বধূহত্যার অভিযোগ উঠল কাটোয়ার গিধগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান করুণাময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। বুধবার কাটোয়া থানায় তাঁর শ্বশুর অরূপ মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এই ঘটনায় করুণাময়বাবু ছাড়াও তাঁর দাদা হরিপদ ভট্টাচার্য, বন্ধু পলাশ মণ্ডল ও সুভাষ কর্মকারের বিরুদ্ধেও খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা পলাতক। খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেরো বছর আগে ভাতারের দাউড়ডাঙা গ্রামের বাসিন্দা অরূপবাবুর মেয়ে মৌসুমীর (৩৫) সঙ্গে বিয়ে হয় কাটোয়ার কৈথন গ্রামের করুণাময়বাবুর। ওই দম্পতির একটি মেয়ে রয়েছে। দু’বছর বয়স থেকে সে মামারবাড়িতে বড় হয়েছে। এখন ভাতারের মাহাতা উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার কর্মী অরূপবাবু কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মৌসুমীর উপরে অত্যাচার করত। মাঝে-মধ্যেই বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতেও বলা হত। সে কারণে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতেও বাধ্য হয়েছেন বলে অরূপবাবুর দাবি। তাঁর অভিযোগ, “এ সবের কারণে বছর চারেক আগে মৌসুমী এক বার কীটনাশক খায়। তার পরে বাধ্য হয়ে ও আমার কাছে চলে আসে। পরে সুস্থ হয়ে আবার কৈথনে ফিরে যায়। কিন্তু তার পরেও অত্যাচার কমেনি।” তিনি জানান, দু’এক মাস ছাড়া ছাড়াই মৌসুমীদেবী বাপের বাড়ি চলে আসতেন।
করুণাময়বাবু কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে গিধগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হন। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ বাড়ে। কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগে অরূপবাবু জানান, মাস দুয়েক আগে করুণাময়বাবুর বন্ধুরা দাউড়ডাঙা গ্রামে গিয়ে মৌসুমীকে শ্বশুরবাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। অরূপবাবুর অভিযোগ, “মেয়েকে তৃণমূলের প্রার্থী করা হবে জানিয়ে ওরা কৈথনে নিয়ে গিয়েছিল। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় টাকা চেয়ে আমার কাছে ফোন আসে। মঙ্গলবার খবর পাই, মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। তাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বুধবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে পুরো ঘটনা জানতে পারি।” তিনি অভিযোগ করেন, করুণাময়ের বন্ধু পলাশ মণ্ডল ভুয়ো পরিচয় দিয়ে মৌসুমীর দেহের ময়না-তদন্ত করিয়ে নিয়েছে। পুলিশের কাছে পলাশ নিজেকে মৌসুমীর জামাইবাবু বলে পরিচয় দেয়, অভিযোগ তাঁর। অরূপবাবু বলেন, “মৌসুমীকে শেষ দেখা দেখতে পাইনি।” জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, “বৃহস্পতিবার পুলিশের একটি দল কৈথন গ্রামে গিয়েছিল। অভিযুক্তেরা পলাতক। তদন্ত চলছে।” |