ রকম দুর্ঘটনায় পাঁচ জন ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক পুলিশ মারা গিয়েছেন। এখানে যান নিয়ন্ত্রণের অন্য উপায় খুঁজে দেখছি।” তিনি আরও জানান, পুলিশের তরফে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, এই রকম বিপদসঙ্কুল জায়গায় যেন মোটর ভেহিক্যাল দফতর লরি পরীক্ষার জন্য গাড়ি না ধরে। কারণ, ওই দফতরের তাড়া খেয়ে দ্রুত গতিতে পালানোর সময়ে লরিগুলি দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, “শুধু পুলিশের নয়, ঝুঁকি সাধারণ নাগরিকদেরও। আমি জেলাশাসকের মাধ্যমে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে উন্নত ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা করার জন্য চিঠি লিখেছি।” |