বাংলার বিজয় হাজারে ট্রফির (রঞ্জি একদিনের টুর্নামেন্ট) অভিযান শুরুর আগে অদ্ভুত সঙ্কট তৈরি হয়ে গেল বাংলা ক্রিকেটে।
এক দিকে, বিজয় হাজারের জন্য লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র বাংলার প্র্যাকটিস। যা শুরু হচ্ছে আজ, বুধবার সকাল থেকে। টুর্নামেন্টের আগে যে প্র্যাকটিসকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে বাংলা টিম ম্যানেজমেন্ট।
অন্য দিকে, সিএবি-র স্থানীয় লিগের ম্যাচ। যেটাও হবে বুধ-বৃহস্পতি। তার পর ফের ২১ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি। বুধ-বৃহস্পতি সিএবি লিগ ম্যাচ। পরেরগুলো নক আউট প্রি কোয়ার্টার এবং কোয়ার্টার ফাইনাল। সিএবি থেকে পরিষ্কার বলে দেওয়া হচ্ছে, স্থানীয় লিগের ম্যাচের সূচি পাল্টানো যাবে না! ম্যাচ যেমন আছে, তেমনই হবে।
অতএব প্রশ্ন উঠে পড়ছেক্রিকেটাররা তা হলে বুধবার সকালে যাবেন কোথায়? বাংলা প্র্যাকটিসে? নাকি ক্লাব ম্যাচ খেলতে?
বুধবার ময়দানের সমস্ত বড় ক্লাবেরই ম্যাচ আছে। কালীঘাট, মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল— তিন প্রধান বিভিন্ন মাঠে নামবে লিগ ম্যাচ খেলতে। সর্বমোট ময়দানের ছাব্বিশটা ক্লাব একে অন্যের মুখোমুখি হচ্ছে। মুশকিল হচ্ছে, বিজয় হাজারে ট্রফির জন্য যে টিম বাছা হয়েছে, তার ক্রিকেটাররা এ সব ক্লাবেই খেলেন। কোনও কোনও ক্লাবের পক্ষ থেকে এ দিনই বলে দেওয়া হল, বাংলার প্র্যাকটিসের জন্য প্লেয়ার ছাড়া সম্ভব নয়। লিগ আছে। নক আউট প্রি-কোয়ার্টার, কোয়ার্টার আছে। বাংলা থিঙ্কট্যাঙ্ক থেকে আবার বলা হচ্ছে, প্র্যাকটিসটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিজয় হাজারে খেলা হবে সাদা বলে। ফর্ম্যাট আলাদা। একসঙ্গে প্র্যাকটিস তাই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তার চেয়েও যেটা মারাত্মক, টুর্নামেন্ট শুরু হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। যে দিন ওড়িশার বিরুদ্ধে বাংলাকে নামতে হচ্ছে রাঁচিতে। সিএবি-র স্থানীয় ম্যাচের জন্য যদি ক্রিকেটারদের না পাওয়া যায়, তা হলে মাত্র দু’দিনের প্র্যাকটিসে নেমে পড়তে হবে টুর্নামেন্টে! কারণ, বাংলার ২৫ ফেব্রুয়ারি রাঁচির জন্য রওনা হওয়ার কথা। আর নেমে ভাল কিছু না করতে পারলে দায়টা তো ক্রিকেটারদের উপরেই বর্তাবে।
তা হলে উপায়? মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যা খবর, কোনও উপায় নেই। এবং পরিস্থিতি রাতারাতি না পাল্টালে বলা হচ্ছে প্র্যাকটিসে থাকবেন শুধু তিন জন।
কোচ অশোক মলহোত্র। অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল। মনোজ তিওয়ারি।
বাংলা কোচ অশোক মলহোত্র বলে দিলেন, বুধবার প্র্যাকটিসে ক্রিকেটাররা না এলে সিএবি-র সঙ্গে কথা বলবেন। “সে রকম হলে সিএবিকে বলব, দু’দিন আগে টিম নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিতে। প্র্যাকটিসটা দরকার।” ক্রিকেটারদের কেউ কেউ বেশ বিরক্ত। বলা হচ্ছে, টুর্নামেন্টের আগে অ্যাডজাস্ট করার নূন্যতম সময়টাই পাওয়া যাবে না। যদিও সিএবি-র তাতে বিশেষ হেলদোল নেই। মঙ্গলবার সন্ধেয় সিএবি-তে দাঁড়িয়ে টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট রোজারিও বলে দিলেন, “বাংলার প্র্যাকটিস তো টুর্নামেন্ট কমিটি কী করবে? লোকাল ম্যাচ তো করতেই হবে! বাংলার প্র্যাকটিস তো দেখার কথা আমাদের নয়।” যুগ্ম-সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁর উত্তর, “ম্যাচ, প্র্যাকটিস দু’টোই করতে হবে। ক্রিকেটাররা ম্যাচ খেললে ভালই তো। যারা ম্যাচ খেলবে না তারা প্র্যাকটিসে যাবে।” কিন্তু সূচি বদলানো যায় না? এ বার যুগ্ম সচিব বললেন, “কী ভাবে সম্ভব? স্থানীয় ম্যাচগুলোও তো করা দরকার।” কিন্তু পাল্টা বলা হচ্ছে, লিগ বা নক আউট দু’টোই খেলা হবে লাল বলে। বিজয় হাজারে সাদা বলে। তা ছাড়া সিএবি নক আউট টুর্নামেন্ট সীমিত ওভারের ম্যাচ হলেও সেখানে বোর্ডের নিয়মকানুন মানা হয় না। ফিল্ডারদের বিধিনিষেধ জাতীয় ব্যাপারস্যাপার নক আউটে নেই। তাই বলা হচ্ছে, ম্যাচ খেলেও তা হলে লাভটা কী? |