নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্ত অক্ষরেখার ত্রিফলায় প্রাপ্তি রেনি ডে
কে নিম্নচাপ, এ বার দোসর হয়ে এল ঘূর্ণাবর্ত ও মৌসুমি-অক্ষরেখা।
এবং তিনে মিলে রবিবার ভাসিয়ে দিল কলকাতা-সহ প্রায় গোটা রাজ্য। চলতি মরসুমের গোড়া থেকে বেশ ক’দফায় ভাল বৃষ্টি হলেও দক্ষিণবঙ্গ কার্যত এ দিনই প্রথম ‘রেনি ডে’-র মুখ দেখল। আবহাওয়া অফিসের হিসেবে গত চব্বিশ ঘণ্টায় কলকাতা ও আশপাশে ৮৬.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী দিন দুয়েকও কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র বৃষ্টি হতে পারে বলে তাদের পূর্বাভাস।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, গত ক’দিন ইস্তক বিহার ও লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের উপরে একটা নিম্নচাপ অবস্থান করছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ও সংলগ্ন উপকূলের একটি ঘূর্ণাবর্ত। পাশাপাশি বিহার থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে মৌসুমি-অক্ষরেখা। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ এ দিন বলেন, “নিম্নচাপের দরুণ এমনিতেই মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা বেড়েছে। তার উপরে এই তিনটি পরিস্থিতির সমন্বয়ে এমন বৃষ্টি।” আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বাংলাদেশ উপকূলের ঘূর্ণাবর্তটি এ দিন বিকেলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়েছে। আজ, সোমবারেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। “কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।” বলছেন গোকুলবাবু।
জলে ভেসেছে বাঁকুড়া-মেদিনীপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ছবি: শুভ্র মিত্র।
কিন্তু গত বুধবার মৌসুমি-অক্ষরেখা যখন উত্তরবঙ্গের দিকে সরে গেল, তখন তো অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন যে, দক্ষিণবঙ্গে এ বার বৃষ্টিতে টান ধরতে পারে! ব্যাপারটা বিলকুল উল্টে গেল কী করে?
এক আবহ-বিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা: আবহাওয়ার পরিস্থিতি বদলালেও প্রায় একই সময়ে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। যার টানে মৌসুমি-অক্ষরেখা ফের দক্ষিণবঙ্গে সরে এসেছে। এই ত্র্যহস্পর্শে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকেছে, এবং তা ঘনীভূত হয়ে মেঘ সৃষ্টি হয়েছে। তা নামিয়েছে ভারী বৃষ্টি।
চলতি বছরে মরসুমের গোড়া থেকেই দক্ষিণবঙ্গের উপরে বর্ষা মোটামুটি প্রসন্ন বলা যায়। আবহাওয়া দফতরের খবর: মরসুমের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে শক্তিশালী নিম্নচাপ-অক্ষরেখার উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। তার জেরে দফায় দফায় বৃষ্টি নেমেছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোয়। বস্তুত দক্ষিণবঙ্গে শক্তিশালী নিম্নচাপ-অক্ষরেখা থাকার কারণেই জুন মাসের অনেকটা সময় ধরে উত্তরবঙ্গ বৃষ্টি পায়নি বলে মনে করছেন আবহবিদদের একাংশ। মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, গত বছর জুনে উত্তরবঙ্গে স্বাভাবিকের ২৬% বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু এ বার ১ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত সেখানে বৃষ্টির ঘাটতি নয় নয় করে ২৫%!
মৌসম ভবনের তথ্য অনুযায়ী, ১ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ১৭৯.১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা প্রায় স্বাভাবিক। শুধু তা-ই নয়, দক্ষিণবঙ্গে জুন মাসে এমন বর্ষা গত এক দশকে দু’-তিন বারের বেশি দেখা যায়নি বলে আবহবিদদের দাবি। বিশেষত, ২০০৯ ও ২০১২-র জুনে তো বর্ষা প্রায় মালুমই হয়নি! দক্ষিণবঙ্গে এ বছর বর্ষার দাক্ষিণ্যের কারণ কী? আবহবিদেরা এর পিছনে বঙ্গোপসাগরে অনুকূল বায়ুপ্রবাহের বড় ভূমিকা দেখছেন। মৌসম ভবনের এক কর্তার কথায়, “বর্ষা কতটা জোরালো হবে, তা নির্ভর করে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্তের উপরে। এ বছর মে’র শেষ থেকেই বঙ্গোপসাগরে একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তাতে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে উঠেছে।” কিন্তু জুন মাসে বর্ষার এ হেন অতি-সক্রিয়তা কি জুলাই-অগস্টের বৃষ্টি-ভাগ্যে ধাক্কা দিতে পারে? আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা অবশ্য এখনও তেমন কোনও ইঙ্গিত দেখতে পাননি।

আইনি লড়াইয়ে উদয়ন, জেলায় যাবেন নেতারা
পঞ্চায়েত ভোটের সময় দলের শক্ত ঘাঁটি কোচবিহারের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহকে ‘ফাঁসানো’র বিরুদ্ধে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। সিপিএম নেতৃত্ব সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁদের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে শাসক দল বা রাজ্য সরকার ‘প্রতিহিংসাজনিত’ কারণে অভিযোগ দায়ের করলে তাঁরা কেউ আগাম জামিনের আবেদন করবেন না। পুলিশ গ্রেফতার করলে রাজনৈতিক ভাবেই লড়াই চালানো হবে। সেই সূত্র মেনেই বারুইপুরে খুনের অভিযোগে সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বা ওই জেলাতেই শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাজ্য কমিটির প্রবীণ সদস্য আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা আগাম জামিনের আর্জি জানানোর পথে যাননি। কিন্তু বাম শরিক ফ ব-র সিদ্ধান্ত, উদয়নবাবুর ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই তা অব্যাহত রাখা হবে। কোচবিহারে এক তৃণমূলের কর্মী খুনের ঘটনায় উদয়নবাবু-সহ জেলার জনাষাটেক বাম নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। উদয়নবাবুর জামিনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে কোচবিহারের আদালত। এই প্রেক্ষিতে রবিবার ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর জন্য জামিনের আর্জি জানানো হবে। ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায়ের কথায়, “আইনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজনৈতিক ভাবেও শাসক দলের সন্ত্রাস ও প্রতিহিংসার কৌশলের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। আইনি প্রক্রিয়ার পরিণতি যা-ই হোক, রাজ্য নেতৃত্ব পঞ্চায়েত ভোটের সময় কোচবিহারে গিয়ে দলের কর্মীদের পাশে দাঁড়াবেন।” উদয়নবাবুর অনুপস্থিতি যাতে ওই জেলায় ফ ব কর্মী-সমর্থকদের মনোবলে আঘাত না করে, সেই লক্ষ্যেই এমন সিদ্ধান্ত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.