তেলেঙ্গানা কি এই আমলেই, সংশয় দীর্ঘ প্রক্রিয়া ঘিরে
ঘোষণা তো হল। কিন্তু আলাদা রাজ্য হিসেবে তেলেঙ্গানার আবির্ভাব ঘটবে কবে?
গত কালই কংগ্রেস নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, চার-পাঁচ মাসের মধ্যেই পৃথক রাজ্য গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হবে। কিন্তু আমলারা বলছেন, এত কম সময়ে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব নয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তেলেঙ্গানা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য যে নোট তৈরি হবে, বৃহস্পতিবারের আগে তা শেষ করা সম্ভব নয়।
আমলাদের বক্তব্য, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এত দ্রুত ক্যাবিনেট নোট তৈরি করা শক্ত। এ জন্য আরও আলোচনা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির মতামতও লাগবে। তবে তেলেঙ্গানার পরে গোর্খাল্যান্ডের মতো ছোট ছোট রাজ্যের দাবি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও, দ্বিতীয় রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন তৈরি করতে চায় না কেন্দ্র। সরকারের শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, তেলেঙ্গানা আর পৃথক রাজ্যের অন্য দাবিগুলি এক নয়। কাজেই নতুন রাজ্য তৈরির দাবি খতিয়ে দেখারও প্রশ্ন নেই।
সরকারি প্রক্রিয়া অনুযায়ী, কেন্দ্র প্রথমে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারকে আলাদা তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের প্রস্তাব গ্রহণের অনুরোধ করবে। সেই প্রস্তাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আসার পর একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন হবে, যারা রাজ্য ভাগের খুঁটিনাটি দেখবে। কিন্তু রাজ্যের কাছে কেন্দ্র কী প্রস্তাব পাঠাবে, সেটাই এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রথম দশ বছর তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র দুই রাজ্যেরই রাজধানী থাকবে হায়দরাবাদ। সে ক্ষেত্রে হায়দরাবাদকেও চণ্ডিগড়ের মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, তার ফয়সালা হওয়া বাকি। দশ বছর পরে বিশাখাপত্তনম, বিজয়ওয়াড়া বা তিরুপতির মতো কোনও শহরকে অন্ধ্রের রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য কেন্দ্র অর্থ সাহায্য করবে কি না, সেই সিদ্ধান্তও হয়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, মন্ত্রিগোষ্ঠীও এই সব বিষয় খতিয়ে দেখতে পারে। মন্ত্রিগোষ্ঠীতে স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, সেচ, বিদ্যুৎ, পরিবেশ ও রেলমন্ত্রীরা থাকবে। যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষও ওই গোষ্ঠীর সদস্য হবেন। মন্ত্রিগোষ্ঠী বিল তৈরি করে মতামতের জন্য তা রাজ্যের কাছে পাঠাবে। এর পর রাষ্ট্রপতির হাত ঘুরে বিলটি সংসদে আসবে। আগামী সোমবার থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। প্রায় এক মাস এই অধিবেশন চলবে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এই সব সেরে ফেলা সম্ভব নয়। কাজেই ডিসেম্বরে শীতকালীন অধিবেশনের আগে রাজ্য পুনর্গঠন বিলটি সংসদে আসা সম্ভব নয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক চায়, অন্ধ্র বিধানসভায় তেলেঙ্গানা বিষয়ে প্রস্তাব পাশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুক কেন্দ্র। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই ক্যাবিনেট নোট তৈরি হোক। শুধু তাই নয়, কোন রাজ্য কেন্দ্রীয় অনুদানের কতটা পাবে, তা দেখার জন্য অর্থ মন্ত্রক একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে। যোজনা কমিশনকেও একটি পৃথক দফতর তৈরি করতে হবে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে এই লম্বা প্রক্রিয়া মেটানো কি আদৌ সম্ভব? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এই লম্বা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই যেতে হবে। মাস ছয়েকের মধ্যে এই প্রক্রিয়া মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হবে। কিন্তু মনমোহন-সরকারের যে কাজের গতি, তাতে তেলেঙ্গানা রাজ্যের জন্মগ্রহণ এই আমলে হবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.