বঙ্গ ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এত দিন যা ছিল জ্বলন্ত বিষয়, মঙ্গলবার তার কারণ বলে গেলেন জাতীয় নির্বাচক সাবা করিম। প্রচারমাধ্যমকে নয়। সিএবিকে।
সিএবি সংগঠিত এক অনুষ্ঠানে এসে সাবা বলে গেলেন, কেন অশোক দিন্দা, লক্ষ্মীরতন শুক্লদের এই মুহূর্তে জাতীয় দলে নেওয়া যাচ্ছে না।
সাম্প্রতিকে জাতীয় দলে বাংলার ক্রিকেটারদের পরের পর ‘ব্রাত্য’ রাখা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ক্রিকেটমহল ও ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের মধ্যে। মূলত জাতীয় দলের স্কোয়াডে দু’জনের অনুপস্থিতিকে ঘিরে অসন্তোষ বাড়ছিল। একজন বাংলা অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল। সদ্য সমাপ্ত রঞ্জি ট্রফিতে বাংলাকে সেমিফাইনালে নিয়ে যাওয়ার পিছনে যাঁর কৃতিত্ব সিংহভাগ। ছ’শোর উপর রান ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিয়েছেন। দ্বিতীয় জন, বাংলা পেসার অশোক দিন্দা। রঞ্জি ট্রফিতে চল্লিশ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু ভারতের কোনও টুর্নামেন্টের টিমেই লক্ষ্মী-দিন্দার জায়গা হয়নি। মঙ্গলবার একটি পানীয় সংস্থা আয়োজিত স্কুল টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার সিএবি-তে এসেছিলেন সাবা। সেই অনুষ্ঠানে প্রথমে মিডিয়া সে প্রসঙ্গ তুললে সাবা বলে দেন, “আমি ওই ব্যাপারে কথা বলব না। নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও ব্যাপারে আমি কথা বলতে পারি না।” পরে চাপাচাপি করলে বলে ফেলেন, “আমি জানি আপনারা কোন কথাটা জানতে চাইছেন। কিন্তু সেটা বলা সম্ভব নয়।” কিন্তু সিএবি জানতে চাইলে, উত্তর দিয়ে দেন। শোনা গেল যা এ রকম:
অশোক দিন্দা: ভাবা হচ্ছে টেস্টের জন্য। দিন্দার জায়গায় নিউজিল্যান্ডগামী দলে বরুণ অ্যারন, উমেশ যাদবদের ভাবা হয়েছিল কারণ, তাঁদের পেস বেশি। বিদেশে যেটা বেশি কাজে লাগে। কিন্তু তাই বলে দিন্দা সুযোগ পাবেন না, এমন নয়। শুধু স্লট ফাঁকা হওয়া দরকার। তবে সাবার নাকি মনে হয়েছে যে দিন্দাকে প্রয়োজনীয় বিশ্রামটা দেওয়া দরকার। ইরানি ট্রফিতে সুযোগ পেলেও দিন্দা যে সে ভাবে কিছু করতে পারেননি কারণ, গোটা মরসুম ধরে বাংলা বোলিংকে একা টানার ক্লান্তি।
মনোজ তিওয়ারি: ছ’মাসের উপরে চোটের কারণে ক্রিকেটের বাইরে। আসন্ন বিজয় হাজারে ট্রফি থেকেই মনোজের পারফরম্যান্সের উপর নজর রাখা হবে।
লক্ষ্মীরতন শুক্ল: সিএবির কাছে সাবার কথাবার্তা ধরলে বাংলা অধিনায়কের ক্ষেত্রে জাতীয় নির্বাচকদের সমস্যার কারণ, সর্বভারতীয় টুর্নামেন্টে তাঁর অনুপস্থিতি। পূর্বাঞ্চল নির্বাচক নাকি বলে গিয়েছেন যে, লক্ষ্মী রঞ্জিতে খুবই ভাল করেছেন। কিন্তু বাংলার জার্সির বাইরে তাঁকে সে ভাবে পাওয়া যায় না। দলীপ ট্রফি লক্ষ্মী খেলেননি কয়েকটা মরসুম হয়ে গেল। সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট কম খেললে, ইরানি বা চ্যালেঞ্জারের মতো টুর্নামেন্টে কোনও ক্রিকেটারকে রাখা মুশকিল হয়ে যায়। যে ধাপগুলো নাকি আগে পার হওয়া দরকার ভারতীয় দলে ঢুকতে গেলে। যা শুনে লক্ষ্মী বললেন, “দলীপ খেলতে পারিনি চোটের জন্য। ফিজিওর রিপোর্ট জমা দিয়েছিলাম। রঞ্জি, দেওধর তো খেলেছি। গত পাঁচ-ছ’বছরে পাঁচটা ম্যাচের বেশি মিস করিনি।” তাই জাতীয় নির্বাচকের কথাবার্তা শেষ পর্যন্ত কতটা সন্তোষজনক দাঁড়াল, তা নিয়ে বোধহয় নিঃসন্দেহ হওয়া যাচ্ছে না। |