পাঁচ কৃতীকে দিয়ে ফের সফল বাঁকুড়া জেলা স্কুল
সেরা দশের মেধা তালিকায় পাঁচ জন ছাত্রকে দিয়ে ফের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখল ঐতিহ্যবাহী বাঁকুড়া জেলা স্কুল। প্রায় প্রতি বছরই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে সেরাদের প্রথম সারিতেই থাকে এই স্কুলের ছাত্ররা। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিকে এই স্কুল থেকেই এ বার রাজ্যের পঞ্চম, অষ্টম, নবম ও দশম হয়েছে পাঁচ জন। এই স্কুলের সাফল্যের ধারাবাহিকতা রসায়নটা কী, তা নিয়ে শিক্ষামহলে চর্চা বরাবরই হয়ে আসছে। এ বারের ফলাফল সেই চর্চা আরও বাড়িয়েছে।
এই স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র তথা বাঁকুড়া সারদামণি গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ গুপ্ত বলেন, “অতীতেও এই স্কুল রাজ্যের অন্যতম সেরা স্কুলগুলির একটা ছিল। বছর বছর এই স্কুল আরও এগিয়ে চলেছে। স্কুলের এই সাফল্যে প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে আমার মতো অনেকেই গর্বিত।” জেলার আর এক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “বাঁকুড়া জেলা স্কুল শুধু জেলা নয়, রাজ্যের কাছেও গর্বের। প্রতি বারই এই স্কুল থেকে সেরা ছাত্ররা বেরিয়ে আসছে।”
বাঁকুড়া জেলা স্কুল
এ বারের এই স্কুল থেকে ৪৬৯ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে কেন্দুয়াডিহির বাসিন্দা সায়ন্তন দত্ত। সে বলে, “স্কুলের শিক্ষকেরা আমাদের খুব সাহায্য করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েই পড়াড়োনায় আরও জোর দিয়েছিলাম।” ৪৬৫ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থানাধিকারী বাঁকুড়া শহরের প্রথম ফিডার রোডের বাসিন্দা সৌম্যজিৎ দত্তের কথায়, “আমরা প্রত্যেক বিষয়ের জন্য আলাদা করে টিউশন নিয়েছিলাম। কিন্তু ক্লাসের পড়াটাই ছিল আসল পড়া।” ৪৬৪ নম্বর পেয়ে যৌথ ভাবে রাজ্যে নবম হয়েছে বাঁকুড়ার শুভঙ্কর সরণির বাসিন্দা দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় ও সারদাপল্লির মৃণ্ময় পাল। তারা বলছে, “স্কুলের শিক্ষকেরা অনেক যত্ন নিয়ে আমাদের পড়ান। যে কোনও সমস্যায় আমাদের পাশে থাকেন তাঁরা। এটা কম বড় পাওয়া নয়!” ৪৬৩ নম্বর পেয়ে দশম হওয়া বাঁকুড়ার সিনেমা রোডের বাসিন্দা সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “স্কুল আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে। ভাল নম্বর কী ভাবে পেতে হয় তা এখানেই শিখেছি।”
সায়ন্তন দত্ত সৌম্যজিৎ দত্ত দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় মৃণ্ময় পাল সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়
সায়ন্তন, সৌম্যজিৎ, দীপাঞ্জন, মৃণ্ময়রা পড়াশোনার সিনেমা দেখতেও ভালবাসে। ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি তারা সকলেই দেখেছে। তাই তাঁর অকাল প্রয়ানে তারা যে শোকাহত, সে কথাও জানাতে ভোলেনি জেলা কথা রাজ্যের এই কৃতী পড়ুয়ারা। মৃণ্ময় বলে, “আমি ঋতুপর্ণের ‘হিরের আংটি’ থেকে ‘রেনকোট’, সব ছবিই দেখেছি। চিত্র পরিচালক হিসেবে তাঁর কাজ আমার বরাবরই ভাল লাগে।” সায়ন্তন, সৌম্যজিৎ, দীপাঞ্জনরা বলে, “এত বড় একজন শিল্পী এ ভাবে হঠাৎ ঘুমের মধ্যে চলে যাবেন, ভাবতেই পারিনি।”
সাফল্যের পাশাপাশি অবশ্য ইদানীং নানা সমস্যার জেরে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে বাঁকুড়া জেলা স্কুল। তবে, এই সব সমস্যা যেন ছাত্রদের পড়াশোনায় প্রভাব না ফেলে, তার জন্য শিক্ষকেরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুচিত্রকুমার সেন। তিনি বলেন, “স্কুলে নানা সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু সেই সব সমস্যা আমরা ক্লাসরুমে ঢুকতে দিই না। তাই এই স্কুল ফলাফলে এগিয়েই থাকে।”

ছবি: অভিজিৎ সিংহ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.