অনাস্থা ভোটে হেরে অপসারিত হওয়ার পর ফের প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসই প্রধান হলেন মাটিগাড়া-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে। মঙ্গলবার তা নিয়েই অভিযোগ তুলেছে বিরোধী বামেরা। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, প্রধান পদ থেকে অনাস্থায় হেরে কেউ অপসারিত হলে এক বছর পর্যন্ত তিনি আর ওই পদে বসতে পারেন না। অথচ তা না মেনে প্রিয়াঙ্কা দেবীকে অন্যায় ভাবে ওই পদে বসানো হল। ব্লক প্রশাসন কী করে ওই অনিয়মকে কার্যকর করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কংগ্রেসের অভিযোগ, ১৭ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জনই অনুপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন নিরাপত্তা না দিতে পারায় তাঁরা যেতে পারেননি। সংখ্যা লঘু সদস্যরা ওই প্রধান নির্বাচন করেছেন।
মাটিগাড়া ব্লকের বিডিও দীপান্বিতা পাত্র বলেন, “আইনে আগে নিয়ম ছিল অপসারিত হলে ১ বছরের মধ্যে ফের ওই ব্যক্তি প্রধান হতে পারবেন না। তবে সংশোধন হয়ে ওই সম্পর্কিত নির্দেশটি এখন আর রাখা হয়নি। তাই তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।” তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে বা নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর কাছে কেউ কোনও রকম অভিযোগ করেননি।
গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ আসনের ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১ জন সদস্য সদস্য মারা যাওয়ায় ১৭ জন রয়েছেন। তার মধ্যে কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে প্রধান-সহ ৮ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। কংগ্রেস থেকে যোগ দেন ৫ জন। কংগ্রেসের সদস্যরা অনাস্থা আনেন। কংগ্রেস এবং বামেদের পঞ্চায়েত সদস্য অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়ে প্রধানকে অপসারিত করেন। এর পর সোমবার ছিল ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া। বামেদের অভিযোগ, বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের গ্রাম পঞ্চায়েতে যেতে এ দিন বাধা দেয় তৃণমূলোর লোকজন। নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়। সে কারণে কেউ যেতে পারেনি। অশোকবাবুর অভিযোগ, তৃণমূলের টিকিটে কোনও সদস্য জেতেনি। অন্য দলের সদস্যদের নিয়ে গায়ের জোরে ফের প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসকেই প্রধান করা হয়েছে। একবার কেউ ওই পদ থেকে অপসারিত হলে ১ বছর তাকে আর বসানোর নিয়ম নেই। অথচ ব্লক প্রশাসন কেন তা না মেনে অনিয়ম করছেন বুঝতে পারছি না। এর বিরুদ্ধে আমরা শীঘ্রই আইনের দ্বারস্থ হব।”
কংগ্রেসের তরফেও একই সুরে অভিযোগ তোলা হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের তথা মাটিগাড়ার অন্যতম নেতা পার্থ সেনগুপ্ত বলেন, “অনাস্থা ভোটে যে ভাবে গোলমাল পাকানো হয়েছিল তার পরেও ওরা হেরে যায়। এর পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমাদের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। প্রধান নির্বাচনের দিন তাই পর্যাপ্ত পুলিশ এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। অথচ প্রশাসনের তরফে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” তাঁর দাবি, ১৭ জনের মধ্যে সংখ্যা গরিষ্ঠ ৯ জন সদস্যই অনুপস্থিত ছিলেন। সংখ্যা লঘু সদস্যরা এই প্রধানকে নির্বাচন করেছেন। আগামীতে ভোটেই স্পষ্ট হবে এলাকার মানুষ কাদের চান। প্রধান প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস বলেন, “প্রশাসনিক আধিকারিকরা ছিলেন। প্রধান পদের জন্য আমার নাম সদস্যরা প্রস্তাব করলে তাঁরা বাধা দেননি। নিয়ম মেনেই সব হয়েছে বলে মনে করি।” |