টুকরো খবর
ভোট হচ্ছে না চারশোরও বেশি আসনে
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়া পর্যন্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৬৫ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত করেছিল শাসক দল তৃণমূল। সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার পর সেই সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮৫। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন এ দিন। জেলার ভগবানপুর-২ ব্লকের অর্জুননগর, ইটাবেড়িয়া ও বাসুদেববেড়িয়া পঞ্চায়েতের সমস্ত আসন তৃণমূলের দখলে। শুধু পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনের জন্য ভোট হবে এখানে। জেলায় পঞ্চায়েত সমিতির ৬৬১টি আসনের মধ্যে ৬০টিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না এ বার। এ দিকে, বামফ্রন্ট-সহ বিরোধীদলগুলি সোমবারও জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে, শাসকদল তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে। আরএসপি-র জেলা সম্পাদক অমৃত মাইতি অভিযোগ করেন, “তৃণমূলের ক্রমাগত হুমকির জেরে জেলার পটাশপুর ২ ব্লকে দলের তিন জন পঞ্চায়েত প্রার্থী ও একজন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।” এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি ও জেলা পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন অবশ্য দাবি করেন, “জেলায় শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়নপত্র জমা ও প্রত্যাহার পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। ব্লক, মহকুমা ও জেলা স্তরে যে সব অভিযোগ এসেছিল, সেগুলির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” যদিও এই পর্বে মোট কত অভিযোগ জমা পড়েছে জানাতে পারেননি জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। জেলাশাসক বলেন, “বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে। সেগুলি হিসেব করা হচ্ছে। সংখ্যা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।”

বয়কটে গ্রাম
আগে উন্নয়ন। পরে ভোট। সোমবার বেলপাহাড়ি ব্লকের ভেলাইডিহা অঞ্চলের রংপুর গ্রামের বাসিন্দারা প্রশাসন-পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এ বার তাঁরা পঞ্চায়েত ভোট বয়কট করবেন। রংপুরের স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ গরাই, অজয় বিশুই, তারক বেরা, সবিতা গিরি-দের অভিযোগ, এলাকায় ন্যূনতম উন্নয়ন হয়নি। রাস্তা নেই, প্রাথমিক স্কুল নেই। তারাফেনি খালের উপর সেতু না-থাকায় বর্ষাকালে রংপুর গ্রামটি বেলপাহাড়ি ব্লক-সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দীর্ঘ দু’দশক ধরে ভেলাইডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতটি ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর দখলে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অবশ্য সিপিএমের। বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতি-ও ঝাড়খণ্ডীদের দখলে। স্থানীয় সূত্রের বক্তব্য, রংপুর গ্রামের সিংহভাগ বাসিন্দা সিপিএম সমর্থক। রাজনীতির কারণেই ওই গ্রামে উন্নয়ন অধরা। ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-র নেত্রী চুনিবালা হাঁসদার অবশ্য দাবি, “পঞ্চায়েতের একক উদ্যোগে সেতু ও স্কুল তৈরি করা যায় না। এটা রাজ্য সরকারের কাজ। বাম আমলে বঞ্চনা হয়েছে। এখন তৃণমূলের সরকারও একই পথে হাঁটছে।”

বজ্রাঘাতে মৃত ৩
বজ্রাঘাতে মৃত্যু হল তিন জনের। আহত আরও তিন জন। সোমবার সকালে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিতে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকে ওই তিন জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের নাম গৌতম দাস (৩০), দীপালি শীট (৩০), মীর রফিক (২৮)। গৌতমবাবুর বাড়ি মৌজবৃন্দাবনপুর গ্রামে। এ দিন পানের বরজে কাজ করে মাঠে বাঁধা গরু আনতে যাওয়ার সময় বজ্রাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়। দীপালিদেবীর বাড়ি কান্ডপশরা গ্রামে। মাঠে গরু আনতে যাওয়ার সময় তাঁর মৃত্যু হয়। নাকচিরাচর গ্রামের বাসিন্দা মীর রফিক আমন বীজতলার জন্য ধান বুনতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা যান। অন্য দিকে, মহিষাদল থানার কেশবপুর জালপাই গ্রামে বজ্রাঘাতে একই পরিবারের তিন জন আহত হলেন। তার মধ্যে দেড় বছরের একটি শিশুও রয়েছে। তাঁরা সকলেই তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিখোঁজ বালক উদ্ধার
এক নিখোঁজ বালককে উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার দুপুরে সুতাহাটার শ্রীকৃষ্ণপুর থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ওই বালককে উদ্ধার করে সুতাহাটা থানার পুলিশ। বাড়িতে বকুনি খেয়ে কলকাতায় পালানোর উদ্দেশ্য নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল হলদিয়া হাইস্কুলের বছর এগারোর ছাত্র সুজন মণ্ডল নামে ওই বালক। তাঁর বাড়ি দুর্গাচকের পাতিখালিতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুর্গাচক থেকে পায়ে হেঁটে শ্রীকৃষ্ণপুরের কাছে চলে আসে সে। উদ্দেশ্যহীনভাবে বালকটি কলকাতায় যাওয়ার রাস্তার খোঁজ করায় স্থানীয় লোকেদের সন্দেহ হয়। তারা সুতাহাটা থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে পাকড়াও করে সুজনকে। পরে তার বাবা মনু মণ্ডল এসে থানা থেকে তাকে নিয়ে যায়।

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু
নিজের বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকার ক্ষোভে কাটারি দিয়ে ট্রান্সফরমারের ১১ কেভি বিদ্যুৎ লাইন কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম বিশ্বনাথ রাউত (৩৪)। দেশপ্রাণ ব্লকের পশ্চিম বামুনিয়া গ্রামে ওই ঘটনাটি ঘটে। গ্রামে সকলের বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকলেও নিজের বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকার ক্ষোভে ট্রান্সফরমারের তার কাটতে গেলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথবাবু মদের ঘোরেই এই বিপত্তি ঘটিয়েছে। পুলিশ তাঁর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি হাসপাতালের পাঠিয়েছে।

সবংয়ে জোট
এই বাজারে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হল। তা-ও আবার সবংয়ে। যেখানে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার বাড়ি। সবংয়ের বলপাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সমস্ত আসনেই জোট হয়েছে। তবে কার ক’টি আসন তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে গিয়েছে। পঞ্চায়েতের ১৫টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস দাবি করছে, তাদের ৮টি ও তৃণমূলের ৭টি। অন্য দিকে তৃণমূল দাবি করছে, তাঁদের ৮টি, কংগ্রেসের ৭টি। তবে পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ে বিরোধ নেই। সেখানে কংগ্রেসের ২টি ও তৃণমূলের ১টি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা গুরুপদ মাইতির কথায়, “সিপিএমকে সরাতে মানুষের জোট তৈরি হয়েছে।” এই জোট অবশ্য মানতে রাজি নয় কংগ্রেস। সবং ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি অমল পাণ্ডার কথায়, “জোটে আমাদের অনুমোদন নেই। তাই আমরা প্রার্থীদের প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” জোটের কাছে অবশ্য নির্বাচনের আগেই পরাজয় হয়ে গিয়েছে সিপিএমের। কারণ, তারা গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসন ও পঞ্চায়েত সমিতির ৩টির মধ্যে দু’টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী ছেলে
একই আসনে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বাবা ও ছেলে। দলের প্রতীক পাওয়ার জন্য দু’জনই মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষমেশ ছেলে দলীয় প্রতীক পাওয়ায় বাবা লাঙল চিহ্ন নিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে দাঁড়ালেন। ঘটনাটি চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছড়া-৩ পঞ্চায়েতের ডালিমাবাড়ি এলাকায়। ডালিমাবাড়ি বুথের তৃণমূল প্রার্থী অঞ্জনাভ কুশারী মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বাবা প্রভাতবাবুর বক্তব্য, “ছেলের সঙ্গে লড়াই দুঃখজনক। কিন্তু কিছু করার নেই।” প্রভাতবাবুর বড় ছেলে অমিতাভ কুশারী আবার তৃণমূলের ওই ব্লকের সভাপতি। সেই সুবাদে মেজ ভাইয়ের হাতে দলীয় প্রতীক তুলে দিয়েছেন তিনিই। বিব্রত অমিতাভবাবু বলেন, “রাজনীতি এমন একটা জায়গা, যেখানে সব কিছু হতে পারে। দলীয় সিদ্ধান্তেই মেজ ভাইকে টিকিট দিতে হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.