সারদার সংসার
মেমরি বর্ধমান
পুলিশি জেরায় অসহায় চোখে দেবযানীর দিকেই তাকাচ্ছেন তাঁর সিএমডি-স্যার। যে কোনও প্রশ্নের ঝটপট জবাব দেবযানীর ঠোঁটের ডগায়। সারদার অমুক অনুষ্ঠান কবে হয়েছিল? বিশেষ অতিথি কারা? তমুক শাখার ফোন নম্বর কিংবা ম্যানেজারের নামটা কী যেন...? এ সব-কিছুর জবাব দিতে কয়েক সেকেন্ড সময় নিচ্ছেন সারদা-সাম্রাজ্যের মহাকর্ত্রী। তদন্তকারী অফিসারদের প্রথম প্রথম সন্দেহ হত, ঠিক বলছে তো! নথি মিলিয়ে দেখে মুগ্ধ বিস্ময়ে তাঁদের মুখেও কথা সরছে না। তাঁদের মতে, এই স্মরণশক্তির জন্যই দেবযানী সুদীপ্ত সেনের এতটা আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন। দেবযানীর এই কম্পিউটার-সুলভ স্মৃতির প্রশংসা করছেন একাধিক পুলিশকর্তাও। শুনে লক-আপের হাই-প্রোফাইল কয়েদির লাজুক হাসি। “ছোট থেকেই আমার বই পড়ার অভ্যেস তো! বই পড়ে পড়েই মেমরিটা এমন বেড়ে গিয়েছে!”

জলসা
চড়া রোদে শামিয়ানার নীচে চুটিয়ে গান-বাজনা চলছে। চটুল সুরে গান হচ্ছে, ‘বিশ্ব চিটার সুদীপ্ত সেন শেল বাঁধাল বুকে।’ কিংবা ‘ছায়া সঙ্গী সাথে যে জন থাকত মহাসুখে/সে জন এখন জেলখানাতে পুলিশি জেরার মুখে।’ পদ-কর্তা সারদা-গোষ্ঠীরই এক সর্বস্বান্ত এজেন্ট। স্থান রাজারহাটের ফিনান্সিয়াল সেন্টার। যেখানে সারদা-কাণ্ডের তদন্ত কমিশনের অফিস বসবে। এখনও অবশ্য কমিশনের কাজ শুরু হয়নি। কিন্তু এজেন্ট-আমানতকারীরা সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত হত্যে দিয়ে পড়ে থাকছেন। আর ‘সুদীপ্ত-স্মরণে’ জমে উঠছে অভিনব গানবাজনা। ওই এজেন্টের কথায়, “ওই যা গানের মধ্যে একটু শান্তি পাচ্ছি!”

সস্তায় পুষ্টি
‘দুপুরে ভাত-ডাল-আলুভাতে-তরকারি। রাতে চারটে রুটি-ডাল-পাঁচমিশেলি তরকারি। খরচ এক-এক বেলায় ন’টাকা ৫০ পয়সা। কয়েকশো কোটি টাকার সাম্রাজ্যের মালিকের দেখভাল এতেই সারছে সরকার। পুলিশের দাবি, একজন বন্দির এক বেলার খাবারের জন্য বরাদ্দ, সাড়ে ন’টাকা। সুদীপ্ত সেনের ক্ষেত্রেও নিয়মের নড়চড় নেই। এসি ঘরের আরামে অভ্যস্ত সুদীপ্তর এখন রাত কাটছে লক-আপের ভূমিশয্যায়, টেবিল ফ্যানের হাওয়ার ছিটেয়। ফ্যানটা আবার লক-আপের গারদের বাইরে রাখা। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই পাখা যত গর্জায় তত বর্ষায় না। যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য ফুল-স্পিডেও ঘোরে না। সারা ক্ষণ ঘড় ঘড় করে শব্দ হয়। জেরার সময়ে থানার আইসি-র ঘরে গেলে একটু শান্তি পান সুদীপ্ত। কারণ সেখানে যে এসি!

প্রবেশ নিষেধ
নিউটাউনের অ্যাকশন এরিয়া টু-র ঝকঝকে বাড়িটা দেখে থানা বলে বিশ্বাস হয় না। উঁচু দরের বন্দিদের সৌজন্যে বাড়িটা এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। উল্টো দিকে ক্যানসার হাসপাতালে যাতায়াতের ফাঁকেও অনেকেই কৌতূহল ভরে বাড়িটার দিকে দেখছেন। রীতিমতো জল্পনা, ‘সুদীপ্ত-দেবযানী তা হলে এখানেই আছে...।’ থানা থেকে কেউ বেরোলেই ভিড়ের প্রশ্ন, ‘দাদা, দেবযানীকে দেখতে পেলেন?’ থানার সামনে টিভি চ্যানেলের ওবি-ভ্যান। প্রতীক্ষারত সাংবাদিকদের জন্য শামিয়ানা। থানা যেন দুর্গ। রীতিমতো পরিচয় দিয়েই ঢোকার অনুমতি মিলছে।

অন্য দুই
আমানতকারীদের প্রতারণা করার অভিযোগে এক লগ্নি সংস্থার দুই কর্ণধারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাম ভবতোষ দাস ও অতীন সাহা। কালীঘাট এলাকার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আমানতকারীদের অভিযোগ, ফাঁকা জমির ভুয়ো নথিপত্র দেখিয়ে প্রচুর টাকা নেন সংস্থার ওই দুই কর্তা। ৩০ এপ্রিল কয়েক জন আমানতকারী ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ছ’লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকলেও অঙ্কটা আসলে তিন কোটির কাছাকাছি। আদালত দু’জনকে ৪ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.