দু’বছরের আন্দোলনের ফল মিলল। নিজেদের এলাকায় প্রাথমিক স্কুল পেলেন রায়গঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দা।
প্রাথমিক স্কুল তৈরির দাবিতে স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে দু’বছর ধরে অভিভাবক ও বাসিন্দাদের একাংশ অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলন করছিলেন তাঁরা। আজ, বুধবার শক্তিনগরের কীর্তনমাঠ এলাকায় ওই প্রাথমিক স্কুলের উদ্বোধন করবেন রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য। রায়গঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় স্বভাবতই খুশির হাওয়া।
ওই এলাকার প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের মধ্যে হাজারখানেক পরিবার বিপিএল তালিকাভূক্ত। এলাকার ৬০ শতাংশ পরিবারের সদস্যরা ছোট ব্যবসা, পরিচারিকা, দিনমজুরি ও ভ্যানরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। আর্থিক সঙ্কটের কারণে বেশিরভাগ অভিভাবকই তাঁদের ছেলে মেয়েদের দূরে নিয়ে গিয়ে পড়াতে পারেন না। |
বরুণবাবু জানান, ওয়ার্ডের ২০০ জন পড়ুয়া প্রতিদিন ২ কিলোমিটার দূরে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপাড়া মোহনবাটি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দ্বারিকাপ্রসাদ অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলে পড়তে যায়। সামান্য বৃষ্টি হলে নদীবাঁধের উপরের মাটির রাস্তায় হাঁটাচলা করতে গিয়ে পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ে। এতে গত তিন বছরে ধরে এলাকায় স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। স্কুলটিতে ২০১০ সালে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ পড়ুয়া থাকলেও বর্তমানে তা কমে ১৯৯-তে এসে দাঁড়িয়েছে।
বছর দু’য়েক আগে এলাকায় প্রাথমিক স্কুল তৈরির দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। মাস ছ’য়েক আগে তৃণমূল কাউন্সিলর বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতর প্রাথমিক স্কুল তৈরির জন্য জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে কীর্তন মাঠ এলাকায় ৪ শতক খাস জমি দেয়। সরকারি ভাবে আপাতত টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্কুল চালু করতে বরুণবাবুই ৮০ হাজার টাকা খরচ করে সেখানে টিন দিয়ে অস্থায়ী স্কুল ভবন তৈরি করান। নবনির্মিত ওই স্কুলের ঘর ও বারান্দার মেঝেয় আপাতত কার্পেট বিছিয়ে ১৫০ জন পড়ুয়ার বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বরুণবাবু বলেন, “বাসিন্দাদের দাবি পূরণ করতে পেরে ভাল লাগছে। উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন এবং শিক্ষা দফতর উদ্যোগী না হলে স্কুল তৈরির ছাড়পত্র মেলা সম্ভব ছিল না।”
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শেখর রায় বলেন, “স্কুল না থাকায় পড়ুয়াদের পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছিল। শীঘ্রই ওই স্কুলে দুজন শিক্ষক নিয়োগ করে পঠনপাঠন ও মিড-ডে মিল চালু করার চেষ্টা চলছে। রাজ্য প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্ষদের কাছে ভবন তৈরির বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।” |