চাই বায়ুসেনার সম্মতি
বাগডোগরায় রোজ নৈশ উড়ান চেয়ে কাল বৈঠক
মাত্র তিন দিন আগের ঘটনা।
সে দিন গুয়াহাটির আকাশের মুখ ভার। দিল্লি থেকে উড়ে গুয়াহাটির মাথায় পৌঁছেও সেখানে নামতে না-পেরে বাগডোগরায় গিয়ে অবতরণ করল গো-এয়ারের বিমান। এ দিকে দিল্লি-গুয়াহাটি-বাগডোগরা-দিল্লি রুটের উড়ানটিতে গুয়াহাটির যাত্রী ছিলেন। গুয়াহাটিতেও তখন অপেক্ষায় বাগডোগরাগামী যাত্রীরা। অগত্যা আকাশ পরিষ্কার হলে বিমানকে গুয়াহাটি যেতেই হল। সেখানে যাত্রী নামিয়ে আর নতুন যাত্রী তুলে আবার ফিরতে হল বাগডোগরায়।
ততক্ষণে সন্ধে নেমে এসেছে। শেষমেশ সন্ধে ৬টা ৫৪ মিনিটে বাগডোগরা থেকে দিল্লি রওনা দিল বিমানটি।
অর্থাৎ, চাইলে সূর্যাস্তের পরেও বাগডোগরায় বিমান ওঠা-নামা করতে পারে। আচমকা এক-এক দিন এমন কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে বায়ুসেনা সেই অনুমতি দিচ্ছেও। কিন্তু নিয়মিত ভাবে তা দিতে বায়ুসেনার ঘোরতর আপত্তি। সমস্যার সুরাহায় এ বার পশ্চিমবঙ্গ সরকার উদ্যোগী হয়েছে। প্রতি দিন সন্ধে ছ’টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বাগডোগরায় যাতে যাত্রী-বিমান ওঠানামা করতে পারে, সে ব্যাপারে বায়ুসেনা-কর্তৃপক্ষের সম্মতি আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে মহাকরণ।
এবং সেই লক্ষ্যে মূলত রাজ্যেরই উদ্যোগে ভারতের বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) কাল, মঙ্গলবার বাগডোগরায় বৈঠক ডেকেছে। তাতে রাজ্যের তরফে থাকবেন পরিবহণ-সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, থাকবেন বায়ুসেনা ও বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা। “পর্যটন আর সাধারণ যোগাযোগের স্বার্থে অবিলম্বে বাগডোগরায় রাতেও নিয়মিত ভিত্তিতে বিমান ওঠা-নামা প্রয়োজন। বিষয়টিকে রাজ্যের তরফে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।” রবিবার বলেন আলাপনবাবু।
কিন্তু এ জন্য ডিজিসিএ তো সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রেখেছে! তা হলে সমস্যা কোথায়? বিমানবন্দর-সূত্রের ব্যাখ্যা: বাগডোগরা বিমানবন্দর পুরোপুরি বায়ুসেনার নিয়ন্ত্রণাধীন। তাদের অনুমতি ব্যতীত কিছু করা সম্ভব নয়। আর ওখানে অন্ধকার নামার পরে নিয়মিত যাত্রী-বিমান ওঠানামা করাতে হলে বায়ুসেনার তরফে অতিরিক্ত লোকবল লাগবে। সেটাই আপত্তির প্রধান উৎস বলে সূত্রটির দাবি। এই সমস্যা মিটবে কী করে?
ডিজিসিএ-প্রধান অরুণ মিশ্র এ দিন দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, “বাগডোগরা বিমানবন্দরে কর্মীর সংখ্যা বাড়াতে বিমানবাহিনী-কর্তৃপক্ষকে ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত সুরাহা হবে।” ডিজিসিএ-প্রধানের মতে, বাগডোগরা বিমানবন্দর হল উত্তরবঙ্গের প্রাণভোমরা। তাই ওখানে অবিলম্বে রাতের যাত্রী-উড়ান চালু হওয়া জরুরি।
রাজ্য সরকারের একাংশের অবশ্য ধারণা, এ ক্ষেত্রে লোকবলে ঘাটতির পাশাপাশি অন্য প্রতিবন্ধকতাও আছে। এই মহলের মতে, রাতে নিয়মিত বিমান ওঠা-নামার বন্দোবস্ত করতে হলে বাগডোগরা বিমানবন্দর লাগোয়া কিছুটা জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন। সম্প্রতি বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাগডোগরায় নাইট-ল্যান্ডিং (রাতে বিমান নামা-ওঠা) আটকে রয়েছে এগারোটি পরিবারের জন্য।” পরিবারগুলিকে সরকার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে ঘটনা হল, বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের একাংশ মনে করছেন, নৈশ উড়ানের জন্য বাগডোগরায় জমি অধিগ্রহণের আদৌ প্রয়োজন নেই। তাঁদের এক সূত্রের বক্তব্য: এই মূহূর্তে ওখানে এক ছটাক বাড়তি জমি ছাড়াই রাতে দিব্যি যাত্রী-বিমান ওঠা-নামা করতে পারবে। কারণ এ জন্য যা যা দরকার, সেই রানওয়ের আলো, ট্যাক্সি-ওয়ের আলো বা পার্কিং-বে’র আলো সমস্তই মজুত রয়েছে বাগডোগরায়। এবং দরকার পড়লে এখনই যে সেখানে রাতে বিমান ওঠা-নামা করানো যায়, গো-এয়ারের ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ বলে দাবি করছেন সূত্রটি। তাঁর কথায়, “আগেও বহু বার জরুরি পরিস্থিতিতে ওখানে রাতে বিমান নেমেছে-উড়েছে।” কবে এটা নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠবে, আপাতত তারই প্রতীক্ষা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.