পাল্টা হামলায় ধৃত সিপিএমের দুই
নোনয়নপত্র তুলতে যাওয়ার সময়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তৃণমূলের লোকজনের উপরে হামলার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল দুই সিপিএম সমর্থককে। বৃহস্পতিবার মেমারির পাহাড়হাটির এই ঘটনায় সিপিএমের অবশ্য দাবি, তৃণমূলের লোকজন হামলা চালানোয় তাদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিরোধ করেছেন মাত্র।
বুধবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র তোলার প্রথম দিনে মেমারি ২ ব্লকের পাহাড়হাটিতে সিপিএম প্রার্থীদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এমন ঘটনা ঘটেছিল জেলার আরও নানা জায়গায়। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল সে দিন দাবি করেছিলেন, “আমরা হাল ছাড়ব না। নির্বাচনী সংগ্রাম চালিয়ে যাব।” তার পরেই এ দিন মনোনয়ন তুলতে যাওয়ার পথে তৃণমূলের উপরে পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে।
গোলমাল বাধল মেমারির পাহাড়হাটিতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সিপিএম প্রার্থীরা পাহাড়হাটিতে ব্লক অফিসে মনোনয়ন দিতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তির-ধনুক, লাঠি হাতে লোকজন। ব্লক অফিস থেকে কিছুটা দূরে সমর্থকদের দাঁড় করিয়ে রেখে সিপিএম নেতারা এগিয়ে যান। অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন তাঁদের উপরে চড়াও হন। দলের মেমারি ২ পশ্চিম লোকাল কমিটির সম্পাদক অমল ঘোষকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। এর পরেই সিপিএমের লোকজন পাল্টা তাড়া করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস সরকার এবং এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ। ঘটনাস্থল থেকেই দু’জন সিপিএম সমর্থককে তিনটি ধনুক ও ১৫টি তির-সহ গ্রেফতার করা হয়। গোলমাল ঠেকাতে তাদের প্রার্থীদের পাহারা দিয়ে পুলিশ ব্লক অফিসে ঢুকিয়ে দেয়। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেছেন, “রাত পর্যন্ত ওখানে সিপিএমের লোকেরা মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন।”
পুলিশি ব্যবস্থায় ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিলেন সিপিএম প্রার্থীরা।
সিপিএমের যে নেতাকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে এ দিন গোলমালের সূত্রপাত, সেই অমল ঘোষের দাবি, “বুধবার আমাদের লোকেদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়েছে তৃণমূল। ব্লক অফিসের গেটের দু’পাশে প্রতিরোধ গড়ে ওরা আমাদের বাধা দিয়েছে। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন আমরা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়ন দিতে এসেছিলাম। সেই সময়ে আমাকে রাস্তায় ফেলে মারধর করতে দেখে সাধারণ মানুষই প্রতিরোধে নেমে পড়েন।” জেলা সিপিএম নেতা আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডলেরও বক্তব্য, “আমাদের লোকজনকেই আজ প্রথমে মারধর করা হল। সাধারণ মানুষজনই তার প্রতিরোধ করলেন। তার পরেই দেখলাম, পুলিশ পৌঁছে গেল। আমরা বারবার ডাকলেও তো পুলিশ আসে না। মানুষ প্রতিরোধ করাতেই আজ আমাদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।” এ দিন তিনি আরও বলেন, “কাল আমাদের প্রার্থীরা তাড়া খেয়ে ফিরে আসার পরে স্থানীয় নেতারা ঠিক করেন, পরিস্থিতি যাই হোক, আমরা মনোনয়ন জমা দেবই। এ দিন আমরা তা দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত আমাদেরই জয় হয়েছে।”
কাটোয়ার কুরচি গ্রামে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ তুলে সভা করল তৃণমূল।
তৃণমূলের মেমারি ২ ব্লক সাধারণ সম্পাদক অমর সাহার অবশ্য দাবি, “সিপিএমের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। তাই ওরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মনোনয়ন দিতে আসছে।”
জেলা পুলিশের এক কর্তা এ দিন বলেন, “আমাদের উপরে নির্দেশ রয়েছে, মনোনয়ন যেখানে নেওয়া হচ্ছে, তার একশো মিটারের মধ্যে ভিড় জমাতে দেওয়া যাবে না। তার থেকে বেশি দূরত্বে যদি কেউ জমায়েত করে, তাহলে তো কিছু করার নেই। ব্লক অফিসের চারপাশে রাজনৈতিক দলের লোকজন ভিড় জামাচ্ছেন। একই রাস্তা দিয়ে অন্য দলের লোকেরা ব্লক অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষে গোলমাল পাকছে।”
—নিজস্ব চিত্র।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.