মনোনয়নের দ্বিতীয় দিনেও বাধার নালিশ
নোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার দ্বিতীয় দিনেও বিরোধী প্রার্থীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল জেলা জুড়ে। বৃহস্পতিবার লাউদোহা থেকে কেতুগ্রাম, জেলার নানা এলাকায় সিপিএম থেকে শুরু করে এসইউসি, বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আগের দিনের মতো এ দিনও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
এ দিন দুপুরে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক অফিসের সামনে তৃণমূলের লোকজন সিপিএম প্রার্থীদের উপরে চড়াও হয় ও আটকে রাখে বলে অভিযোগ। সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতি ও জেমুয়া পঞ্চায়েতের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন। সিপিএমের অভিযোগ, লাউদোহায় ব্লক অফিসে যাওয়ার সময়ে স্থানীয় হাটতলায় দলীয় পতাকা হাতে তৃণমূলের লোকজন তাদের প্রার্থী ও সমর্থকদের ঘিরে ধরেন। সিপিএমের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায়সরকারের অভিযোগ, “আমাদের প্রার্থীদের নিগ্রহ করা হয়। বাধ্য হয়ে আমরা ফিরে আসি। জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঘটনার সময়ে এলাকায় থাকা পুলিশকর্মীদের ভূমিকা ছিল নীরব দর্শকের। উপযুক্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে দুর্গাপুরে সিপিএম অফিস থেকে ব্লক অফিস পর্যন্ত তাদের প্রার্থীদের পৌঁছে দেওয়া এবং সুষ্ঠু ভাবে মনোনয়ন পেশের পরে আবার দুর্গাপুরে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে সিপিএম। যদিও এ দিন পরে সিপিএমের কয়েক জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন।
লাউদোহায় নামল র্যাফ। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল হামলার কথা অস্বীকার করেছে। দলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীর সঙ্গে দু’জন প্রস্তাবক যাওয়ার কথা। কিন্তু সিপিএমের তরফে প্রচুর লোকজন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তার প্রতিবাদ করায় সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের লোকজনের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ সুজিতবাবুর। তাঁর বক্তব্য, “সিপিএম মিথ্যা অভিযোগ করছে। যদি বাধাই দেওয়া হবে তাহলে কী করে ওদের প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করতে পারেন?” পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনিও। তাঁর দাবি, “সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের উপরে যাতে কোনও রকম হামলা না হয়, আমি তা নিশ্চিত করতে গিয়েছিলাম। পুলিশ উল্টে আমাকেই হেনস্থা করেছে।”
কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) এস সিলভা মুরুগান নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।” জেলাশাসক ওঙ্কারসিংহ মিনা জানান, লাউদোহায় মনোনয়ন তোলা নিয়ে গোলমালের খবর পেয়ে প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকেরা গয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুরো ঘটনার ভিডিওগ্রাফি করানো হয়েছে। উপযুক্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।
এ দিন আউশগ্রাম ১ ব্লক অফিসে বিজেপি-র দুই প্রার্থীকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। খণ্ডঘোষের সগরাই মোড়ে সিপিএমের জোনাল অফিসে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র তৈরি করার কথা ছিল। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজনের বাধায় ওই অফিসে সিপিএমের প্রার্থীরা ঢুকতে পারেননি। তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অলোক দাসের যদিও দাবি, “প্রার্থী না পেয়ে নানা জায়গায় নানা রকম মনগড়া গল্প ফাঁদছে সিপিএম।”
বড়শূলের বর্ধমান ২ ব্লক অফিস বৃহস্পতিবার ছিল থমথমে। আগের দিন সিপিএম এবং কংগ্রেসের প্রার্থীদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ দিন সেখানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি বলে জানান বিডিও গোবিন্দ ভট্টাচার্য। কেন মনোনয়ন জমা পড়েনি, তা অবশ্য তিনি বলতে পারেননি।
এ দিন কেতুগ্রাম ১ ব্লকে কান্দরায় এসইউসি-র প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র তুলে আনার সময়ে তৃণমূল সমর্থকেরা তা কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। সন্ধ্যায় কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ করা হয়। ফ্যাক্স মারফত বিষয়টি নির্বাচন কমিশনারকেও জানানো হয়েছে বলে এসইউসি নেতৃত্ব জানান। দলের কাটোয়া জোনাল নেতা অপূর্ব চক্রবর্তীর অভিযোগ, “মনোনয়পত্র তুলতে যাওয়ার সময়েই হুমকি দিচ্ছিল তৃণমূলের লোকজন। দুপুর ১টা নাগাদ ব্লক অফিস থেকে ফেরার সময়ে কান্দরা চৌরাস্তার কাছে আমাদের নেতা কচি মুন্সিকে আটকে মনোনয়নপত্রগুলি কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও হয়েছিল।” তৃণমূল যদিও তা মানেনি। দলের নেতা জাহির শেখের বক্তব্য, “এমন কিছু ঘটেইনি। আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে।” কেতুগ্রাম থানা সূত্রে জানা যায়, মনোনয়ন তুলে ফেরার পথে বাধার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.