|
|
|
|
শিশুর চোখের জটিল অস্ত্রোপচার
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া |
পাথরের আঘাতে নষ্ট হতে বসেছিল বছর ছয়েকের এক শিশুর চোখ। সেই চোখের জটিল অস্ত্রোপচার হল পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। সীমিত পরিকাঠামো সত্ত্বেও এই হাসপাতাল ইতিমধ্যেই একাধিক জটিল ও সফল অস্ত্রোপচার করে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বলরামপুরের তেঁতলো গ্রামের বাসিন্দা বছর ছয়েকের এই শিশুর চোখে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার সারেন হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেবাশিস প্রামাণিক ও শল্য চিকিতসক পবন মণ্ডল। বৃহস্পতিবার ডান চোখে ব্যথা হওয়ায় পল্লব সহিস নামে ওই শিশুটিকে সদর হাসাপাতালে নিয়ে আসেন বাড়ির লোকজন। পল্লবের মা আরতি সহিস জানান, গত সোমবার তাঁর মেয়ে মঙ্গলি আর ছোট ছেলে পল্লব স্কুলে যাচ্ছিল। একটু পরে পল্লব ফিরে কাঁদতে কাঁদতে বলে, দিদি ওর চোখে পাথর দিয়ে মেরেছে। খুব যন্ত্রণা করছে। বলরামপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা পল্লবকে ইঞ্জেকশন দেন।
আরতিদেবীর কথায়, “বৃহস্পতিবার থেকে ফের ব্যথা শুরু হয়। ছেলে চোখও খুলতে পারছিল না। ওকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।” চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেবাশিসবাবু বলেন, “প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষার পরে দেখা যায়, পাথরের আঘাত থেকে ছেলেটির ডান চোখের ভিতরের অংশে রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছে। এটিকে চিকিৎসার পরিভাষায় হাইফিমা বলে। ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে অপটিক নার্ভ (চোখের স্নায়ু) ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাতে অন্ধত্বও আসতে পারে।”
এ সব ক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রোপচার করাটাই নিয়ম। শল্য চিকিৎসক পবনবাবু বলেন, “এক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছিল। তাই জরুরি ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় অস্ত্রোপচার শুরু হয়।” দেবাশিসবাবু জানান, একটু দেরি হয়েছে ঠিকই। তবে ছেলেটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে বলে তাঁদের আশা। আরতিদেবী বলেন, “আমার স্বামী দিনমজুর। ছেলেকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ নেই। এখানে চিকিৎসা না হলে আমরা অথৈ জলে পড়তাম।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য করেছেন।” |
|
|
|
|
|