উত্তর কলকাতা
পুর-উদ্যোগ
সদ্ব্যবহার
ল থইথই রাস্তা। সেই জলে জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। বেলগাছিয়ার কাছে ইন্দ্র বিশ্বাস রোডে টালা ভূগর্ভস্থ জলাধার থেকে উপচে পড়া জল জমে থাকার এই দৃশ্যটাই এত দিন ছিল এলাকার দস্তুর। সম্প্রতি, এই জল পুনর্ব্যবহারে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। নির্দিষ্ট নালার মাধ্যমে নিকাশি নালায় ফেলার আগে ওই অতিরিক্ত জল দেওয়া হচ্ছে সংলগ্ন উদ্যানের গাছে। উদ্যান ধোয়ার কাজেও ব্যবহার হচ্ছে ওই জল। ভবিষ্যতে ওই জল দিয়ে সংলগ্ন এলাকার রাস্তা ধোয়ারও পরিকল্পনা আছে পুরসভার। পুরসভার জল দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, টালার ভূগর্ভস্থ জলাধার থেকে প্রযুক্তিগত কারণেই কিছু জল উপচে পড়ে যায়।
এটা জলের অপচয় নয়, এই জল ছাড়তেই হয়। কিন্তু এই জল যাওয়ার আলাদা জায়গা ছিল না। ফলে, রাস্তার এক দিকে জল জমে যেত। সেই অংশের ফাঁকা জমিতে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে পুরসভা একটি উদ্যান তৈরি করেছে। উদ্যানে লাগানো হয়েছে প্রচুর গাছ।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান দফতর) দেবাশিস কুমার বলেন, “উদ্যান পরিষ্কার রাখতে এ ধরনের পরিকল্পনা অভিনব। প্রযুক্তিগত কারণেই ওই জল উপচে পড়ে নষ্ট হত। সেই সমস্যা মিটে গেল। শহরের বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবেই জলের পুনর্ব্যবহার করার বিষয়ে ভাবছি। জল দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”
স্থানীয় বাসিন্দা রজত মুখোপাধ্যায়ের কথায়: “এই প্রকল্পের ফলে এলাকায় জল দাঁড়ানোর সমস্যা মিটে গিয়েছে। এলাকার সৌন্দর্যবৃদ্ধিও হয়েছে।” এই এলাকার কাউন্সিলর তথা পুরসভার এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “এই অতিরিক্ত জল আটকে রেখে জলাধার সংলগ্ন উদ্যানের গাছে দেওয়া হচ্ছে। ফলে গাছগুলিও বাঁচছে। শহরের সৌন্দর্যায়নে অবশ্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
টালা পার্ক অঞ্চলে কলকাতা পুরসভা সৌন্দর্যায়নের অংশ হিসেবে বনবীথি গড়ে তুলেছে। এ ছাড়াও, এখানে ফাঁকা জায়গা থাকায় কয়েকটি ছোট উদ্যান তৈরি হয়েছে। রয়েছে পুরসভার নিজস্ব নার্সারিও। কিন্তু সমস্ত জায়গায় এই জল এখনও পর্যন্ত ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি, পুরসভার জল দফতর থেকেও এই এলাকা ফের পরিদর্শন করা হয়েছে।
পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল বিভাস মাইতি বলেন, “প্রযুক্তিগত কারণেই ওই জল জলাধার থেকে ছাড়তে হয়। তবে এখান থেকে যে জল নির্গত হচ্ছে তার পরিমাণ সামান্যই। এই জল পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। এই পদ্ধতি শহরের অন্য এলাকাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে।”

ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.