জেলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি ও মালবাজারের কুমলাই এলাকায় সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন জখম হয়েছেন। জখমদের মধ্যে ২ জন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল ও ২ জন ময়নাগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি । পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “অভিযোগ পেয়েই ব্যবস্থা হচ্ছে।”
গত রবিবার সন্ধ্যায় মালবাজারের কুমলাইয়ে কৌশিক মজুমদার নামে এক তৃণমূল সমর্থককে একা পেয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের নামে। যদিও কংগ্রেস ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। রবিবার রাতেই ধূপগুড়ির গাদঙের পুনডিবাড়ি গ্রামে সিপিএম ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত চার জন জখম হন বলে জানা গিয়েছে। ময়নাগুড়িতে পৃথক একটি সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন জখম হয়েছেন। ধূপগুড়ির সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, গাদং-২ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূল দখল করতে পারেনি বলে ফল প্রকাশের পর সিপিএম কর্মী সমর্থকদের হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। গত শনিবার বামেদের বিজয় মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য আদিত্য সরকার নামে এক সিপিএম সমর্থককে মারধর করার পাশাপাশি তৃণমূল সমর্থকরা এলাকার অন্য এক সিপিএম সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে।
সিপিএমের দাবি, আদিত্যবাবুকে রক্ষা করতে গেলে তাঁর বাবাকেও মারধর করে তৃণমূল সমর্থকরা। তবে, তৃণমূল নেতা গুড্ডু সিংহ অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযোগ করে বলেন, “বামফ্রন্টের বিজয় মিছিল থেকে এক তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকের বাড়িতে পটকা ছোড়া হয়। এ ছাড়া, রবিবার রাতে সিপিএম সমর্থকরা আমাদের সমর্থকদের মারধরও করে।”
ময়নাগুড়িতে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে পানবাড়ির কামারঘাট এলাকায়। রবিবার রাতে সিপিএমের মহিলা নেত্রী রেখা অধিকারীর বাড়িতে ধারাল অস্ত্র নিয়ে তৃণমূলীরা হামলা চালায় বলে সিপিএমের অভিযোগ। জখম দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে ময়নাগুড়ির পেটকাটি এলাকায় এক কংগ্রেস সমর্থককে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এলাকায় কংগ্রেস সমর্থকদের চারটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও দাবি। কংগ্রেস সমথর্র্ক সঞ্জয় রায়কে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও ময়নাগুড়ি ব্লক তৃণমূলের দাবি, সিপিএমের হামলায় কামারঘাটে তাঁদের তিন সমর্থক জখম হয়েছেন। পেটকাটিতে তাঁদের কর্মীদের উপরে কংগ্রেস হামলা চালিয়েছে। সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে। পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “শান্ত জেলাকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। ময়নাগুড়িতে আমাদের কর্মীর উপরে হামলা করা হয়েছে।” তৃণমূল জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “ব্যক্তিগত স্তরের গোলমালকে রাজনৈতিক বলে দাবি করা হচ্ছে। সিপিএম-কংগ্রেসের পায়ের মীচে মাটি নেই, ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।” |